যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে আমরা জিএসপি সুবিধা পাওয়ার আশা করি না: বাণিজ্যমন্ত্রী
তারিথ
: ২৮-০২-২০১৮
অনলাইন ডেস্ক :
যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে বাংলাদেশ অগ্রাধিকারমূলক বাজার সুবিধা (জিএসপি) আর আশা করে না জানিয়ে বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ বলছেন, দেশটির কাছে সেই সুবিধা আর চাওয়া হবে না। ঢাকায় নিযুক্ত জাপানের রাষ্ট্রদূত হিরোইয়াসু ইজুমির সঙ্গে গতকাল বুধবার সচিবালয়ে বৈঠকের পর মন্ত্রী সাংবাদিকদের প্রশ্নে এ কথা বলেন। ২০১২ সালে তাজরীন ফ্যাশনসে অগ্নিকা- ও পরের বছর রানা প্লাজা ধসে সহ¯্রাধিক শ্রমিকের মৃত্যুর প্রেক্ষাপটে যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাবশালী সংগঠন ‘আমেরিকান অর্গানাইজেশন অব লেবার-কংগ্রেস ফর ইন্টারন্যাশনাল অর্গানাইজেশন (এএফএল-সিআইও) এর আবেদনে ২০১৩ সালের ২৭ জুন বাংলাদেশের জিএসপি সুবিধা স্থগিত করা হয়। এর আগে পর্যন্ত ‘জেনারেলাইজড সিস্টেম অব প্রেফারেন্সেসের (জিএসপি)’ আওতায় বাংলাদেশ পাঁচ হাজার ধরনের পণ্য যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে শুল্কমুক্ত সুবিধায় রপ্তানি করতে পারত। এই সুবিধা ফিরে পেতে পোশাক কারখানার কাজের পরিবেশ উন্নয়নসহ সংশ্লিষ্ট কয়েকটি খাতের পরিবেশ উন্নয়নের শর্ত জুড়ে দেওয়া হয়েছিল। এরপর তৈরি পোশাক খাতসহ সংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রে উন্নয়ন করে সেই চিত্র জানানোর পরেও জিএসপির ওপর স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার করা হয়নি। বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল বলেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে আমরা জিএসপি সুবিধা পাওয়ার আশা করি না। কারণ আমরা যত কিছুই অগ্রগতি লাভ করি না কেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশকে এই সুবিধা দেবে না। আর আমাদের এই সুবিধার প্রয়োজনও নাই। কারণ আমরা অচিরেই স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে রূপান্তর হতে চলছি। উন্নয়নশীল দেশে যখন রূপান্তরিত হব তখন তো জিএসপির কোনো প্রশ্নই আসে না। তখন ইউরোপীয় ইউনিয়নের কাছে আমরা জিএসপি প্লাস চাইব। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কাছে আমরা জিএসপি চাইব না। ইউরোপীয় ইউনিয়ন আর যুক্তরাষ্ট্রের জিএসপি এক নয় জানিয়ে তোফায়েল বলেন, আমরা তামাক, সিরামিক, প্লাস্টিকসহ তিন-চারটি পণ্যে যুক্তরাষ্ট্রে জিএসপি পেতাম, তৈরি পোশাকে জিএসপি দিত না। ২৫ মিলিয়ন ডলারের ওপরে আমরা জিএসপি সুবিধা পেতাম অথচ আমরা রপ্তানি করি ছয় বিলিয়ন ডলারের মত। আমরা প্রতি বছর প্রায় ৯০০ মিলিয়ন ডলার যুক্তরাষ্ট্রকে কাস্টমস ডিউটি দেই। বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে আমরা জিএসপি পাব তা আমাদের চিন্তার মধ্যেই নাই, প্রত্যাশা নাই, প্রয়োজন নাই এবং আমরা কোনো দিন চাইবও না। কারণ যত শর্ত পূরণ করি না কেন এরপরেও বলবে আরও দরকার, আরও দরকার। রোজ কেয়ামত পর্যন্ত আমরা শর্ত পূরণ করা শেষ করতে পারব না। জাপান সফরের জন্য দেশটির সরকারের আমন্ত্রণ পেয়েছেন জানিয়ে তোফায়েল বলেন, স্বাধীনতার পর জাপানের সঙ্গে আমাদের গভীর সম্পর্ক। স্বাধীনতার পর জাপানের কাছ থেকে সব থেকে বেশি আর্থিক সহায়তা পেয়েছি। দুই দেশের প্রধানমন্ত্রী বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক নিয়ে একাধিকার মিলিত হয়ে দ্বিপাক্ষিক আলোচনা করেছেন। অনেক চুক্তি আমরা করেছি। মন্ত্রী বলেন, আমাদের মূল উদ্দেশ্য হল আমাদের যেকোনো একটি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলে জাপান বিনিয়োগ করবে। জাপান আমাদেরকে দুটি পণ্য ছাড়া সব পণ্যে শুল্কমুক্ত সুবিধা দেওয়ায় রপ্তানি দিন দিন বাড়ছে। আশা করি একসময় জাপানে দুই বিলিয়ন ডলারের মত রপ্তানি হবে। মন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক শেষে জাপানের রাষ্ট্রদূত বাংলায় সাংবাদিকদের বলেন, আমি আশা করি জাপান বাংলাদেশের সম্পর্ক আরও ভালো হবে।