দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) এখনো বড় দুর্নীতিবাজের কাছে যেতে পারেনি বলে মন্তব্য করেছেন প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ। তিনি বলেছেন, ‘আমরা এখনো অনেক বড় দুর্নীতিবাজের কাছে যেতে পারিনি। তবে এই যে পারিনি, তা স্বীকার করার সাহস আমাদের আছে। আমরা শুরু করলে শেষ করব, মাঝপথ থেকে ফিরে আসব না।’
রাজধানীর জাতীয় নাট্যশালা মিলনায়তনে মঙ্গলবার সকালে এক আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন তিনি। দুদকের ১৩তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রাক্তন গভর্নর ড. মোহাম্মদ ফরাসউদ্দিন। সকালে জাতীয় পতাকা উত্তোলনের মাধ্যমে দুদকের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠান উদ্বোধন করা হয়।
উন্নয়ন ও দুর্নীতি সম্ভবত যমজ ভাই মন্তব্য করে দুদক চেয়ারম্যান বলেন, ‘রেগুলেটরি ফ্রেমওয়ার্কগুলো যদি ঠিক থাকে তাহলে উন্নয়ন হবে ঠিকই, প্রতিষ্ঠানগুলোর সম্মিলিত কাজে দুর্নীতির লাগাম টেনে ধরাও যাবে। তাহলে জনগণের উন্নয়নের জন্য যে অর্থনৈতিক উন্নতি দরকার সেটা করা সম্ভব হবে।’
ইকবাল মাহমুদ আরও বলেন, ‘সম্পদের অসমতা থাকলেও আমরা ধীরে ধীরে উন্নতির দিকে যাচ্ছি। এই উন্নয়নের সঙ্গে সঙ্গে দুর্নীতির গতিকে টেনে ধরাই হচ্ছে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ।’
তিনি বলেন, ‘আমরা এমন কোনো কাজ করতে চাই না, যে কাজ আমরা হাত দিয়ে শেষ করতে পারব না। অনুসন্ধান ও তদন্ত কাজে গুণগত মান বৃদ্ধির জন্য আমাদের কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করেছি। মানুষকে হয়রানি করা যাবে না। ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার জন্য প্রতিটি অনুসন্ধান ও তদন্ত আইন ও বিধি অনুসারে সুন্দরভাবে উপস্থাপন করতে হবে।’
যে মামলা আদালতে প্রমাণ করা যাবে না, সেই মামলা আমরা করতে চাই না, এ কথা উল্লেখ করে ইকবাল মাহমুদ বলেন, ‘এ কারণে কমিশনের মামলার পরিমাণ কমে গেছে, তবে গুণগত মান বেড়েছে। শাস্তির হার বেড়েছে। তবে আমরা কখনোই বলব না যে, আমরা শতভাগ সফল হয়েছি। আমাদের ব্যর্থতা আছে। ব্যর্থতাকে আলিঙ্গন করা একটা জরুরি ব্যাপার। আপনারা কাজ করছেন, তবে কাজে যেন গাফিলতি না হয়।’
তিনি বলেন, ‘এটা সত্য যে আমরা এখনো জনগণের আস্থা সৃষ্টি করতে পারিনি। জনগণের আস্থা যদি না থাকে তাহলে এই প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম ক্ষতিগ্রস্ত হবে। এটি যে একটি কার্যকর প্রতিষ্ঠান, সেই আস্থার জায়গা তৈরি করতে পারিনি।’
দুদকের চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদের সভাপতিত্বে অন্যান্যর মধ্যে কমিশনের দুই কমিশনার ড. নাসিরউদ্দিন আহমেদ ও এ এফ এম আমিনুল ইসলাম, সচিব শামসুল আরেফিন বক্তব্য দেন।