যৌতুক নিয়ে মিথ্যা মামলা করলে পাঁচ বছরের জেল অথবা ৫০ হাজার টাকা জরিমানা অথবা উভয় দণ্ডের বিধান রেখে নতুন আইন করার প্রস্তাব সংসদে তোলা হয়েছে। যৌতুক প্রদান, গ্রহণ বা যৌতুকে সহায়তা বা চুক্তি করলেও একই সাজার বিধান রাখা হয়েছে প্রস্তাবিত আইনে।
সোমবার মহিলা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী মেহের আফরোজ চুমকি ‘যৌতুক নিরোধ বিল-২০১৮’ সংসদে তোলেন। পরে বিলটি পরীক্ষা করে আগামী ৩০ কার্যদিবসের মধ্যে সংসদে প্রতিবেদন দেয়ার জন্য মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটিতে পাঠানো হয়।
প্রতিমন্ত্রী চুমকি জানান, ১৯৮০ সালের এ সংক্রান্ত আইন বাতিল করে নতুন আইন করতে বিলটি তোলা হয়েছে। ১৯৮০ সালের ওই আইন ১৯৮২, ১৯৮৪ ও ১৯৮৬ সালে অধ্যাদশের মাধ্যমে সংশোধন করা হয়। আগের আইনে যৌতুক নিয়ে মিথ্যা মামলার জন্য কোনো দণ্ডের বিধান ছিল না।
উত্থাপিত বিলে বলা হয়েছে, কাউকে ক্ষতি করার জন্য যৌতুকের মামলা বা অভিযোগ করলে ৫ বছরের জেল অথবা ৫০ হাজার টাকা জরিমানা বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হবে। যদি বিয়ের কোনো এক পক্ষ প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে অন্য পক্ষের কাছে যৌতুক দাবি করে, তবে সর্বোচ্চ পাঁচ বছর কিন্তু সর্বনিম্ন এক বছরের জেল বা ৫০ হাজার টাকার জরিমানা অথবা উভয় দণ্ডের বিধান রাখার প্রস্তাবও করা হয়েছে বিলে। আইনের খসড়ায় বলা হয়েছে, এই আইনের অধীন সংঘটিত অপরাধ আমলযোগ্য ও জামিন অযোগ্য হবে। তবে আপসযোগ্য হবে।
বিলের কারণ ও উদ্দেশ্যে সম্বলিত বিবৃতিতে বলা হয়েছে, নারীর মর্যাদা প্রতিষ্ঠায় বাংলাদেশের সংবিধানে নারী ও পুরুষের সম-অধিকারের বিধান রয়েছে। বাংলাদেশ সরকার জাতিসংঘের নারীর প্রতি সকল প্রকাশ বৈষম্য বিলোপ সনদ, ১৯৭৯ এর স্বাক্ষরকারী রাষ্ট্র হিসেবে নারী অধিকার বিষয়ক অনেক নীতিমালাকে স্বীকৃতি দিয়েছে। এ সত্ত্বেও বাংলাদেশে যৌতুক প্রথা এক ভয়াবহ সমস্যা। এ কারণে অনেক সময় আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন, পরিকল্পনা প্রণয়ন, সুশাসন প্রতিষ্ঠা এবং নারীর ক্ষমতায়নে বাধাগ্রস্ত হয়।