থাইল্যান্ডের গুহায় আটকে পড়া ১২ জন কিশোরকে অসম্ভব সাহসী ও দৃঢ় মনোবলসম্পন্ন বলে ভূয়সী প্রশংসা করেছেন উদ্ধার কাজে অংশ নেয়া এক বিশেষজ্ঞ ডুবুরি। গুহায় আটকে পড়া শিশুদের বের করে আনার কাজে স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে যেসব বিদেশি বিশেষজ্ঞ ডুবুরিরা অংশ নিচ্ছেন, তাদেরই একজন হলেন ডেনমার্কের ইভান কারাজিচ।
ইভান কারাজিচ থাইল্যান্ডেরই কো-তাও নামে ছোট একটি দ্বীপে একটি গুহার ভেতরে ডাইভিং বা ডুবসাঁতার দেওয়ার একটি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র চালান।
চ্যাং রাইয়ের পাহাড়ের গুহায় কিশোর ফুটবল দলটির আটকে পড়ার খবর প্রচার হওয়ার পর অন্য নানা দেশের অনেক স্বেচ্ছাসেবী ডুবুরির মতো তিনিও যোগ দেন উদ্ধারকারী দলে।
বিবিসির সাথে তার গত কয়েক দিনের অভিজ্ঞতার কথা বলতে গিয়ে ইভান কারাজিচ আটকে পড়া থাই শিশু-কিশোরদের, যাদের অধিকাংশ সাঁতারই জানত না, তাদের সাহস আর মনোবলের ভূয়সী প্রশংসা করেছেন।
তিনি বলেন, ‘এই বাচ্চাগুলোকে এমন কাজ করতে বাধ্য করা হচ্ছে, যা আগে কখনো এই বয়সের কোনো শিশুই হয়তো করেনি; ১১ বছর বয়সে কেভ ডাইভিং (গুহার ভেতরে ডুবসাঁতার) চিন্তারও বাইরে।’
কারাজিচ বলেন, ‘সরু গুহায় ভারি অক্সিজেনের পাত্র পিঠে নিয়ে মাস্ক পরে ডুবসাঁতার দেয়া যেকোনো বয়সের মানুষের জন্য বিপজ্জনক। যখন-তখন বিপদ আসতে পারে, নিজের টর্চের আলো ছাড়া সবকিছু অন্ধকার।’
ইভান কারাজিচ আরো বলেন, উদ্ধারের পরিকল্পনার সময় তাদের সবচেয়ে ভয় ছিল বাচ্চাগুলো যদি মাঝপথে আতঙ্কিত হয়ে পড়ে, তখন কীভাবে তা সামাল দেওয়া যাবে। কিন্তু এখন পর্যন্ত যে আটজনকে বের করে নেয়া হয়েছে তাদের তেমন কোনো বিপদের কথা উদ্ধারকারীদের কাছ থেকে শোনা যায়নি।
‘আমি বিশ্বাসই করতে পারি না যে, এই বাচ্চাগুলো কতটা সাহসী এবং ঠাণ্ডা মাথার হতে পারে, ভাবতেই পারছি না... দু’সপ্তাহ ধরে ঠাণ্ডা, অন্ধকার গুহায় আটকে ছিল তারা, মাকেও দেখেনি...’
ইভান কারাজিচের দায়িত্ব ছিল গুহার মাঝামাঝি পথে অবস্থান নিয়ে অক্সিজেন ভর্তি পাত্র পরীক্ষা করে বদলে দেওয়া।
রোববার প্রথম বাচ্চাটিকে যখন আসতে দেখেন, তখন অনুভূতি কী ছিল? জবাবে ইভান কারাজিচ বলেন, ‘মনে মনে অনেক আশঙ্কা ছিল আমার। ৫০ মিটারের মতো দূরে প্রথম যখন একজন ডুবুরি এবং তার পেছনে বাচ্চাটি নজরে এলো, আমি তখনও নিশ্চিত ছিলাম না যে বাচ্চাটি বেঁচে আছে কিনা। যখন দেখলাম সে শ্বাস নিচ্ছে, বেঁচে আছে, দারুণ স্বস্তি পেয়েছিলাম।