মোঃ জিয়াউর রহমান জামী,নড়াইল প্রতিনিধি : নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলার সাবেক নির্বাহী অফিসার মনিরা পারভীনকে হত্যার হুমকীর জিডির সত্যতা পেয়েছে পুলিশ। আগমী আগামী ৯ মে সকাল ১০টায় উপজেলা চেয়ারম্যানকে সচিবালয়ে স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিবের কার্যালয়ে হাজির হয়ে জবাব দাখিল করতে বলা হয়েছে। লোহাগড়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ ফয়জুল আমীর লিটু, ইউএনও মনিরা পারভীনকে হত্যার হুমকি দিয়েছেন মর্মে অভিযোগ করে মনিরা পারভীন গত ২৮ ফেব্রয়ারী লোহাগড়া থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। জিডি করার পর থেকে তিনি সার্বক্ষণিক পুলিশি পাহারায় অফিস ও চলাফেরা করছিলেন। জিডিতে ইউএনও উল্লেখ করেন, লোহাগড়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান সৈয়দ ফয়জুল আমির লিটু গত বছর ২৯ জুন কিছু প্রকল্প দেখিয়ে টাকার বরাদ্দ পেতে তাঁকে কিছু কাগজপত্রে সই করতে বলেন। কিন্তু প্রকল্পগুলো ভুয়া হওয়ায় তিনি সই করেননি। তাতে ৩৯ লাখ টাকা ফেরত যায়। এ কারণে তাঁর সঙ্গে দ্বন্দ ও শত্রুতার সৃষ্টি হয়। চেয়ারম্যান প্রকাশ্যে তাঁকে হুমকি দেন। বিভিন্ন সময় মুঠোফোনেও তাঁকে হত্যার হুমকি দিয়েছেন বলেও জিডিতে উল্লেখ করেছেন। ইউএনও বলেন, পরে তিনি জানতে পারেন, তাঁকে হত্যার পরিকল্পনা করা হচ্ছে। এ জন্য তিনি জিডি করেছেন। এ জিডির ব্যাপারে লোহাগড়া থানা অফিসার ইনচার্জ শফিকুল ইসলাম জানান, জিডিতে উল্লেখিত ইউএনওর অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে, এই মর্মে গত ২৫ মার্চ আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করা হয়েছে। এখন আদালত এ ব্যাপারে আদেশ দিলে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। অপরদিকে নড়াইলের জেলা প্রশাসক এ জিডির বিষয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে গত ১ মার্চ প্রতিবেদন পাঠিয়েছিলেন। তার পরিপ্রেক্ষিতে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিবকে তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে বলা হয়। এর প্রেক্ষিতে স্থানীয় সরকার বিভাগ উপজেলা চেয়ারম্যানকে এ বিষয়ে কারণ দর্শানোর জন্য নোটিশ দেয়। এদিকে ইউএনও’র জিডি করার এক মাস পর গত ২৮ মার্চ এ ব্যাপারে উপজেলা চেয়ারম্যান সংবাদ সম্মেলন করেন। উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে এ সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, জিডিতে ইউএনও যে অভিযোগ করেছেন, তা মিথ্যা, বানোয়াট, ভিত্তিহীন ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।
এদিকে ইউএনও মনিরা পারভীন বলেন এসব ঝামেলায় তিনি নিরাপত্তা ও অস্বস্তিতে ভুগছিলেন তাই নিজেই অন্যত্র বদলি হবার চেষ্টা করেন, পরিশেষে গত সোমবার (২৩এপ্রিল) অগনিত মানুষের ভালবাসার অ¯্রু ও দোওয়া নিয়ে তিনি যশোর জেলার বাঘারপাড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার হিসেবে যোগদান করেছেন। এর আগের দিন রোববার সকালে নড়াইল জেলা প্রশাসকের পক্ষ থেকে নড়াইল সার্কিট হাউজের হল রুমে বিদায়ী সংবর্ধনা ও বিকেলে নিজ কার্যালয়ে লোহাগড়া অফিসার্স ক্লাব ও ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ও উপজেলা কর্মকর্তা কর্মচারীরা তাঁকে বিদায় সংবর্ধনা দেন। একই সভায় লোহাগড়ায় আগত নতুন ইউএনও মুকুল কুমার মৈত্রকে বরণ করে নেওয়া হয়। রোববার সকালে মুকুল কুমার মৈত্র লোহাগড়ায় ইউএনও হিসেবে যোগদান করেন।(