সরকারি আইনি সহায়তায় জাতীয় হেল্পলাইন টোল ফ্রি নম্বর ১৬৪৩০-এর মাধ্যমে ২৮ এপ্রিল ২০১৬ থেকে মার্চ ২০১৮ পর্যন্ত প্রায় ২৬ হাজার জন আইনগত তথ্যসেবা গ্রহণ করেছেন। জাতীয় আইনগত সহায়তা সংস্থার সহকারী পরিচালক ও সিনিয়র সহকারী জজ কাজী ইয়াসিন হাবিব এ তথ্য জানান। তিনি বলেন, সরকারি আইনি সহায়তা সংস্থার সব তথ্য সংস্থাটির ওয়েবসাইটেও প্রকাশ করা হয়। কাজী ইয়াসিন হাবিব বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২৮ এপ্রিল-২০১৬-এ সরকারি আইনি সহায়তায় জাতীয় হেল্পলাইন-১৬৪৩০ -এর উদ্বোধন করেন। উদ্বোধনের পর থেকেই ওই টোল ফ্রি ১৬৪৩০ হেল্পলাইন নম্বরে সারা দেশ হতে অগণিত অসহায় ও সাধারণ মানুষ আইনি পরামর্শ ও তথ্যের জন্য ফোন কল করে যাচ্ছে। এ কল সেন্টার হতে বর্তমানে অফিস চলাকালীন আইনগত পরামর্শ, তথ্যসেবা ও লিগ্যাল কাউন্সেলিং সেবাগুলোয় দেওয়া হচ্ছে যা অসহায় মানুষের আইনি অধিকার সুরক্ষায় কার্যকর অবদান রাখছে। জাতীয় আইনগত সহায়তা সংস্থার সহকারী পরিচালক বলেন, হেল্পলাইনের সেবাগুলো হচ্ছে-আইনি পরামর্শ প্রদান, আইনগত তথ্য প্রদান, কাউন্সিলিং, মামলা-মোকদ্দমা করার প্রাথমিক তথ্য প্রদান, সরকারি আইনি সেবা সম্পর্কিত যেকোনো পরামর্শ, অভিযোগ গ্রহণ (কর্তৃপক্ষকে অবগতকরণ)। তিনি আরো বলেন, এ হেল্পলাইনে যোগাযোগ তথাসেবা গ্রহণের মাধ্যম হলো-মোবাইল, টেলিফোন, ম্যাসেজ, মোবাইল অ্যাপস এবং ফেইস বুক ম্যাসেঞ্জার। জানা যায়, মার্চ ২০১৮ পর্যন্ত আইনগত তথ্যসেবা গ্রহণকারীদের মধ্যে রয়েছেন প্রায় আট হাজার নারী এবং ১৮ হাজার পুরুষ। দিনে দিনে জাতীয় এ হেল্পলাইনে আইনগত তথ্যসেবা গ্রহণের হার বাড়ছে। কাজী ইয়াসিন হাবিব বলেন, বাংলাদেশে একটি শক্তিশালী আইনগত সহায়তা ব্যবস্থাপনা প্রতিষ্ঠা ও সরকারি আইনগত কার্যক্রম আন্তর্জাতিকমানে উন্নীতকরণে মাধ্যমে একুশ শতকের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার লক্ষ্যে সংস্থার ২০১২-২০১৭ সালের ১ম কৌশলগত কর্মপরিকল্পনার সফল বাস্তবায়ন হয়েছে। এখন পরবর্তী কৌশলগত পরিকল্পনা ২০১৮-২০২২ প্রণয়নের কার্যক্রম চলমান আছে। জাতীয় আইনগত সহায়তা সংস্থা দ্রুততম সময়ে সরকারি আইনি সেবা কার্যক্রম পর্যবেক্ষণ ও জবাবদিহিতা নিশ্চিতে ডিজিটাল ডাটাবেস স্থাপন কার্যক্রম শুরু করেছে। দেশের সবকটি জেলায় এখন লিগ্যাল এইড সেবার ব্যাপ্তি রয়েছে। তিনি বলেন, জাতীয় আইনগত সহায়তা সংস্থার সেবা আরো তরান্বিত করতে সংস্থা অফিশিয়াল ফেসবুক পেইজ খুলেছে। দেশের দরিদ্র ও অসমর্থ জনগোষ্ঠী, শ্রমিক, সহিংসতার শিকার নারী-শিশু এবং পাচারের শিকার মানুষের জন্য আইনি সেবা নিশ্চিতে শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকার ২০০০ সালে আইন প্রণয়নের মধ্যদিয়ে এর যাত্রা শুরু করে। পরে এই আইনের অধীনে বিভিন্ন বিধি প্রণীত হয়। বিধিতে কারা আইনি সহায়তা পাবেন তা নির্ধারণ করা হয়। দেশের সবক’টি জেলা আদালত, চৌকি আদালত এবং সুপ্রিম কোর্টে লিগ্যাল এইড সার্ভিস চালু রয়েছে। ইয়াসিন হাবিব জানান, জেলা লিগ্যাল এইড অফিসগুলোকে এখন শুধু আইনি সহায়তা প্রদানের কেন্দ্র হিসেবেই সীমাবদ্ধ রাখা হয়নি, মামলা জট কমানোর লক্ষ্যে এ অফিসগুলোকে ‘এডিআর কর্ণার’ বা বিকল্প বিরোধ নিষ্পত্তির কেন্দ্রস্থল’ হিসেবে প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। প্রতিটি জেলায় লিগ্যাল এইড কর্মকর্তা নিয়োগ হচ্ছে। এ আইনি সেবায় বিভিন্ন কার্যক্রমে জনগণের সম্পৃক্ততা এবং সুবিধাগ্রহণের হার দিনে দিনে বেড়ে চলেছে।