কোটা সমস্যার সমাধানে সরকার রাইট ট্র্যাকে: ওবায়দুল কাদের
তারিথ
: ১৪-০৭-২০১৮
অরাইৈন ডেস্ক :
কোটা সমস্যার সমাধানে সরকার সঠিক পথেই আছে বলে জানিয়েছেন পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। গতকাল শনিবার সেতু কর্তৃপক্ষের কার্যালয় সেতু ভবনে ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত মার্শা ব্লুম বার্নিকাটের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন কাদের। এ সময় কোটা সংস্কার আন্দোলন সমস্যার ইতিবাচক সমাধানের ব্যাপারে আশাবাদ ব্যক্ত করেন মন্ত্রী। তিনি বলেন, কোটা সমস্যার সমাধানে সরকার এখন একেবারে রাইট ট্র্যাকে আছে। এখানে ফর্মালি একটা কমিটি গঠন করা হয়েছে কেবিনেট সেক্রেটারির নেতৃত্বে। এই কমিটি খোঁজ খবর নিচ্ছে, অন্যান্য দেশেরও তথ্য উপাত্ত সংগ্রহ করছে। আমার মনে হয় বিষয়টা দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে। কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের উদ্দেশ করে ওবায়দুল কাদের আরো বলেন, আমি শুধু কোটা সংস্কার আন্দোলনে যারা আছে তাদের অনুরোধ করব ধৈর্য ধরার জন্য। প্রধানমন্ত্রী যে স্টেপ নিয়েছেন এই পদক্ষেপের প্রতি আস্থা রেখে আরেকটু ধৈর্য ধরতে অনুরোধ করব। এ ছাড়া দুই দেশের সম্পর্ক উন্নয়নের বিভিন্ন বিষয় ছাড়াও আলোচনায় আসন্ন তিন সিটি নির্বাচন এবং জাতীয় নির্বাচনের বিষয়টিও উঠে আসে। বাংলাদেশে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানের প্রযোজনীয়তার কথা যুক্তরাষ্ট্র বারবার বলবে বলে জানান রাষ্ট্রদূত বার্নিকাট। বিএনপি নেতাদের সাম্প্রতিক বক্তব্যের কথা তুলে ধরে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক কাদের বলেন, বিএনপি জাতীয় নির্বাচনে অংশ নেবে। তবে বিএনপিকে নির্বাচনে নিয়ে আসতে আওয়ামী লীগ আগ বাড়িয়ে কোনো ব্যবস্থা নেবে না বলেও জানান তিনি।
বিএনপি ফিরলে বাংলাদেশ রক্তের নদী হয়ে যাবে: বিএনপি যেন আগামীতে ক্ষমতায় ফিরতে না পারে, সে জন্য দেশবাসীকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেছেন, বিএনপি যদি আর একবার ক্ষমতায় আসে কী হবে বুঝতে পারেন? ২০০১ সালের চেয়েও ভয়াবহ পরিস্থিতি হবে। এক দিনেই বাংলাদেশ রক্তের নদী হয়ে যাবে, লাশের পাহাড় হয়ে যাবে। একদিনেই বাংলাদেশ আবার পাকিস্তানি ধারায় প্রত্যাবর্তন করবে। গতকাল শনিবার ঢাকার গুলিস্তানে কাজী বশির মিলনায়তনে মুক্তিযোদ্ধাদের এক সভায় একথা বলেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক। সম্প্রতি বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর আওয়ামী লীগকে একদিনের জন্য ক্ষমতা ছেড়ে দিয়ে তাদের মোকাবেলার আহ্বান জানিয়েছিলেন। তার প্রতিক্রিয়ায় কাদেরের এই বক্তব্য। প্রতিহিংসায় বিশ্বাস করেন না বলে বিএনপি নেতাদের বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় তাদের ২০০১ সালে নির্বাচনের পরের ঘটনাগুলো মনে করিয়ে দেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক। তিনি বলেন, এবারের বিএনপি ২০০১ সালের চেয়েও ভয়াবহ বিএনপি। এই বিএনপি আপনাদের-আমার বাড়িছাড়া করবে। মনে কি আছে গ্রামছাড়া আওয়ামী লীগের কর্মীরা এই বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে বছরের পর বছর লঙ্গরখানায় দুঃসহ জীবন-যাপন করেছে। দুর্বিষহ জীবন-যাপন করেছে এদেশের সংখ্যালঘুরা। মহিলাদের ধর্ষণ, ঘরে ঘরে অত্যাচার, পুকুরের মাছ বিষ দিয়ে মেরে ফেলেছে, বসতঘর আগুনে পুড়ে দিয়েছে। এই হচ্ছে বিএনপি। সেই ইতিহাস কি ভুলে গেছেন? মুক্তিযোদ্ধাদের ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানিয়ে কাদের বলেন, মুক্তিযোদ্ধাদের বলছি, ২০০১ সাল মার্কা নির্বাচন যাতে না হতে পারে, আগুন সন্ত্রাসের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে যাতে না হয়। সকল ষড়যন্ত্র ঠেকাতে হবে। সভায় নৌ-পরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খান মুক্তিযোদ্ধাদের পক্ষ থেকে ৬ দফা দাবি তুলে ধরেন। দাবির মধ্যে রয়েছে জামায়াত-শিবির, যুদ্ধাপরাধী ও স্বাধীনতাবিরোধীদের সন্তানদের যাতে সরকারি চাকরিতে নিয়োগ দেওয়া না হয়, সরকারি চাকুরেদের মধ্যে যারা মুক্তিযুদ্ধবিরোধী তৎপরতা চালাচ্ছে তাদের বিতাড়ণ, যুদ্ধাপরাধীদের স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি এবং জামায়াত-শিবির পরিচালিত প্রতিষ্ঠান বাজেয়াপ্ত ইত্যাদি। কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনে নাশকতাসৃষ্টিকারীদের চিহ্নিত করে শাস্তির দাবিও জানান শাজাহান খান। সভায় মুক্তিযুদ্ধ বিষয়কমন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক, তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু, সাবেক মন্ত্রী তাজুল ইসলাম, জাসদের একাংশের সাধারণ সম্পাদক শিরিন আখতার বক্তব্য রাখেন।