সশস্ত্র বাহিনী দিবসে রাষ্ট্রপতি-প্রধানমন্ত্রীর শ্রদ্ধা
তারিথ
: ২১-১১-২০১৭
অনলাইন ডেস্ক :
সশস্ত্র বাহিনী দিবস আজ। বিশেষ এই দিবস উপলক্ষে সকালে মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে আত্মোৎসর্গকারী সেনা, নৌ ও বিমান বাহিনীর সদস্যদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
সশস্ত্র বাহিনী দিবস উপলক্ষে মঙ্গলবার (২১ নভেম্বর) সকাল ৮টার দিকে ঢাকা সেনানিবাসের শিখা অনির্বাণে সম্মান জানিয়ে প্রথমে রাষ্ট্রপতি এবং পরে প্রধানমন্ত্রী পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। পুষ্পস্তবক অর্পণের পর রাষ্ট্রপতি নীরবে দাঁড়িয়ে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান এবং এরপর শিখা অনির্বাণ প্রাঙ্গণে রাখা দর্শনার্থী বইয়ে স্বাক্ষর করেন। এর আগে বাংলাদেশের সশস্ত্র বাহিনীর সর্বাধিনায়ক প্রেসিডেন্ট আবদুল হামিদ এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সকালে ঢাকা সেনানিবাসে পৌঁছলে তাদের স্বাগত জানান তিন বাহিনীর প্রধান ও সশস্ত্র বাহিনী বিভাগে প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার।
রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ শিখা অনির্বাণে ফুল দিয়ে কিছুক্ষণ নীরবে দাঁড়িয়ে থাকেন। এ সময় সেনা, নৌ ও বিমান বাহিনীর একটি চৌকস দল সশস্ত্র সালাম জানায়।
রাষ্ট্রপতির পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শিখা অনির্বাণে ফুল দিয়ে শহীদ সেনাদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান। এ সময়, সশস্ত্র বাহিনীর একটি চৌকস দল তাকে গার্ড অব অনার দেয়। পরে প্রধানমন্ত্রী পরিদর্শন বইয়ে স্বাক্ষর করেন।
রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর পর সেনাবাহিনীর প্রধান জেনারেল আবু বেলাল মোহাম্মদ শফিউল হক, নৌবাহিনীর প্রধান অ্যাডমিরাল নিজামউদ্দিন আহমেদ এবং বিমানবাহিনীর প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল আবু এসরার নিজ নিজ বাহিনীর পক্ষে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন।
মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে ১৯৭১ সালের ২১ নভেম্বর সেনা, নৌ ও বিমান বাহিনীর সদস্যরা সম্মিলিতভাবে দখলদার পাকিস্তানি বাহিনীর বিরুদ্ধে সমন্বিত আক্রমণের সূচনা করে।
এ উপলক্ষে আজ (২১ নভেম্বর) সব সেনানিবাস, নৌঘাঁটি ও স্থাপনা এবং বিমানবাহিনী ঘাঁটির মসজিদে সশস্ত্র বাহিনীর উত্তরোত্তর উন্নতি ও অগ্রগতি কামনা করে ফজরের নামাজ শেষে বিশেষ মোনাজাত করা হয়। দিবসটি উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি ও সশস্ত্র বাহিনীর সর্বাধিনায়ক মো. আবদুল হামিদ এবং প্রধানমন্ত্রী ও প্রতিরক্ষামন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বাণী দিয়েছেন।
প্রধানমন্ত্রী আজ (২১ নভেম্বর) ঢাকা সেনানিবাসের আর্মি মাল্টিপারপাস কমপ্লেক্সে বীরশ্রেষ্ঠদের উত্তরাধিকারী এবং নির্বাচিত সংখ্যক খেতাবপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা ও তাদের উত্তরাধিকারীকে সংবর্ধনা জানাবেন। এ ছাড়া ১০ জন সেনা, একজন নৌ এবং একজন বিমানবাহিনী সদস্যকে ২০১৬-১৭ সালের শান্তিকালীন পদকে এবং ১০ জন সেনা, দুজন নৌ এবং দুজন বিমানবাহিনী সদস্যকে ২০১৬-১৭ সালের অসামান্য সেবা পদকে ভূষিত করবেন প্রধানমন্ত্রী।
এ ছাড়া দিনটি যথাযোগ্য মর্যাদায় পালনের জন্য ঢাকার বাইরে দেশের অন্যান্য সেনা গ্যারিসন, নৌ জাহাজ ও স্থাপনা এবং বিমান বাহিনী ঘাঁটিতেও বিভিন্ন কর্মসূচি নেয়া হয়েছে।
ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, চট্টগ্রাম, খুলনা, মোংলা, বরিশাল ও চাঁদপুরে বিশেষভাবে সজ্জিত নৌবাহিনী জাহাজসমূহ ২১ নভেম্বর বেলা ২টা থেকে বিকেল ৪টা ৩০ মিনিট পর্যন্ত সর্বসাধারণের পরিদর্শনের জন্য উন্মুক্ত থাকবে।
প্রসঙ্গ, ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধের এইদিনে সেনা, নৌ ও বিমান বাহিনীর সমস্বয়ে বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনী গঠিত হয়। এরপর এ বাহিনী দখলদার পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে সর্বাত্মক আক্রমণ শুরু করে এবং এতে মুক্তিযুদ্ধে বিজয়কে ত্বরান্বিত হয়।
দেশ স্বাধীন হওয়ার পর এই ঐতিহাসিক দিনটি প্রতি বছর সশস্ত্র বাহিনী দিবস হিসেবে উদযাপিত হচ্ছে।