দেশের উন্নয়নে ভূমিকা রাখবে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট: প্রধানমন্ত্রী
তারিথ
: ৩১-০৭-২০১৮
অনলাইন ডেস্ক :
দেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন তথা সার্বিক উন্নয়নে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট ভূমিকা রাখবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। মহাকাশে কৃত্রিম উপগ্রহ পাঠানোর পথ ধরে একদিন বাংলাদেশের চন্দ্রবিজয়ের স্বপ্নও বাস্তবে রূপ নেবে বলে মনে করেন তিনি। গতকাল মঙ্গলবার বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ এর সফল উৎক্ষেপণ উদযাপন এবং জয়দেবপুর ও বেতবুনিয়ায় ‘সজীব ওয়াজেদ উপগ্রহ ভূ-কেন্দ্রে’-র উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে একথা তিনি। গত ১২ মে ভোররাতে যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডার কেনেডি স্পেস সেন্টার থেকে সফলভাবে উৎক্ষেপিত হয় বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট। বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইটের দু’টি গ্রাউন্ড স্টেশন স্থাপন করা হয়েছে, যার একটি গাজীপুরের জয়দেবপুরে, অন্যটি রাঙামাটির বেতবুনিয়ায়। গাজীপুরের গ্রাউন্ড স্টেশনটি সেপ্টেম্বরের শেষ দিকে বাণিজ্যিক কার্যক্রমে যেতে পারবে বলে আশা করছে কর্তৃপক্ষ। অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী নতুন প্রজন্মের মধ্যে মহাকাশ নিয়ে আগ্রহের বিষয়টি উল্লেখ করে বলেন, আমাদের সন্তানরা এখন স্পেস বিজ্ঞান সম্পর্কে আগ্রহী হবে। শেখ হাসিনা বলেন, দেশের উন্নয়নের স্বার্থে তার সরকারের সময়ই প্রথম ডিজিটাল সিস্টেমের টেলিফোন প্রতিষ্ঠা, বেসরকারি খাতে মোবাইল ফোন, বিদ্যুৎ, টেলিভিশন, রেডিও, বিমান, হেলিকপ্টার উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়। এছাড়া সারাদেশে ইউনিয়ন পর্যায়ে ডিজিটাল সেন্টার স্থাপন ও লার্নিং অ্যান্ড আর্নিং প্রকল্পের মাধ্যমে কর্মসংস্থান সৃষ্টির কথাও তুলে ধরেন শেখ হাসিনা। আমাদের উন্নয়নটা সারা বাংলাদেশব্যাপী। সে লক্ষ্যেই আমরা কাজ করে যাচ্ছি। দেশে একটি গণতান্ত্রিক পরিবেশ সৃষ্টি করা এবং মানুষের ভোট ও ভাতের অধিকার নিশ্চিত করার মাধ্যমে অর্থনৈতিক উন্নয়ন- এটাই আমাদের লক্ষ্য। স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ ছাড়াও পরমাণু বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের মাধ্যমে পরমাণু ক্লাবে বাংলাদেশের যুক্ত হওয়ার কথাও বলেন তিনি। বাংলাদেশের চাঁদে যাওয়ার স্বপ্নও একদিন বাস্তায়ন হবে বলে মনে করেন শেখ হাসিনা। আমরাও একদিন চাঁদের দেশে চলে যেতে পারব। আগে চাঁদের দেশের স্বপ্ন দেখতাম। এখন চাঁদের দেশে পৌঁছানোর সম্ভাবনাও তৈরি হয়েছে। এক্ষেত্রে আমরা আরো একধাপ এগিয়ে গেলাম। আজকে বিশ্বটা আমাদের হাতের মুঠোয়। শেখ হাসিনা বলেন, আজকে আমরা উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে মর্যাদা পেয়েছি বিশ্বে। এই মর্যাদা ধরে রেখে দেশকে আমরা এগিয়ে নিয়ে যেতে চাই এবং আমরা তা পারব এ বিশ্বাস আমাদের আছে। বাংলাদেশে যে আজকে এগিয়ে যাচ্ছে এই গতিধারাটা যেন অব্যাহত থাকে। সাবমেরিন কেবলে যুক্ত না হওয়ায় তখনকার বিএনপি নেতৃত্বাধীন সরকারের সমালোচনা করে তিনি বলেন, এখন দুটি সাবমেরিন কেবল আছে। স্যাটেলাইট হয়ে গেল। আধুনিক প্রযুক্তি শিক্ষাটা আমরাই প্রথম শুরু করেছিলাম। সরকারের আশা, বর্তমানে বিদেশি স্যাটেলাইটের ভাড়া বাবদ যে ১৪ মিলিয়ন ডলার ব্যয় হয়, এ উপগ্রহের মাধ্যমে সেই অর্থ সাশ্রয় হবে। বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইটে ৪০টি ট্রান্সপন্ডার রয়েছে, যার ২০টি বাংলাদেশের ব্যবহারের জন্য রাখা হবে এবং বাকিগুলো ভাড়া দিয়ে বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের পরিকল্পনা রয়েছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, স্যাটেলাইটের মাধ্যমে দেশের মানুষ শিক্ষা, স্বাস্থ্য থেকে শুরু করে সব ধরনের উপকারিতা পাবে, যা মানুষের জীবনমানকে আরো উন্নত করবে। শিক্ষার দিকেও বিরাট সুযোগ সৃষ্টি হবে। স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণে নিজের ছেলে ও প্রধানমন্ত্রীর তথ্য-প্রযুক্তি উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়কে কৃতিত্ব দেন শেখ হাসিনা। বেতবুনিয়ায় বঙ্গবন্ধুর সময় উপগ্রহ ভূ-কেন্দ্র স্থাপনের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, মুজিব থেকে যাত্রা শুরু, সজীবের কাছে আমরা পৌঁছেছি। বঙ্গবন্ধু এই ভূ-উপগ্রহ কেন্দ্র দিয়ে গেছেন। আর সজীব ওয়াজেদের পরামর্শেই আমরা মহাকাশে পৌঁছেছি। কাজেই মুজিব থেকে সজীব। ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন সজীব ওয়াজেদ জয়, অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত, তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু, তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক প্রমুখ।