অনলাইন ডেস্ক :

দুর্নীতি দমন কমিশন হটলাইনে (১০৬) পাওয়া অভিযোগ খতিয়ে দেখতে তাৎক্ষণিকভাবে অভিযান চালাচ্ছে। প্রায় প্রতিদিনই দুদকের এনফোর্সমেন্ট টিম ঢাকাসহ দেশের অন্যান্য জেলাতেও অভিযান পরিচালনা করছে। দুদকের এমন উদ্যোগে দুর্নীতিবাজদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। পাশাপাশি ভুক্তভোগীরা ওসব অভিযানের সুফলও পাচ্ছে। গত একমাসে হটলাইনে আসা অভিযোগগুলোর বিপরীতে দুদকের চালানো অভিযানে সরকারি সেবা প্রতিষ্ঠানের ঘুষ ও হয়রানিমুক্ত সেবা কার্যক্রম। এর ফলে বিআরটিএ, সিভিল এভিয়েশন থেকে রেলের বা লঞ্চের টিকিটের কালোবাজারিদের মধ্যেও দুদক আতঙ্ক তৈরি হয়েছে। ঘুষ গ্রহণ ও দুর্নীতির অভিযোগের তাৎক্ষণিক অভিযানে আতঙ্কে রয়েছে ঘুষখোররা। দুদক সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়।
সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, দুদক গত দুই মাস হটলাইনে পাওয়া অভিযোগগুলো নিয়ে অভিযানের তালিকা তৈরি করা হয়েছে। আর ওই তালিকা নিয়মিতই আপডেট করা হচ্ছে। গত ৩০ জুন কেরানীগঞ্জের কেন্দ্রীয় কারাগারে অভিযান চালানো হয়েছে। কয়েদিদের মধ্যে খাদ্য সরবরাহ এবং স্বজনদের সঙ্গে সাক্ষাৎকালে ঘুষ-দুর্নীতির অভিযোগে ওই অভিযান চালানো হয়। অভিযানে দুদক টিম কারাগারের খাদ্য প্রস্তুতকরণ, রান্না ও সরবরাহ ব্যবস্থায় অনিয়মের প্রমাণ পেয়েছে। ২৯ জুলাই হটলাইনের অভিযোগের ভিত্তিতে রাজধানীর গুলশান নিকেতনে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ অভিযান চালায় দুদক। যানবাহনের রেজিস্ট্রেশন ও ফিটনেস প্রদানে ঘুষ-লেনদেনের অভিযোগে ২৩ জুলাই দুদক টিম বিআরটিএ’র উত্তরা কার্যালয়ে আকস্মিক অভিযান চালায়। ১১ জুলাই বিআরটিএ’র ইকুরিয়া এবং ১২ জুলাই বিআরটিএ’র মিরপুর কার্যালয়েও অভিযান চালায় দুদক। তাছাড়া স্বাস্থ্য সনদ দেয়ার সময় বাধ্যতামূলক ঘুষ আদান-প্রদানের অভিযোগে গত ১৮ জুলাই ঢাকা সিভিল সার্জন অফিসেও অভিযান চালায় দুদক। জিজ্ঞাসাবাদে কর্মচারীরা ঘুষ লেনদেনের কথা স্বীকার করেন। আর হয়রানিমুক্ত যাত্রীসেবা নিশ্চিত করতে গত ৪ জুন রাজধানীর সদরঘাটে, ৩ জুন কমলাপুর স্টেশন, ২৭ জুন হযরত শাহজালাল বিমানবন্দরে দুদক অভিযান চালায়। ঢাকার বাইরেও নিয়মিত অভিযান চালাচ্ছে দুদক। হটলাইনে পাওয়া অভিযোগের ভিত্তিতে দুদক গত ১০ জুলাই নাটোরের বাগাতিপাড়া ও নীলফামারীর ডিমলার দুটি স্কুলের জায়গা দখলমুক্ত করেছে।
সূত্র জানায়, দুর্নীতি দমন কমিশন মনে করে দুর্নীতিমুক্ত দেশ গড়তে আগে দুর্নীতি প্রতিরোধ জরুরি। আর দুনীতি প্রতিরোধে দুদকের তাৎক্ষণিক অভিযান কার্যকর। তাতে অনিয়মের অভিযোগ রয়েছে এমন প্রতিষ্ঠানগুলো সতর্ক হয়। ওসব প্রতিষ্ঠানের অসৎ কর্মকর্তাদের মধ্যে আতঙ্ক তৈরি হয়। সরকারি প্রতিষ্ঠানের সেবা গ্রাহকদের কাছ থেকে হটলাইনে সব থেকে বেশি অভিযোগ আসছে। দুদক টিম অভিযান চালিয়ে তাদের এক দফা সতর্ক করাসহ প্রতিষ্ঠানগুলোর অনিয়ম-দুর্নীতির তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করে একটি ডাটাবেস তৈরি করছে। ওসব তথ্য-প্রমাণের ভিত্তিতে দুদক শিগগিরই দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।
এ প্রসঙ্গে অ্যানফোর্সমেন্ট অভিযানের সমন্বয়কারী দুদকের মহাপরিচালক (প্রশাসন) মোহাম্মাদ মুনীর চৌধুরী জানান, দুদক হটলাইন তৈরি করেছে জনগণের জন্য। হটলাইনের প্রতিটি গ্রহণযোগ্য অভিযোগ দুদক আমলে নিয়ে অভিযান চালাচ্ছে। এক অর্থে দুর্নীতি প্রতিরোধে হটলাইনের অভিযোগ নিয়ে হার্ডলাইনে থাকছে দুদক।