অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় ৩১ অক্টোবরের মধ্যে খালেদার আপিল নিষ্পত্তির নির্দেশ
তারিথ
: ৩১-০৭-২০১৮
অনলাইন ডেস্ক :
জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় সাজার রায়ের বিরুদ্ধে হাই কোর্টে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার আপিল নিষ্পত্তির জন্য আরও তিন মাস সময় দিয়েছে সর্বোচ্চ আদালত। প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বাধীন চার বিচারপতির আপিল বেঞ্চ গতকাল মঙ্গলবার এই আদেশ দিয়ে বলেছে, আগামি ৩১ আক্টোবরের মধ্যে হাই কোর্টে এ মামলার আপিল নিষ্পত্তি করতে হবে। আদালতে খালেদা জিয়ার পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী এ জে মোহাম্মদ আলী ও জয়নুল আবেদীন। দুদকের পক্ষে খুরশিদ আলম খান এবং রাষ্ট্রপক্ষের অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম ছিলেন। জিয়া অরফানেজ দুর্নীতি মামলায় দ-িত খালেদা জিয়াকে হাই কোর্টের দেওয়া জামিন বহাল রেখে আপিল বিভাগ গত ১৬ মে তার আপিল ৩১ জুলাইয়ের মধ্যে হাই কোর্টে নিষ্পত্তির নির্দেশ দিয়েছিল। আপিল বিভাগের ওই আদেশের পুনর্বিবেচনা চেয়ে গত ২৭ জুন আবেদন করেন খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা। তাদের বক্তব্য শুনে গত ৯ জুলাই আদেশ দেয় আপিল বিভাগ। সেখানে বলা হয়, নির্ধারিত সময়ের মধ্যে আপিল নিষ্পত্তি না হলে তখন সময় বাড়ানোর বিষয়টি বিবেচনা করা হবে। এর প্রেক্ষিতেই ২৬ জুলাই চেম্বার আদালতে সময় বৃদ্ধির আবেদন করেন খালেদার আইনজীবীরা। পরে চেম্বার আদালত ২৯ জুলাই আবেদনটি শুনানির জন্য আপিলের নিয়মিত বেঞ্চে পাঠায়। বিদেশ থেকে জিয়া অরফানেজ ট্রাস্টের নামে আসা দুই কোটি ১০ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে দুদকের দায়ের করা এ মামলার রায়ে গত ৮ ফেব্রুয়ারি সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াকে পাঁচ বছরের কারাদ- দেন ঢাকার পঞ্চম বিশেষ জজ আখতারুজ্জামান। সেই সঙ্গে খালেদা জিয়ার বড় ছেলে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপারসন তারেক রহমানসহ অপর পাঁচ আসামির প্রত্যেককে ১০ বছরের জেল ও জরিমানা করা হয় রায়ে। ছয় আসামির মধ্যে খালেদা জিয়াসহ তিনজন কারাবন্দি। খালেদা জিয়া ছাড়া বাকি দুজন হলেন- মাগুরার সাবেক এমপি কাজী সালিমুল হক কামাল ওরফে ইকোনো কামাল ও ব্যবসায়ী শরফুদ্দিন আহমেদ। আর তারেক রহমান, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সাবেক সচিব কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী আর জিয়াউর রহমানের ভাগ্নে মমিনুর রহমান পলাতক। মানহানির ২ মামলায় জামিন: মানহানির দুই মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াকে জামিন দিয়েছেন ঢাকার একটি আদালত। গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে ঢাকা মহানগর দায়রা জজ কে এম ইমরুল কায়েস এ জামিন মঞ্জুর করেন। খালেদা জিয়ার আইনজীবী হান্নান ভূঁইয়া জানান, সকাল সাড়ে ১০টায় খালেদা জিয়ার পক্ষে জামিন শুনানি করা হলে দুপুর আড়াইটার দিকে বিচারক তাঁর দুই মামলার জামিন মঞ্জুর করেন। এর আগে ঢাকা মুখ্য মহানগর হাকিমের (সিএমএম) আদালত থেকে খালেদা জিয়ার জামিন না হওয়ায় ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতে জামিন আবেদন করেন তাঁর আইনজীবী সানাউল্লাহ মিয়া। মানচিত্র, পতাকা ও মুক্তিযুদ্ধকে বিকৃতির অভিযোগের মামলার বিবরণে জানা যায়, বাংলাদেশের মানচিত্র, জাতীয় পতাকা ও মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসকে বিকৃত করার অভিযোগে খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে ২০১৬ সালের ৩ নভেম্বর ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্টেট আদালত-৭-এ মানহানির মামলা করেন বাংলাদেশ জননেত্রী পরিষদের সভাপতি এ বি সিদ্দিকী। এ মামলায় ২০১৭ সালের ১২ নভেম্বর তাঁর বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা ইস্যু করা হয়। এরপর গত ১২ এপ্রিল আইনজীবীরা এ মামলায় তাঁর জামিন চান। এরপর গত ১৭ মে আদালত তৃতীয় দফায় সময় পিছিয়ে আদেশের জন্য আগামি ৫ জুলাই আদেশের জন্য দিন ধার্য করেছেন। এ অবস্থায় তাঁর জামিন চেয়ে হাইকোর্টে আবেদন করা হয়। অন্যদিকে, মিথ্যা তথ্য দিয়ে জন্মদিন পালনের অভিযোগে ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক গাজী জহিরুল ইসলাম ২০১৬ সালের ৩০ আগস্ট খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত-২২-এ মামলাটি করেন। এ মামলায় খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে ২০১৬ সালের ১৭ নভেম্বর গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয়। এরপর গত ২৫ এপ্রিল এ মামলায় খালেদা জিয়া জামিন চেয়ে আবেদন করেন। কিন্তু জামিন না দিয়ে ১৭ মে শুনানির দিন নির্ধারণ করেন আদালত। পরে ওই তারিখে তাঁর গ্রেফতারি পরোয়ানা কার্যকরের আদেশ দিয়ে ৫ জুলাই জামিন বিষয়ে আদেশের দিন ধার্য করেন। এ অবস্থায় তাঁর জামিন চেয়ে হাইকোর্টে আবেদন করা হয়।