নির্বাচনের তফসিলের আগে বড় প্রকল্পের কাজ ত্বরান্বিত করুন, ডিসিদের প্রতি ওবায়দুল
তারিথ
: ২৫-০৭-২০১৮
অনলাইন ডেস্ক,ফাইল ছবি :
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের আগামী জাতীয় নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার আগে সরকারের বড় বড় প্রকল্পের কাজ ত্বরান্বিত করতে জেলা প্রশাসকদের নির্দেশনা দিয়েছেন। একইসঙ্গে তিনি সরকার বিব্রত হয় এমন কোনো কাজ না করা, ভিআইপি ও মন্ত্রীদের প্রটোকল কমিয়ে কাজে বেশি মনোযোগী হওয়ারও নির্দেশ দেন।
বুধবার সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ কক্ষে জেলা প্রশাসক (ডিসি) সম্মেলনের দ্বিতীয় দিনের সপ্তম কার্য-অধিবেশন শেষে মন্ত্রী সাংবাদিকদের এ কথা জানান। এ সময় রেলমন্ত্রী মুজিবুল হকও উপস্থিত ছিলেন।
সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ, সেতু বিভাগ ও রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে জেলা প্রশাসকদের এ কার্য-অধিবেশন হয়। মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম এতে সভাপতিত্ব করেন। সরকারের উন্নয়ন কর্মকাণ্ড বাস্তবায়ন করতে গিয়ে জেলা প্রশাসকরা রাজনৈতিক কোনো চাপের কথা বলেছেন কিনা- জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘এ ধরনের কোনো কথা ডিসি সাহেবরা বলেননি। আমাদের এরিয়ার বাইরে তারা কোন প্রশ্ন করতে যাননি। তবে রুলিং পার্টির সাধারণ সম্পাদক হিসেবে আমি তাদের বলেছি, এমন কিছু করবেন না যাতে সরকার এম্বারাসড হয়। এমন কিছু আপনারা করবেন না আর কোন চাপের কাছে নতি স্বীকার করবেন না। এই কথাটা আমি স্পষ্ট বলেছি।’
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘এটাও বলেছি আপনারা মন্ত্রী-ভিআইপিদের এত প্রটোকল দিতে গেলে কাজ করবেন কখন। সারাদিন যদি ডিসি-এসপি মন্ত্রীর পিছনে ঘোরে তাহলে সে কাজ করবে কখন।’ ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আমরা দুই মন্ত্রী বলেছি, আমাদের প্রটোকলের দরকার নেই। প্রটোকল কমানো উচিত। ওরা কাজ করবে কীভাবে, আর সরকারের শেষ বছর, এখন অনেক কাজ ডিসি-এসপিদের।’
বর্তমান সরকারের মেয়াদে এটাই শেষ ডিসি সম্মেলন। নির্বাচনকে সামনে রেখে ডিসিদের কী নির্দেশনা দিয়েছেন- জানতে চাইলে সেতুমন্ত্রী বলেন, ‘এখানে একটা বিষয় পরিষ্কার। নির্বাচনের শিডিউল ডিক্লেয়ারের জন্য ৩ মাসের মতো সময় আছে। কাজেই এ সময়ে তাদের প্রতি সরকারের যে জেনারেল ম্যাসেজ সেটা সরকার প্রধান- প্রধানমন্ত্রী অলরেডি ডিসি সম্মেলন উদ্বোধনকালে দিয়েছেন। এর সঙ্গে সরকার, আমরা মন্ত্রীরা সবাই একমত। কাজেই সরকার প্রধানের ম্যাসেজটাই আমাদের ম্যাসেজ। এর বাইরে উই ক্যান নট থিংক বেয়ন্ড দ্যাট।’
ডিসিদের সঙ্গে আলোচনার বিষয়ে মন্ত্রী আরও বলেন, ‘আমাদের নিজেদের ব্যাপারটা, আমার প্রায়োরিটি হচ্ছে এই সময়ে নতুন বড় বড় স্বপ্ন দেখে কোনো লাভ নেই। যে স্বপ্ন এখন নির্মাণ হচ্ছে- যেমন পদ্মা সেতু, যেমন মেট্রোরেল, যেমন কর্ণফুলী টানেল; এই নির্মাণকাজগুলো যতদূর সম্ভব অক্টোবরে নির্বাচনের শিডিউল ঘোষণা পর্যন্ত এগিয়ে নিয়ে যাওয়া, কাজগুলোকে ত্বরান্বিত করা। আর ইমিয়েডেট যেটা- রাস্তাগুলোতে পাসঅ্যাবল করা, ইউজঅ্যাবল করা, সচল করে রাখা।’
তিনি বলেন, ‘আমার পক্ষে এই সময়ে নতুন রাস্তা করা সম্ভব নয়। কাজেই আমি এই স্বপ্নটা দেখাব না।’ সেতুমন্ত্রী বলেন, ‘শেষ ঈদ- ঈদুল আজহা, ঈদুল আজহার আগে ভারি বর্ষণ, এর ওপর ভারি পরিবহণ, তারপর আবার পশুর হাট, পশুবাহী পরিবহণ, রংসাইডে আসা; যানজেটের আরও কিছু কারণ যেমন ইজিবাইক ব্যাটারিচালিত রিকশা- এ সব বিষয়ে মূলত ডিসি সাহেবদের বলেছি।’ তিনি বলেন, ‘রমজানের ঈদের সময়ও তারা দায়িত্ব পালন করেছেন এ জন্য আমরা স্বস্তিদায়ক ঘরমুখী ঈদযাত্রা দিতে পেরেছি। সফল করতে পেরেছি। এবারও যাতে গতবারের দৃষ্টান্ত অনুসরণ করে ঈদুল ফিতরের মতো মানুষ যাতে স্বস্তিতে বাড়ি যেতে পারে, আবার স্বস্তিতে কর্মস্থলে ফিরে আসতে পারে, যানজটের কারণগুলো দূরীকরণে তাদের চেষ্টা অব্যাহত রাখতে বলেছি।’
ওবায়দুল কাদের আরও বলেন, ‘মনিটরিংটা যাতে ঈদের পরও রাখা হয় ঈদের পর অ্যাকসিডেন্টে মৃত্যুর হার অনেক বেশি। সেজন্য ঈদের পর আমরা ঢাকা থেকেও মনিটরিং রাখব, জেলা পর্যায়েও জেলা প্রশাসকদের আমরা বলেছি তারা মনিটরিংটা যাতে অব্যাহত রাখে, দুর্ঘটনা যাতে কমিয়ে আনা যায়।’