জিয়া অরফানেজ ট্রাষ্ট মামলায় বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন অব্যাহত রয়েছে। বকশিবাজারের কারা অধিদফতরের মাঠে স্থাপিত ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৫ এ গতকাল মঙ্গলবার তৃতীয় দিনের মত যুক্তি উপস্থাপন করেন তার আইনজীবী আব্দুর রেজ্জাক খান। শুনানিতে তিনি বলেন, এটি একটি রাজনৈতিক মামলা। খালেদা জিয়াকে হয়রানি করার উদ্দেশ্যেই এই মিথ্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। কোন সাক্ষ্য-প্রমাণ দিয়ে দুদক খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ প্রমাণ করতে সক্ষম হননি। বিশেষ জজ আদালতের বিচারক ড. মো. আখতারুজ্জামান শুনানি গ্রহণ করে বুধবার পর্যন্ত তা মুলতুবি করেন। এ সময় আদালতে খালেদা জিয়া উপস্থিত ছিলেন।
শুনানিতে রেজ্জাক খান বলেন, খালেদা জিয়া এই মামলায় আনীত অভিযোগের সঙ্গে কোনভাবেই জড়িত নন। তিনি প্রধানমন্ত্রী থাকাকালে ক্ষমতার অপব্যবহার করেছেন এমন অভিযোগ উপস্থাপিত তথ্য-উপাত্তের মাধ্যমে প্রমাণ করতে পারেনি রাষ্ট্রপক্ষ। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সঙ্গে ব্যাংকের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কোন যোগসূত্র নেই। এখানে বিশ্বাস ভঙ্গের কোন ঘটনাও ঘটেনি। আর একই উদ্দেশ্যে আসামিরা পরিকল্পিতভাবে দুর্নীতি করেছে তা আদালতে প্রমাণে ব্যর্থ হয়েছে রাষ্ট্রপক্ষ। তিনি বলেন, এ মামলার বিচারের বিষয়ে প্রথমটি হলো প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরের কিছু কাগজপত্র। আর এতিমখানা তহবিলের বিষয়ে মূল ফাইল বা ছায়া ফাইল। অপরটি হলো সোনালী ব্যাংকের রমনা করপোরেট শাখায় হিসাব খোলা সংক্রান্ত নথিপত্র। কিন্তু রাষ্ট্রপক্ষ সোনালী ব্যাংকের একটি ডকুমেন্টও জমা দেয়নি।
শুনানি শেষে আদালত থেকে বেরিয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও আইনজীবী ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ সাংবাদিকদের বলেন, খালেদা জিয়া প্রধানমন্ত্রী থাকাকালে ক্ষমতার অপব্যবহার করেছেন দুদকের ৩২জন সাক্ষীর কেউই এ কথা আদালতে বলেননি। রাজনৈতিক বিবেচনায় হয়রানির উদ্দেশ্যে করা এ মামলায় ন্যায় বিচার হলে খালেদা জিয়া খালাস পাবেন বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি। এ সময় খালেদা জিয়ার পক্ষে খন্দকার মাহবুব হোসেন, এজে মোহাম্মদ আলী, জয়নুল আবেদীন, এম মাহবুবউদ্দিন খোকন, সানাউল্লাহ মিয়া, মাসুদ আহমেদ তালুকদার, এম আমিনুল ইসলাম এবং দুদকের পক্ষে মোশাররফ হোসেন কাজল উপস্থিত ছিলেন।
২০০৮ সালের ৩ জুলাই রমনা থানায় জিয়া অরফানেজ ট্রাষ্ট দুর্নীতি মামলা দায়ের করে দুদক। মামলায় খালেদা জিয়াসহ ছয়জনকে আসামি করা হয়।