আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, পরিবহন খাতে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে নতুন আইন করা হচ্ছে। এ আইনে চালকদের লাইসেন্স, ফিটনেসবিহীন গাড়িসহ নানা নিয়মনীতি অন্তর্ভুক্ত থাকবে। আইনটি পাস হলে সড়কে শৃঙ্খলা ফিরবে।
তিনি বলেন, গতকালই আইনের খসড়াটি সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে। এখন ওই মন্ত্রণালয় আইনটি মন্ত্রিসভায় উত্থাপন করবে। প্রধানমন্ত্রী চান এটা তড়িৎ উপস্থাপিত হোক। সেইক্ষেত্রে আমার মনে হয় এই আইনটা যদি সংসদে পাস হয় তাহলে সব স্টেকহোল্ডার ন্যায়বিচার পাবেন।
বুধবার সচিবালয়ে নিজ দপ্তরে সাংবদিকদের প্রশ্নের জবাবে আইনমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
আইনমন্ত্রী বলেন, নানা কারণে সম্প্রতি সড়ক দুর্ঘটনা বৃদ্ধি পেয়েছে। যেসব কারণে দুর্ঘটনা বৃদ্ধি পেয়েছে সেগুলোর ব্যাপারে কিংবা দুর্ঘটনা যাতে না ঘটে সে রকম পর্যাপ্ত বিধান আইনের মধ্যে আছে কিনা এবং আইনে কোন ফাঁক-ফোঁকর আছে কিনা সেই সব পুঙ্খানুপুঙ্খরূপে দেখে সড়ক পরিবহন আইনটি প্রস্তুত করা হয়েছে। বিদেশে চালকের ভুলের কারণে যেমন পয়েন্ট কাটা যায় তেমনি প্রস্তাবিত এই আইনেও তেমনি বিধান রাখা হয়েছে। কত পয়েন্ট কাটলে কি পরিমাণ শাস্তি হবে আইনে তা বলা হয়েছে।
তিনি বলেন, যদি কোন চালকের বার পয়েন্ট কাটা যায় তা হলে সে আর কোন দিন ড্রাইভিং লাইসেন্স পাবে না। কেউ যাতে কম অপরাধে বেশি শাস্তি এবং বেশি অপরাধে কম শাস্তি না পায় সেগুলো সুনিশ্চিতভাবে আইনে সন্নিবেশিত করা হয়েছে। বিচারের তাৎক্ষণিকতা বা তড়িৎ বিচারের ব্যবস্থা এই আইনের মধ্যে করা হয়েছে।
আইনমন্ত্রী বলেন, সম্প্রতি সড়ক দুর্ঘটনায় দুই শিক্ষার্থীর মৃত্যুর দ্রুত বিচার ও অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করা হবে। যারা দোষী কেবল তাদেরই শাস্তি হওয়া উচিত। এখন কেউ যদি মনে করেন যে মানুষ মেরে তারা কম শাস্তি নিয়ে চলে যেতে পারবেন, এটা তো হয় না। আবার এটাও ঠিক একজনের ভুলের জন্য সবাইকে বা একটি সম্প্রদায়কে দায়ী করাও ঠিক না। এ সব বিষয় বিচার-বিবেচনা করে আমার মনে হয় এই আইনটা যুগপোযোগী। তিনি বলেন, দুর্ঘটনায় মৃত্যু হলে যে শাস্তির বিধান রাখা হয়েছে সেটা পর্যাপ্ত। শুধু দুই শিক্ষার্থী নিহতের ঘটনাই নয়, সব সড়ক দুর্ঘটনার বিচার তড়িৎ হওয়া উচিত। তদন্ত শেষে এই মামলা (দুই শিক্ষার্থী) আদালতে যাওয়ার পর প্রসিকিউশনকে তড়িৎ বিচারের ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বলা হবে। যারা অপরাধ করেছে তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়া হবে।
দুই শিক্ষার্থীর মৃত্যুতে আইনমন্ত্রীর শোক
দুই শিক্ষার্থীর মৃত্যুতে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন। এক শোকবার্তায় তিনি বলেন, ১৯৯১ সালে এ রকম একটি সড়ক দুর্ঘটনায় আমি আমার স্ত্রীকে হারিয়েছি। তাই কোন সড়ক দুর্ঘটনায় কেউ যদি নিহত হয় তার পরিবারের কি অবস্থা হয় সে সম্পর্কে আমার অভিজ্ঞতা আছে। সেই অভিজ্ঞতা থেকেই বলছি এ রকম ঘটনা যাতে আর না ঘটে সেজন্য যা যা উদ্যোগ গ্রহণ করা দরকার সরকার সেটা করবে।