বিশ্ববাজারে হারিয়ে যাচ্ছে সাদা সোনা খ্যাত বাগদার বাজার
তারিথ
: ০৪-০৭-২০১৮
অনলাইন ডেস্ক :
বিশ্ববাজারে বাংলাদেশের সাদা সোনাখ্যাত চিংড়ির বাজার ক্রমাগত নি¤œমুখী হচ্ছে। মূলত ভেনামি (এক প্রকার হাইব্রিড) চিংড়ির বাজার দখলের কারণেই দেশের চিংড়ি রফতানি অর্ধেকে নেমে এসেছে। ফলে একদিকে সরকার হারাচ্ছে কোটি কোটি টাকার রাজস্ব। পাশাপাশি লাখো মানুষও বেকার হওয়ার শঙ্কায় রয়েছে। যদিও সুস্বাদু আর পুষ্টিগুণের কারণে বিশ্বে চিংড়ি সিফুড হিসেবে সমাদৃত। উন্নত রাষ্ট্রগুলোতে অনেক চাহিদাও। কিন্তু নানা কারণে দেশের দ্বিতীয় রফতানিকারক পণ্য চিংড়ি রফতানিতে স্থবিরতা কাটছে না। চিংড়ি খাত সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়।
সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, বিগত ২০০০ সাল পর্যন্ত বিশ্বে বাগদা চিংড়ির বাজার ছিল ১২ লাখ টন। কিন্তু ৯০ দশক থেকে বড় হতে থাকে প্যাসিফিক সাদা চিংড়ি বা ভেনামি চিংড়ির বাজার। বাংলাদেশ ছাড়াও দক্ষিণ এশিয়ার সব দেশেই এই চিংড়ি চাষ হয়। তবে বাগদা আগে থেকে শুরু হলেও এর চাষ বাড়ানো যায়নি। বিপরীতে ভেনামির উৎপাদন অনেক বেশি। বাগদার উৎপাদন হেক্টর প্রতি ৩শ’ থেকে ৪শ’ কেজি, ঘেরে বা হ্যাচারিতে এটির উৎপাদন ৩ থেকে ৬ হাজার কেজি। আর ভেনামির উৎপাদন ১০ হাজার থেকে ৩০ হাজার কেজি। সূত্র জানায়, দেশে বিগত ২০১৩-২০১৪ অর্থবছর থেকে ২০১৬-২০১৭ অর্থবছরে ক্রমান্বয়ে চিংড়ির রফতানি নিম্নমুখী। ২০১৬-২০১৭ অর্থবছরের মার্চ, এপ্রিল ও মে মাসে চিংড়ি রফতানি প্রায় অর্ধেকে নেমে আসে। ২০১৮ সালের ৩ মাসে (মার্চ, এপ্রিল, মে) ৪ হাজার ৮৪৩ মেট্রিক টন চিংড়ি রফতানি হয়। যার বাজার মূল্য ৫৮ হাজার ৮৯৬ মার্কিন ডলার। তার আগের বছরে (২০১৭) একই সময়ে রফতানি হয় ৭ হাজার ১৬০ মেট্রিক টন, যার বাজার মূল্য ছিল ৮৬ হাজার ৬১৩ মার্কিন ডলার। বর্তমানে বিশ্বে রফতানির ৭৭ শতাংশ অবদান ভেনামির। সেগুলো ৭২ শতাংশ এশিয়ায় উৎপাদন হয়। তার মধ্যে বাগদার অবদান ১২ শতাংশ। শুধু রোগের কথা বলে ভেনামি চাষ বর্জন করা হয়। সূত্র আরো জানায়, চিংড়ি রফতানিতে বিশ্ব বাজার আবারো দেশের দখলে আনতে বাগদার পাশাপাশি ভেনামি চিংড়ি চাষের প্রয়োজন। ভেনামি চিংড়ি চাষে খরচ ও দাম কম। আর উৎপাদনও বেশি হওয়ায় তার চাহিদা বেশি। কিন্তু দেশে ভেনামি চিংড়ি চাষের অনুমোদন নেই। অথচ দক্ষিণ এশিয়ার সব দেশেই ভেনামি চাষ হচ্ছে। এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ ফ্রোজেন ফুডস এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের সহ-সভাপতি কাজী বেলায়েত হোসেন জানান, বিশ্ববাজারে বাগদার বাজার হারিয়ে যাচ্ছে। সরকারের কাছে ভেনামি চাষের জন্য অনুরোধ জানানো হয়েছে।