ঈদ ঘিরে ঘুষ লেনদেন বন্ধে সরকারি সেবাখাতে দুদকের কঠোর নজরদারি
তারিথ
: ২৩-০৫-২০১৮
অনলাইন ডেস্ক :
ঈদ ঘিরে সরকারি কিছু অফিস-আদালতে ঘুষের প্রবণতা বেড়ে যায়। তা প্রতিরোধে সরকারি সেবাখাতে কর্মরত-কর্মচারীদেও কঠোর নজরদারি আওতায় এনেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। কারণ দুদকের হটলাইনে যতো অভিযোগ আসছে, তার মধ্যে সরকারি সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানের কর্মরত কর্মকর্তা-কার্মচারীদের বিরুদ্ধেই দুর্নীতির অভিযোগ বেশি। ওসব অভিযোগ থেকে অফিসওয়ারি সন্দেহভাজন দুর্নীতিবাজদের তালিকা করা হয়েছে। আর ওই তালিকা ধরে দুদক আরো টিম গঠন করে ফাঁদ পেতে দুর্নীতিবাজদের আটক করার উদ্যোগ নিয়েছে। দুদক সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়।
সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, ঈদের আগে ঘুষ লেনদেন বন্ধে সরকারি অফিস-আদালতে দুদকের নজরদারি জোরদার করা হয়েছে। গোপনে খবর সংগ্রহ করে প্রয়োজনে ফাঁদ পেতে ঘুষখোর কর্মকর্তাদের গ্রেফতার করা হবে। দুদকের এনফোর্সমেন্ট সেলের কর্মকর্তারা এ নিয়ে কার্যক্রম চালাচ্ছে। সরকারি অফিসে অনিয়ম, দুর্নীতি বন্ধ ও সেবার মান উন্নয়নে প্রতিদিন কমিশনের একাধিক এনফোর্সমেন্ট টিমের অভিযান অব্যাহত রয়েছে। ইতিমধ্যে ঢাকায় বিএসটিআই, অডিট অফিস ও আকস্মিকভাবে বিভিন্ন স্থানে অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে। সূত্র জানায়, বিগত ২০১৬ সালের জানুয়ারি থেকে চলতি বছরের এপ্রিল পর্যন্ত প্রায় আড়াই বছরে দুদকের দায়ের করা শতাধিক মামলায় মোট ৭৫৯ জন সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীকে আসামি করা হয়েছে। যুগ্মসচিব থেকে শুরু করে নিচের দিকের বিভিন্ন পদে কর্মরত কর্মকর্তা-কর্মচারী ওই তালিকায় রয়েছে। ওসব মামলা পর্যালোচনায় দেখা গেছে সেবাখাতে কর্মরত সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যে দুর্নীতির প্রবণতা বেশি। সেজন্য সেবা খাতগুলোতে নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানের মধ্যে রয়েছে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক), ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন, দক্ষিণ সিটি করপোরেশন, এলজিইডি, সাব-রেজিস্ট্রি অফিস, বিএসটিআই, বিআরটিএসহ বিভিন্ন অধিদপ্তর, সোনালী ব্যাংক, জনতা ব্যাংকসহ বিভিন্ন রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংক। সূত্র আরো জানায়, দুদকের ২০১৮ সালের কৌশলগত কর্মপরিকল্পনা অনুযায়ী বিভিন্ন সরকারি বিভাগ, সংস্থা ও অন্যান্য প্রতিষ্ঠানে কর্মরত দুর্নীতিবাজদের চিহ্নিত করে শীর্ষ সন্দেহভাজন দুর্নীতিবাজদের তালিকা প্রস্তুত করা হবে। ইতিমধ্যে দুর্নীতি পর্যবেক্ষণ শাখা ২৫টি প্রাতিষ্ঠানিক টিম গঠন করেছে, যারা বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠান, বিভাগ ও সংস্থার সন্দেহভাজন অসাধু ব্যক্তিদের দুর্নীতি প্রমাণে তদন্ত করেছে। বর্তমানে ২৫টি বৃহৎ সরকারি প্রতিষ্ঠানকে দুর্নীতিমুক্ত করার জন্য ২৫টি টিম কাজ করে যাচ্ছে। এদিকে এ প্রসঙ্গে দুদকের জনসংযোগ কর্মকর্তা (উপ-পরিচালক) প্রণব কুমার ভট্টাচার্য্য জানান, দুদকে লিখিত অভিযোগ ও হটলাইনে প্রাপ্ত অভিযোগ কমিশন পর্যালোচনা করে দেখেছে। ওসব অভিযোগের ভিত্তিতে তালিকা করা হয়েছে। তালিকা ধরে দুদক দুর্নীতি বিরোধী অভিযান চালাচ্ছে। ইতিমধ্যে দুদক সেবা প্রতিষ্ঠানে ঝটিকা অভিযান চালিয়েছে। অন্যদিকে দুদকের মহাপরিচালক (প্রশাসন) মুনির চৌধুরী জানান, কমিশন দুর্নীতির বিরুদ্ধে কার্যকর অভিযান চালাতে একটি গোয়েন্দা ইউনিট গঠন করেছে। গোয়েন্দা ইউনিট ইতিমধ্যে কাজ শুরু করেছে। চলতি রমজান মাসে বিভিন্ন সরকারি কার্যালয়ে আকস্মিক অভিযান চালানো হচ্ছে। ঘুষ-দুর্নীতি প্রতিরোধে কমিশন ইতোমধ্যে আরো দুটি টিম গঠন করেছে। দুদকের একজন মহাপরিচালকের (ডিজি) তত্ত্বাবধায়নে দুদকের সহকারি পরিচালক পর্যায়ের একজন কর্মকর্তার নেতৃত্বে দুই সদস্যের সমন্বয়ে দুটি পৃথক টিম কাজ শুরু করেছে।