রাজধানীর রামপুরা ও যাত্রাবাড়ীতে বাসা থেকে দুই নারীর লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। তারা হলেন- রামপুরার জুলেখা আক্তার (৪২) ও যাত্রাবাড়ীর রূপা বেগম (২৩)। দু’জনকেই শ্বাসরোধে হত্যার অভিযোগ উঠেছে তাদের স্বামীর বিরুদ্ধে। ঘটনার পর থেকেই দুই নারীর স্বামীই পলাতক রয়েছেন বলে পুলিশ জানিয়েছে।
রামপুরা থানার ওসি প্রলয় কুমার সাহা জানান, বনশ্রী আবাসিক এলাকার ডি ব্লকের ১০ নম্বর সড়কের সাত নম্বর বাসার ষষ্ঠতলায় পরিবারের সঙ্গে থাকতেন জুলেখা আক্তার। তিনি গুলশানের শাহজাদপুর এলাকার একটি কিন্ডারগার্ডেন স্কুলের শিক্ষক ছিলেন। বুধবার গভীর রাতে বাসার তালা ভেঙ্গে তার লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এ সময় তার স্বামী জাহাঙ্গীর হোসেনকে পাওয়া যায়নি।
মৃতের গলায় কালো দাগ দেখে ধারণা করা হচ্ছে, তাকে শ্বাসরোধে হত্যার পর পালিয়ে যান জাহাঙ্গীর। এই দম্পতির ১২ বছর বয়সী ছেলে ইফতেখার রায়হানকে পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদ করেছে।
মৃত জুলেখার ভাই শওকত আকবর জানান, বুধবার সকালে তার ভাগ্নে ইফতেখার স্কুলে যাওয়ার সময় বাবার কাছে জানতে চায় তার মা কোথায়? জবাবে জাহাঙ্গীর বলেন, তার মা স্কুলে গেছেন। তখন তার মায়ের কক্ষটি বন্ধ ছিল। শিশুটি বিকেলে বাসায় ফিরেও কক্ষটি বন্ধ দেখতে পায়। এ পর্যায়ে সে তার বাবাকে ফোন করে। ফোনের অপরপ্রান্ত থেকে জাহাঙ্গীর তাকে শাহজাদপুরে ফুফুর বাসায় যাওয়ার পরামর্শ দেন।
পুলিশ জানায়, প্রাথমিক তদন্তের ভিত্তিতে ধারণা করা হচ্ছে, দাম্পত্য কলহের জের ধরে জাহাঙ্গীর বুধবার সকালে স্ত্রীকে শ্বাসরোধে হত্যা করেন। এরপর দরজায় তালা ঝুলিয়ে পালিয়ে যান। তাকে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে। জুলেখার লাশ ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ মর্গে পাঠানো হয়েছে। ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন পেলে তার মৃত্যুর কারণ সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া যাবে। জুলেখার গ্রামের বাড়ি ময়মনসিংহের নান্দাইল উপজেলায়।
অন্যদিকে, যাত্রাবাড়ীর কাজলার পাড় স্কুল গলির ডি/৯৪ নম্বর বাসার চতুর্থ তলা থেকে রূপা বেগমের লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। আজ সকাল ৭টার দিকে লাশটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ (মিটফোর্ড হাসপাতাল) মর্গে পাঠানো হয়।
যাত্রাবাড়ী থানা পুলিশ জানায়, রূপা পেশায় পোশাক শ্রমিক ছিলেন। তার স্বামী সোহেলও পোশাক কারখানায় কাজ করেন। বুধবার রাতে কোনো বিষয়ে তাদের মধ্যে প্রচন্ড বাকবিতন্ডা হয়। আশেপাশের বাসার লোকজনও তা শুনতে পায়। এরপর সকালে তাদের ফ্ল্যাটের দরজা খোলা দেখে লোকজন উঁকি দেয়। এ সময় তারা রূপার লাশ পড়ে থাকতে দেখে বিষয়টি পুলিশকে জানায়। পুলিশ পৌছে লাশটি উদ্ধার করে। ঘটনার পর থেকে রূপার স্বামী সোহেলসহ শ্বশুরবাড়ির লোকজন পলাতক রয়েছেন।
মৃতের গলার দাগ ও পারিপার্শ্বিক পরিস্থিতির ভিত্তিতে পুলিশের ধারণা, রূপাকে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়। তবে হত্যার কারণ সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
যাত্রাবাড়ী থানার ওসি কাজী ওয়াজেদ আলী জানান, অভিযুক্ত সোহেলকে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে। তাকে পেলেই ঘটনার ব্যাপারে বিস্তারিত জানা যাবে।