বঙ্গবন্ধু-১ স্যাটেলাইটের শুভ উৎক্ষেপণ ঘোষণা করে দেশবাসীর কাছে দোয়া চাইলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বঙ্গবন্ধু-১ স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণের দ্বিতীয় ধাপে শনিবার রাত ২টা ৩৫ মিনিটে জাতির উদ্দেশে ভাষণে প্রধানমন্ত্রী বলেন আজ থেকে বাংলাদেশ স্যাটেলাইট ক্লাবেরর গর্বিত সদস্য। প্রধানমন্ত্রী এ সময় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও মুক্তিযুদ্ধে বীর শহিদদের স্মরণ করেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, আমি স্মরণ করছি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে। যিনি ২৪ বছরের রাজনৈতিক সংগ্রাম ও জেল জুলুম উপেক্ষা করে আমাদের উপহার দিয়েছেন স্বাধীন বাংলাদেশ। আমি স্মরণ করছি মহান মুক্তিযুদ্ধে সকল শহীদ ও নির্যাতিত মা বোনদের।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্ন ছিল বাংলাদেশে বিশ্বের বুকে একটা মর্যাদা শীল দেশ হেসেবে প্রতিষ্ঠিত হোক। তিনি অনুধাবন করেছিলেন বহির্বিশ্বের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপন না করতে পারলে অগ্রগতি অর্জন করা সম্ভব হবে না। ঠিক এ কারণেই তিনি স্বাধীনতার তিন বছরের মাথায় রাঙ্গামাটির বেতবুনিয়ায় ভূ-উপগ্রহ কেন্দ্র স্থাপন করেন। যার সাহায্যে তথ্য আদা প্রদানের মাধ্যমে বহির্বিশ্বের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপন সম্ভব হয়।
তিনি আরও বলেন, আজ আমরা জাতির পিতার স্বপ্ন বাস্তবায়নে আরও এক ধাপ এগিয়ে যাচ্ছি বঙ্গবন্ধু-এক স্যাটেলাইটের উৎক্ষেপণের মধ্য দিয়ে। আজ থেকে আমারাও স্যাটেলাইট ক্লাবের গর্বিত সদস্য হলাম। প্রবেশ করলাম এক নতুন যুগে। এই স্যাটেলাটের মধ্যে দিয়ে পুরো দক্ষিণ এশিয়া ইন্দোনেশিয়া উজবেকিস্তানের কিছু অংশ আওতায় আসবে। ডাক ও টেলিযোগাযোগ থেকে শুরু করে বিটিআরসি বঙ্গবন্ধু-এক স্যাটেলাইট নির্মাণ ও উৎক্ষেপণ প্রকল্প ও স্যাটেলাইট কোম্পানি কর্মিদের আমি আন্তরিক ধন্যবাদ জানায়। আমি নির্মাতা ও উৎক্ষেপণ প্রতিষ্ঠানের কর্মীদের ধন্যবাদ জানাই। ধন্যবাদ জানাই ফ্রান্স এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে। পাশাপাশি ধন্যবাদ জানাই রাশিয়াকে তাদের কক্ষপথ ভাড়া দেয়ার জন্যে। প্রিয় দেশবাসী আপনারা সকলে দোয়া করবেন। সবাইকে আবারো ধন্যবাদ জানিয়ে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইটের শুভ উৎক্ষেপণ ঘোষণা করছি।
উল্লেখ- বাংলাদেশ সময় শনিবার যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডার মহাকাশ কেন্দ্র স্পেস-এক্স থেকে বঙ্গবন্ধু-১ স্যাটেলাইট বহনকারী রকেটটি সফলভাবে উৎক্ষেপণ করা হয়। এর মধ্য দিয়ে স্যাটেলাইটের যুগে প্রবেশ করলো বঙ্গবন্ধুর বাংলাদেশ। এর আগে, প্রতিকূল আবহাওয়া এবং কারিগরি ত্রুটির কারণে শুক্রবার রাতে দেশের প্রথম এই স্যাটেলাইটটি উৎক্ষেপণ করা সম্ভব হয়নি। পরে রিজার্ভ ডে হিসেবে শনিবার পরবর্তী দিন নির্ধারণ করা হয়।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, উৎক্ষপণ হওয়া স্যাটেলাইটটির ধাপ এখন দুটি। প্রথম ধাপ লঞ্চ অ্যান্ড আরলি অরবিট ফেজ-এল.ই.ও.পি এবং দ্বিতীয় ধাপ স্যাটেলাইট ইন অরবিট। প্রথম ধাপে ১০ দিন ও পরের ধাপে ২০ দিন সময়ের প্রয়োজন। উৎক্ষপণ স্থান থেকে ৩৬ হাজার কিলোমিটার দূরে যাবে স্যাটেলাইটটি। ৩৫ হাজার ৭শ কিলোমিটার যাওয়ার পর রকেটের স্টেজ-২ খুলে যাবে।