নাটোরে সোনালী আঁশের সুদিন ফিরছে
জেলায় সোনালী আঁশের দিন ফিরে আসতে শুরু করেছে। বিগত সময়ে পাটের উচ্চ মূল্যের কারণে কৃষকরা পাট চাষে ক্রমশ: আগ্রহী হয়ে উঠেছেন। নাটোরে বেড়েছে পাটের আবাদি জমি এবং উৎপাদনের পরিমাণ। জমিতে সবুজে ভরপুর পাট রাজ্যে চলছে পাট কাটা। অন্যদিকে জলাশয় ও এর পাড় সংলগ্ন স্থানগুলোতে পাট গাছ ভেজানো, পাটের আঁশ ছড়ানো, পাট শুকানো, পাটকাঠি সংগ্রহ- সব কর্মযজ্ঞই চলছে যুগপৎ ভাবে। সবুজ পাট গাছের রূপান্তর ঘটছে সাদা পাট আর পাটকাঠিতে। রূপালী রৌদ্রকে মেঘে ঢেকে দিয়ে প্রকৃতিতে নামছে শ্রাবণ ধারা। প্রকৃতির সাথে সহাবস্থান করে গ্রামীণ জনপদে কৃষকরা কর্মে মুখরিত হয়েছেন পাট রাজ্যে। নাটোর কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ সূত্রে জানা যায়, চলতি বছর জেলায় ২৮ হাজার ৬৪২ হেক্টর জমিতে পাট চাষ হয়েছে। এরমধ্যে সর্বাধিক পাট আবাদ হয়েছে বড়াইগ্রাম উপজেলায়-নয় হাজার ৬৬২ হেক্টর, লালপুরে ছয় হাজার ৮৬৫ হেক্টর, গুরুদাসপুরে চার হাজার ৫০ হেক্টর, নাটোর সদর উপজেলায় দুই হাজার ৫০ হেক্টর, বাগাতিপাড়ায় দুই হাজার ৮১৫ হেক্টর, নলডাঙ্গায় এক হাজার ৬৫০ হেক্টর এবং সিংড়ায় এক হাজার ৫৫০ হেক্টর। বিগত এক দশক আগে জেলায় পাটের আবাদি জমি ছিল চলতি বছরের প্রায় অর্ধেক। পাটের আবাদী জমি বিগত সময়ে ক্রমশ বেড়েছে। চলতি বছরে বিঘা প্রতি উৎপাদন নয় মণ ছাড়িয়ে যাবে বলে আশা করা হচ্ছে। বিগত বছরগুলোতে আবাদি জমির পাশাপাশি হেক্টর প্রতি পাটের গড় উৎপাদনও বেড়েছে। সিংড়া উপজেলার লাড়–য়া গ্রামের কয়েক কিলোমিটার রাস্তার দু’পাশে এবং সংলগ্ন বিল ও ডোবাতে শতাধিক নারী-পুরুষ পাট পঁচানো ও আঁশ ছড়ানোর কাজে নিয়োজিত হয়েছেন। এ কাজে মহিলাদের অংশগ্রহণ চোখে পড়ার মত। তারা মূলতঃ পানিতে না নেমেই পঁচানো পাট পাড়ে তুলে এনে আঁশ ছড়াচ্ছেন। আঁশ ছড়ানো কাজে নিয়োজিত জমেলা খাতুন জানান, এ কাজে পুরুষের মজুরি বেশি। তাদের ৩৫০ টাকা আর আমাদের ২০০ টাকা। কুলসুম বিবি বলেন, আমি পাট কাঠি নেওয়ার শর্তে আঁশ ছড়ানোর কাজ করছি। রাস্তার দু’ধারে বাঁশের আড় টানিয়ে, কালভার্টের রেলিং কিংবা গৃহস্থ্য বাড়ির চারপাশ-সর্বত্রই চলছে পাট শুকানোর কাজ। এসব এলাকা জুড়ে ঠায় দাঁড়িয়ে পাটকাঠির বোঝা সমৃদ্ধির জানান দিচ্ছে। লাড়–য়া এলাকার কৃষক আনছার আলী বরাবরের মত এবারো তার তিন বিঘা জমিতে পাট চাষ করেছেন। লাড়–য়া বিলে পাট ছড়ানো শ্রমিকদের কাজ তদারককারী আনছার আলী বলেন, খরা কাটিয়ে গত সপ্তাহে বেশ বৃষ্টি হয়েছে। এ শ্রাবনের বৃষ্টিতে পাট পঁচানোর সুবিধা হয়েছে। আশা করি বিঘা প্রতি দশ মণ করে ফলন পাবো। নাটোর সদর উপজেলার রাজাপুর ব্লকের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মোঃ বদিউজ্জামান বলেন, এবার এলাকায় আশানুরূপ পাট চাষ হয়েছে। গড় উৎপাদন বিঘা প্রতি নয় মণ। এ ব্লকের জাঠিয়ান এলাকার কৃষক শামসুল আলম এবার সাত বিঘা জমিতে পাট চাষ করেছেন। তিনি জানান, পাট কাটা শুরু হয়েছে। আশাকরি বিঘায় অন্তত নয় মণ পাট পাওয়া যাবে। সিংড়া উপজেলার বড়শাঁঐল গ্রামের কৃষক সাইফুল ইসলাম বলেন, জমিতে গম বা ডাল উঠে যাওয়ার পর আমন মৌসুমের আগে পাট চাষ করা হলে জমি অনাবাদি থাকে না। চৈত্র মাসের মধ্যে পাট বীজ বোনা হলে আগাম পাট কেটে খুব সহজেই আমন মৌসুম ধরা যায়। নাটোরের আদর্শ কৃষক হাসান আলী বলেন, বিগত কয়েক বছরে কৃষকদের মাঝে পাট চাষে বেশ ভাল আগ্রহ লক্ষ্য করা যাচ্ছে। কারণ হিসেবে তিনি বলেন, বাজারের সম্প্রসারণ ঘটছে। এর ফলে দরও ভাল পাওয়া যাচ্ছে। নাটোরের প্রসিদ্ধ পাটের হাট গুরুদাসপুরের নাজিরপুর, নাটোর সদরের তেবাড়িয়া এবং সিংড়ার হাতিয়ান্দহ হাট ঘুরে দেখা যায়, আগাম ওঠা পাট হাটে কেনাবেচা শুরু হয়েছে। হাতিয়ান্দহ হাটে পাট বিক্রি করতে আসা বাছেদ আলী বলেন, হাটে দুই হাজার টাকা মণ দরে জমির পাট বিক্রি করলাম। দীর্ঘদিন ধরে পাটের ব্যবসায়ী আজিজুল ইসলাম মেম্বর জানান, আশাকরি পাটের দর ব্যবসায়ী ও কৃষক-উভয়ের জন্যই ভাল হবে। বর্তমানে পাটের দর আড়াই হাজার টাকা থেকে তিন হাজার টাকা পর্যন্ত। নাটোর সদর উপজেলা কৃষি অফিসার নীলিমা জাহান জানান, বর্তমানে পাটের গড় উৎপাদন বিঘা প্রতি নয় মণ। তবে খরা কাটিয়ে বৃষ্টি হওয়াতে গড় উৎপাদন বৃদ্ধি পাবে। কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ নাটোর জেলা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক মোঃ আব্দুল ওয়াদুদ বাসস’কে বলেন, গত সপ্তাহের বৃষ্টি পাট জাগ দেওয়ার জন্যে সহায়ক হয়েছে। পরিবেশ বান্ধব বলেই পাটের বহুমুখী ব্যবহার হচ্ছে। এর ফলে দেশে ও বিদেশে পাটের চাহিদা বাড়ছে। বাড়তি মূল্য পাওয়ার কারণে কৃষকরা লাভবান হচ্ছেন, পাট চাষে আগ্রহী হয়ে উঠছেন। এক্ষেত্রে প্রশিক্ষণ ও প্রযুক্তি জ্ঞানে কৃষকদের এগিয়ে নিতে কৃষি বিভাগ সবসময় কৃষকদের পাশে থাকছে।
|
জেলায় সোনালী আঁশের দিন ফিরে আসতে শুরু করেছে। বিগত সময়ে পাটের উচ্চ মূল্যের কারণে কৃষকরা পাট চাষে ক্রমশ: আগ্রহী হয়ে উঠেছেন। নাটোরে বেড়েছে পাটের আবাদি জমি এবং উৎপাদনের পরিমাণ। জমিতে সবুজে ভরপুর পাট রাজ্যে চলছে পাট কাটা। অন্যদিকে জলাশয় ও এর পাড় সংলগ্ন স্থানগুলোতে পাট গাছ ভেজানো, পাটের আঁশ ছড়ানো, পাট শুকানো, পাটকাঠি সংগ্রহ- সব কর্মযজ্ঞই চলছে যুগপৎ ভাবে। সবুজ পাট গাছের রূপান্তর ঘটছে সাদা পাট আর পাটকাঠিতে। রূপালী রৌদ্রকে মেঘে ঢেকে দিয়ে প্রকৃতিতে নামছে শ্রাবণ ধারা। প্রকৃতির সাথে সহাবস্থান করে গ্রামীণ জনপদে কৃষকরা কর্মে মুখরিত হয়েছেন পাট রাজ্যে। নাটোর কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ সূত্রে জানা যায়, চলতি বছর জেলায় ২৮ হাজার ৬৪২ হেক্টর জমিতে পাট চাষ হয়েছে। এরমধ্যে সর্বাধিক পাট আবাদ হয়েছে বড়াইগ্রাম উপজেলায়-নয় হাজার ৬৬২ হেক্টর, লালপুরে ছয় হাজার ৮৬৫ হেক্টর, গুরুদাসপুরে চার হাজার ৫০ হেক্টর, নাটোর সদর উপজেলায় দুই হাজার ৫০ হেক্টর, বাগাতিপাড়ায় দুই হাজার ৮১৫ হেক্টর, নলডাঙ্গায় এক হাজার ৬৫০ হেক্টর এবং সিংড়ায় এক হাজার ৫৫০ হেক্টর। বিগত এক দশক আগে জেলায় পাটের আবাদি জমি ছিল চলতি বছরের প্রায় অর্ধেক। পাটের আবাদী জমি বিগত সময়ে ক্রমশ বেড়েছে। চলতি বছরে বিঘা প্রতি উৎপাদন নয় মণ ছাড়িয়ে যাবে বলে আশা করা হচ্ছে। বিগত বছরগুলোতে আবাদি জমির পাশাপাশি হেক্টর প্রতি পাটের গড় উৎপাদনও বেড়েছে। সিংড়া উপজেলার লাড়–য়া গ্রামের কয়েক কিলোমিটার রাস্তার দু’পাশে এবং সংলগ্ন বিল ও ডোবাতে শতাধিক নারী-পুরুষ পাট পঁচানো ও আঁশ ছড়ানোর কাজে নিয়োজিত হয়েছেন। এ কাজে মহিলাদের অংশগ্রহণ চোখে পড়ার মত। তারা মূলতঃ পানিতে না নেমেই পঁচানো পাট পাড়ে তুলে এনে আঁশ ছড়াচ্ছেন। আঁশ ছড়ানো কাজে নিয়োজিত জমেলা খাতুন জানান, এ কাজে পুরুষের মজুরি বেশি। তাদের ৩৫০ টাকা আর আমাদের ২০০ টাকা। কুলসুম বিবি বলেন, আমি পাট কাঠি নেওয়ার শর্তে আঁশ ছড়ানোর কাজ করছি। রাস্তার দু’ধারে বাঁশের আড় টানিয়ে, কালভার্টের রেলিং কিংবা গৃহস্থ্য বাড়ির চারপাশ-সর্বত্রই চলছে পাট শুকানোর কাজ। এসব এলাকা জুড়ে ঠায় দাঁড়িয়ে পাটকাঠির বোঝা সমৃদ্ধির জানান দিচ্ছে। লাড়–য়া এলাকার কৃষক আনছার আলী বরাবরের মত এবারো তার তিন বিঘা জমিতে পাট চাষ করেছেন। লাড়–য়া বিলে পাট ছড়ানো শ্রমিকদের কাজ তদারককারী আনছার আলী বলেন, খরা কাটিয়ে গত সপ্তাহে বেশ বৃষ্টি হয়েছে। এ শ্রাবনের বৃষ্টিতে পাট পঁচানোর সুবিধা হয়েছে। আশা করি বিঘা প্রতি দশ মণ করে ফলন পাবো। নাটোর সদর উপজেলার রাজাপুর ব্লকের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মোঃ বদিউজ্জামান বলেন, এবার এলাকায় আশানুরূপ পাট চাষ হয়েছে। গড় উৎপাদন বিঘা প্রতি নয় মণ। এ ব্লকের জাঠিয়ান এলাকার কৃষক শামসুল আলম এবার সাত বিঘা জমিতে পাট চাষ করেছেন। তিনি জানান, পাট কাটা শুরু হয়েছে। আশাকরি বিঘায় অন্তত নয় মণ পাট পাওয়া যাবে। সিংড়া উপজেলার বড়শাঁঐল গ্রামের কৃষক সাইফুল ইসলাম বলেন, জমিতে গম বা ডাল উঠে যাওয়ার পর আমন মৌসুমের আগে পাট চাষ করা হলে জমি অনাবাদি থাকে না। চৈত্র মাসের মধ্যে পাট বীজ বোনা হলে আগাম পাট কেটে খুব সহজেই আমন মৌসুম ধরা যায়। নাটোরের আদর্শ কৃষক হাসান আলী বলেন, বিগত কয়েক বছরে কৃষকদের মাঝে পাট চাষে বেশ ভাল আগ্রহ লক্ষ্য করা যাচ্ছে। কারণ হিসেবে তিনি বলেন, বাজারের সম্প্রসারণ ঘটছে। এর ফলে দরও ভাল পাওয়া যাচ্ছে। নাটোরের প্রসিদ্ধ পাটের হাট গুরুদাসপুরের নাজিরপুর, নাটোর সদরের তেবাড়িয়া এবং সিংড়ার হাতিয়ান্দহ হাট ঘুরে দেখা যায়, আগাম ওঠা পাট হাটে কেনাবেচা শুরু হয়েছে। হাতিয়ান্দহ হাটে পাট বিক্রি করতে আসা বাছেদ আলী বলেন, হাটে দুই হাজার টাকা মণ দরে জমির পাট বিক্রি করলাম। দীর্ঘদিন ধরে পাটের ব্যবসায়ী আজিজুল ইসলাম মেম্বর জানান, আশাকরি পাটের দর ব্যবসায়ী ও কৃষক-উভয়ের জন্যই ভাল হবে। বর্তমানে পাটের দর আড়াই হাজার টাকা থেকে তিন হাজার টাকা পর্যন্ত। নাটোর সদর উপজেলা কৃষি অফিসার নীলিমা জাহান জানান, বর্তমানে পাটের গড় উৎপাদন বিঘা প্রতি নয় মণ। তবে খরা কাটিয়ে বৃষ্টি হওয়াতে গড় উৎপাদন বৃদ্ধি পাবে। কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ নাটোর জেলা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক মোঃ আব্দুল ওয়াদুদ বাসস’কে বলেন, গত সপ্তাহের বৃষ্টি পাট জাগ দেওয়ার জন্যে সহায়ক হয়েছে। পরিবেশ বান্ধব বলেই পাটের বহুমুখী ব্যবহার হচ্ছে। এর ফলে দেশে ও বিদেশে পাটের চাহিদা বাড়ছে। বাড়তি মূল্য পাওয়ার কারণে কৃষকরা লাভবান হচ্ছেন, পাট চাষে আগ্রহী হয়ে উঠছেন। এক্ষেত্রে প্রশিক্ষণ ও প্রযুক্তি জ্ঞানে কৃষকদের এগিয়ে নিতে কৃষি বিভাগ সবসময় কৃষকদের পাশে থাকছে।
|
|
|
|
জুলাই মাসে মাসিক তাপমাত্রার রেকর্ডের ১৩ মাসের ধারাবাহিকতা শেষ হওয়া সত্ত্বেও ‘ক্রমবর্ধমানরহারে তাপমাত্রা বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় সম্ভবত’ ২০২৪ হবে রেকর্ডের সবচেয়ে উষ্ণতম বছর। ইউরোপীয় ইউনিয়নের জলবায়ু মনিটর বৃহস্পতিবার এ কথা বলেছে। কোপার্নিকাস ক্লাইমেট চেঞ্জ সার্ভিস (সি-৩এস) বলেছে, গত মাসটি রেকর্ড বইয়ে ১৯৪০ সালের পর দ্বিতীয় উষ্ণতম মাস ছিল। যা ২০২৩ সালের জুলাইয়ের তুলনায় সামান্য শীতল। জুন ২০২৩ এবং জুন ২০২৪ এর মধ্যে প্রতিটি মাস বছরের সময়ের জন্য নিজস্ব তাপমাত্রার রেকর্ড গ্রহণ করেছে। সি-৩এস এর ডেপুটি ডিরেক্টর সামান্থা বার্গেস বলেছেন, ‘রেকর্ড-ব্রেকিং মাসের ধারা শেষ হয়েছে। কিন্তু শুধুমাত্র একটি ঝাঁকুনি রয়ে গেছে।’ সি-৩এস-এর মাসিক বুলেটিন অনুসারে, গত মাসে বিশ্বব্যাপী গড় তাপমাত্রা ছিল ১৬ দশমিক ৯১ ডিগ্রি সেলসিয়াস, জুলাই ২০২৩-এর তুলনায় মাত্র ০.০৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস কম। বার্গেস বলেন, ‘সামগ্রিক প্রেক্ষাপটের পরিবর্তন হয়নি। এতে আমাদের জলবায়ু উষ্ণ হতে থাকে।’ তিনি বলেন, ‘জলবায়ু পরিবর্তনের বিধ্বংসী প্রভাব ২০২৩ সালের আগে শুরু হয়েছিল এবং বিশ্বব্যাপী গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমন নেট শূন্যে না পৌঁছানো পর্যন্ত চলতে থাকবে।’ ১৯৯১ থেকে ২০২০ সালের গড় থেকে জানুয়ারি-জুলাই পর্যন্ত বৈশ্বিক তাপমাত্রা ০.৭০ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেশি ছিল। সি-৩এস বলেছে, এই অসঙ্গতিটি এই বছরের বাকি অংশে উল্লেখযোগ্যভাবে কমতে হবে যাতে ২০২৪ ২০২৩ এর চেয়ে বেশি গরম না হয়। ‘এটি ক্রমবর্ধমান সম্ভাবনা তৈরি করে যে ২০২৪ রেকর্ডে সবচেয়ে উষ্ণ বছর হতে চলেছে।’
|
|
|
|
জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ বৃহস্পতিবার আবারও ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে যুদ্ধ বন্ধের একটি প্রস্তাব পাস করার চেষ্টা করবে। ওয়াশিংটনের ভেটোর কারণে প্রস্তাব পাসের আগের প্রচেষ্টা ব্যর্থ হওয়ার পর জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ বৃহস্পতিবার আবারও একটি প্রস্তাব পাস করার চেষ্টায় যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থনের অপেক্ষায় রয়েছে। ম্যানহাটনে জাতিসংঘের সদর দফতরে কূটনৈতিক টানাপোড়েনের কারণে গাজার অবনতিশীল পরিস্থিতি এবং ক্রমবর্ধমান মৃতের সংখ্যার পটভূমিতে আনা যুদ্ধবিরতি প্রস্তাবে নিরাপত্তা পরিষদের ভোটাভুটি বুধবার আবার স্থগিত করা হয়। এএফপি’র হাতে আসা খসড়া সংস্করণ অনুসারে, সংযুক্ত আরব আমিরাত এই সংঘাতের অবসানে একটি খসড়া প্রস্তাবের পৃষ্ঠপোষকতা করছে। নিরাপদ আপস সমাধানে পৌঁছার জন্য যা ইতোমধ্যেই আরো নমনীয় করা হয়েছে। এতে ‘নিরাপদ এবং নিরবচ্ছিন্ন মানবিক সহায়তা পৌঁছানোর অনুমতি দেওয়ার জন্য জরুরি যুদ্ধ স্থগিত করার এবং যুদ্ধ বন্ধের দিকে টেকসই পদক্ষেপের আহ্বান জানানো হয়েছে।’ সংযুক্ত আরব আমিরাতের রাষ্ট্রদূত লানা জাকি নুসিবেহ বলেছেন,‘যুদ্ধ বন্ধে সরাসরি কার্যকর প্রভাব পড়ে এমন একটি সিদ্ধান্তে পৌঁছানোর জন্য দেশগুলোর কূটনীতিকরা সর্বোচ্চ স্তরে চেষ্টা চালাচ্ছেন।’ ১৫-সদস্যের কাউন্সিলের সদস্যরা প্রস্তাবের সাধারণ ভিত্তি খুঁজে পেতে কয়েকদিন ধরে লড়াই করছেন। এই ভোট সোমবার থেকে বেশ কয়েকবার পিছিয়ে দেওয়া হয়েছে। ইসরায়েলের মিত্র নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী সদস্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ভেটো দিয়ে ‘যুদ্ধবিরতি’ শব্দটির বিরোধিতা করেছে এবং ওয়াশিংটন যুদ্ধ শুরুর পর থেকে ইসরায়েল বিরোধী প্রস্তাব গুলোকে ব্যর্থ করতে তাদের ভেটো ক্ষমতা ব্যবহার করেছে। একটি কূটনৈতিক সূত্র জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের অনুরোধে সর্বশেষ বিলম্ব হয়েছে। ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বুধবার বলেছেন, হামাসকে ‘নির্মূল’ না করা পর্যন্ত গাজায় কোনো যুদ্ধবিরতি হবে না। ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইসিস গ্রুপের বিশ্লেষক রিচার্ড গোয়ান বলেন, ‘নিউইয়র্কের (জাতিসংঘ সদর দপ্তরে) সবাই এখনও হোয়াইট হাউসের জন্য অপেক্ষা করছে। একটি দৃঢ় ধারণা রয়েছে যে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনই এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন।’ গোয়ান বলেছেন, জাতিসংঘে ওয়াশিংটনের রাষ্ট্রদূত লিন্ডা থমাস-গ্রিনফিল্ড ‘চুক্তির জন্য মার্কিন ব্যবস্থার মধ্যে কঠোর অবস্থান নিয়েছেন।’ ‘তবে ইসরায়েলিরা যদি প্রস্তাবের বিরোধিতা করতে থাকে, বাইডেন এখনও এটিকে ব্লক করার সিদ্ধান্ত নিতে পারেন।’ যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন নিরাপত্তা পরিষদে ওয়াশিংটনের পরবর্তী পদক্ষেপের বিষয়ে মতামত প্রকাশ করবেন না। তিনি বুধবার সাংবাদিকদের বলেছেন,যুক্তরাষ্ট্র ‘গঠনমূলকভাবে’ কিছু সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করছে। ওয়াশিংটন প্রস্তাবটিতে মানবিক সহায়তা সরবরাহ প্রচেষ্টা অগ্রসর করতে চায়, তবে যুদ্ধবিরতি নয়। জাতিসংঘ মহাসচিবের মুখপাত্র স্টিফেন ডুজারিক বলেছেন, মহাসচিবের নিজের অবস্থান অপরিবর্তিত। তিনি একটি মানবিক যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানাচ্ছেন।’
|
|
|
|
দুই মাস ধরে চলা যুদ্ধ থামাতে যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানিয়ে জাতিসংঘ আনীত একটি প্রস্তাবে শুক্রবার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ভেটো প্রদান করায় পাশ না হওয়ায় ইসরাইল শনিবার গাজায় হামাসের বিরুদ্ধে হামলা জোরদার করেছে। হামাস ও ফিলিস্তিন কর্তৃপক্ষ প্রস্তাবটিতে মার্কিন ভেটোর নিন্দা জানায়। হামাস পরিচালিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, গাজায় সর্বশেষ নিহতের সংখ্যা ১৭,৪৮৭ জন এবং নিহতদের বেশির ভাগই নারী ও শিশু। শনিবার মন্ত্রণালয় জানায়, দক্ষিণাঞ্চলীয় নগরী খান ইউনিসে ইসরায়েলি হামলায় ছয়জন এবং রাফাহতে পৃথক হামলাযয় পাঁচজন নিহত হয়েছে। খবর এএফপি’র। ইসরায়েলি পরিসংখ্যান অনুসারে, হামাস গত ৭ অক্টোবর নজিরবিহীন হামলায় গাজা থেকে ইরাইলের সীমান্ত ভেঙ্গে ভেতরে ঢুকে প্রায় ১,২০০ জনকে হত্যা করে ও ১৩৮ জনকে জিম্মি করে। এই হামলার প্রতিশোধ নিতে ইসরাইলের পল্টা হামলায় গাজার বিস্তীর্ণ এলাকা ধ্বংসস্তুপে পরিণত হয়েছে। জাতিসংঘ বলেছে গাজার জনসংখ্যার প্রায় ৮০ শতাংশ বাস্তুচ্যুত হয়েছে এবং সেখানে খাদ্য, জ্বালানি, পানি ও ওষুধের মারাত্মক অভাব বিরাজ করছে। শুক্রবার জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানানো একটি প্রস্তাব সম্পর্কে মার্কিন রাষ্ট্রদূত রবার্ট উড রেজোলিউশনটি ‘বাস্তবতা থেকে বিচ্ছিন্ন’ এবং এটি এগোতে পারবে না বলে নাকোচ করেন। ইসরায়েলের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এলি কোহেন বলেন, ‘যুদ্ধবিরতি যুদ্ধাপরাধ ও মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধী হামাস সন্ত্রাসী সংগঠনের পতন রোধ করবে এবং গাজা উপত্যকায় শাসন চালিয়ে যেতে সক্ষম করবে।’ হামাস শনিবার যুদ্ধ বিরতির প্রস্তাব মার্কিন যুক্তরাষ্টে প্রত্যাখ্যানকে তাদের জনগণকে হত্যা এবং আরও গণহত্যা ও জাতিগত নির্মূলে দখলদারিত্বের সরাসরি অংশ্রগ্রহণ বলে নিন্দা করেছে। ফিলিস্তিনের প্রধানমন্ত্রী মোহাম্মাদ শাতায়েহ বলেছেন, এটি অপমানজনক এবং দখলদার রাষ্ট্রকে গণহত্যা, ধ্বংস ও বাস্তুচ্যুত করতে দেওয়া আরেকটি সুযোগ করে দেওয়া।
|
|
|
|
ইসরায়েলের সেনাবাহিনী বৃহস্পতিবার বলেছে, তাদের বাহিনী হামাস পরিচালিত এবং ঘনবসতিপূর্ণ ফিলিস্তিনি ভূখন্ডের গাজা শহর ঘিরে রেখেছে এবং তারা হামাসের বিরুদ্ধে হামলা চালাচ্ছে। হামাসের সামরিক শাখা ‘ইজ্জেদিন আল-কাসাম ব্রিগেড’ ইসরায়েলকে সতর্ক করেছে যে, তাদের সৈন্যরা ‘কালো ব্যাগে’ বাড়ি ফিরে যাবে। মুখপাত্র আবু ওবেদা বলেছেন, ‘গাজা ইসরায়েলের জন্য ইতিহাসের অভিশাপ হয়ে থাকবে।’ কয়েকদিন ধরে স্থল অভিযান চালানোর পর সেনারা গাজা শহরকে পুরোপুরি ঘিরে ফেলায় ইসরায়েলি সামরিক মুখপাত্র ড্যানিয়েল হাগারির ঘোষণার পর হামাসের এই সতর্কবার্তা এলো। হাগারি সাংবাদিকদের বলেন, ‘ইসরায়েলি সৈন্যরা হামাস সংগঠনের কেন্দ্রস্থল গাজা শহর ঘেরাও করে রেখেছে।’ তিনি বলেন, ‘যুদ্ধবিরতির ধারণাটি বর্তমানে টেবিলে নেই।’ সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ার ক্রমবর্ধমান আশঙ্কার মধ্যে, ইসরায়েল এবং লেবাননে হিজবুল্লাহ যোদ্ধারা উত্তর ইসরায়েলের একটি শহরে রকেট হামলার পর গুলি বিনিময় করেছে। হোয়াইট হাউস বলেছে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এই সংঘাতে মানবিক বিরতির আহ্বান জানাচ্ছেন যা একটি ‘সাধারণ যুদ্ধবিরতি’ থেকে খুব কম সময়ে ‘অস্থায়ী, স্থানীয়ভাবে’ হামলা বন্ধ করবে। মধ্যপ্রাচ্যে সফরে রওনা হয়ে বাইডেনের প্রশাসনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন বলেছেন, ইসরায়েল-হামাস যুদ্ধে ‘আমরা যুদ্ধের যে কোনও সম্প্রসারণ রোধ করতে বদ্ধপরিকর’। তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘গাজায় পুরুষ, নারী ও শিশুদের ক্ষতি কমাতে আমরা দৃঢ় পদক্ষেপ নিয়ে কথা বলবো এবং নেওয়া উচিত।’ আরও শত শত বিদেশী এবং দ্বৈত নাগরিক বৃহস্পতিবার যুদ্ধ-বিধ্বস্ত গাজা থেকে পালিয়ে মিশরে প্রবশে করেছে। ইসরায়েলের বাহিনী অবরুদ্ধ অঞ্চলে বোমাবর্ষণ এবং স্থল যুদ্ধ করেছে যেখানে হাজার হাজার মানুষ মারা গেছে। রাফাহ সীমান্ত ক্রসিংয়ের একটি সূত্র এএফপি’কে জানিয়েছে, এটি শুক্রবার আবার খুলবে। গাজা উপত্যকা থেকে আরও বিদেশী নাগরিক এবং আহত ফিলিস্তিনিরা মিশরে প্রবেশ করবে বলে আশা করা হচ্ছে। মিশর বলেছে, তারা অবশেষে রাফাহ দিয়ে ৭ হাজার বিদেশীকে সরিয়ে নিতে সহায়তা করেছে। কায়রোর স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ২১ জন আহত ফিলিস্তিনি এবং ‘৭২ শিশুসহ ৩৪৪ বিদেশী নাগরিক’ দ্বিতীয় দিনে রাফাহ ক্রসিং অতিক্রম করেছে। ভ্রমণের জন্য অনুমোদিত ব্যক্তিদের তালিকায় শতাধিক মার্কিন নাগরিক এবং ৫০ জন বেলজিয়ানসহ বিভিন্ন ইউরোপীয়, আরব, এশিয়ান এবং আফ্রিকান দেশগুলোর অল্প সংখ্যক নাগরিক রয়েছেন। মার্কিন পাসপোর্ট ধারী সালমা সাথ (১৪) সীমান্ত অতিক্রম করার সময় বলেন, সেখানে ‘কোন খাবার ছিল না, পানি ছিল না, গ্যাস ছিল না, কোথাও আশ্রয় নেওয়ার জায়গা ছিল না।’ ‘মানুষ ঘুমানোর জন্য হাসপাতালে যাচ্ছিল, সেখানে অনেকে শহীদ হয়, ইন্টারনেট নেই, যোগাযোগ নেই এবং বিদ্যুৎ নেই। আমাদের বাড়িতে বোমা হামলা হয়েছে, তাই আমরা এখানে রাফাতে এসেছি।’ ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামাসের হামলার প্রতিশোধ নিতে হিং¯্র ইসরায়েলি বোমাবর্ষণে গাজায় আটকে পড়া ২৪ লাখ লোকের একটি ক্ষুদ্র অনুপাত গাজা থেকে সরিয়ে নেয়া হচ্ছে। লেবাননের হিজবুল্লাহ বলেছে, তারা ইসরায়েল-হামাস যুদ্ধের বিষয়ে তার নেতা হাসান নাসরুল্লাহর বক্তৃতার আগে বৃহস্পতিবার সীমান্তে ১৯টি ইসরায়েলি অবস্থানে একযোগে আক্রমণ করেছে। ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী বলেছে, ‘এর পরপরই যুদ্ধবিমান এবং হেলিকপ্টারগুলো লেবাননের ভূখন্ড থেকে গোলাগুলির জবাবে হিজবুল্লাহ লক্ষ্যবস্তুতে আক্রমণ করেছে, একইসাথে কামান ও ট্যাঙ্কের সাহায্যে হামলা করেছে’। লেবাননের সরকারি ন্যাশনাল নিউজ এজেন্সি জানিয়েছে, এতে চারজন নিহত এবং কয়েকজন আহত হয়েছে এবং হিজবুল্লাহ তাদের আরও এক যোদ্ধার নিহত হওয়ার ঘোষণা দিয়েছে। এএফপি’র তথ্য অনুযায়ী, ইসরায়েল-হামাস যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে লেবাননে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৭১ জন হয়েছে। উত্তর গাজায়, ইসরায়েলি সৈন্যরা হামাসের সাথে যুদ্ধ করার সাথে সাথে রাতারাতি আবার স্থল যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ে। ইসরায়েলি সেনাপ্রধান লেফটেন্যান্ট জেনারেল হারজি হালেভি বলেছেন, সৈন্যরা গাজার অভ্যন্তরে রয়েছে। গাজা শহর অবরোধ করছে এবং হামাস নিয়ন্ত্রিত এলাকায় ‘অনুপ্রবেশ করছে’। ইসরায়েলি সেনাবাহিনী হামলার সময় হামাসের হাতে বন্দী বেসামরিক এবং সৈন্য উভয়ই প্রায় ২৪০ জিম্মিকে মুক্ত করতে চাইছে। গত ৭ অক্টোবরের হামলায় এবং পরে ইসরায়েলি আক্রমণের মধ্যে হামাসের হামলায় ইতোমধ্যেই প্রায় ৩৩২ ইসরায়েলি সৈন্য মারা গেছে। এখন ভয়ঙ্কর শহুরে যুদ্ধ গাজার অভ্যন্তরে আরও গভীরে রয়েছে, যেখানে হামাস শ’ শ’ কিলোমিটার (মাইল) বিস্তৃত একটি টানেল নেটওয়ার্ক থেকে লড়াই করছে। ইসরায়েলের হামলার বিশ্বব্যাপী উদ্বেগ তীব্রভাবে বেড়েছে, যেখানে সেনাবাহিনী বলেছে, তারা এখন পর্যন্ত ১২ হাজারেরও বেশি স্থাপনায় আঘাত হেনেছে। হামাস পরিচালিত গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বলছে, ইসরায়েলি হামলায় ৯ হাজারের বেশি মানুষ মারা গেছে, যাদের বেশিরভাগই নারী ও শিশু। গাজার হামাস-শাসিত সরকার বলেছে, জাবালিয়ায় ইসরায়েলি হামলায় দুই দিনের মধ্যে ১৯৫ জন নিহত হয়েছে। আরও শতাধিক নিখোঁজ ও আহত হয়েছে। বৃহস্পতিবার গাজার বুরেজ শরণার্থী শিবির এবং জাবালিয়ায় জাতিসংঘ পরিচালিত স্কুলের কাছে এক এলাকাতেও বড় ধরনের হামলা হয়েছে। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে সেখানে ২৭ জন মারা গেছে। গাজা শহরের আল-কুদস হাসপাতালের বাইরে ইসরায়েলি হামলা থেকে বাঁচতে আশ্রয় নেওয়া বাস্তুচ্যুত বাসিন্দারা এএফপি’কে বলেছেন, বেসামরিক লোকরা আর বেশিদিন বাঁধা সহ্য করবে না। ৫০ বছর বয়সী হিয়াম শামলাখ বলেছেন, ‘এটি কোন জীবন নয়। আমাদের বাচ্চাদের জন্য একটি নিরাপদ জায়গা দরকার’। ‘সবাই আতঙ্কিত, শিশু, মহিলা এবং বৃদ্ধ আমরা সবাই আতঙ্কিত।’ আরেক গাজান, ৩০ বছর বয়সী মাহমুদ আবু জারাদ বলেছেন, বেসামরিক নাগরিকরা আরও এক সপ্তাহের হামলা সহ্য করতে পারবে না। ‘আমরা একটি যুদ্ধবিরতির দাবি করছি। এটি সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।’
|
|
|
|
হামাস পরিচালিত গাজা উপত্যকার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ফিলিস্তিনি ভূখন্ডের একটি শরণার্থী শিবিরে ইসরায়েলি বোমাবর্ষণে মঙ্গলবার কমপক্ষে ৫০ জন নিহত হয়েছে। ইসরায়েলি বাহিনী এ হামলার ঘটনা নিশ্চিত করে বলেছে, এক জঙ্গি কমান্ডারকে লক্ষ্য করে তারা এ হামলা চালিয়েছে। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে বলেছে, ‘উত্তর গাজা উপত্যকার জাবালিয়া শিবিরে একটি বিশাল এলাকা লক্ষ্য করে ইসরায়েলি হামলায় ৫০ জনেরও বেশি শহীদ এবং প্রায় ১৫০ জন আহত এবং ধ্বংসস্তুপের নিচে অনেক মানুষ আটকা পড়ে আছে।’ ঘটনাস্থল থেকে এএফপি’র ভিডিও ফুটেজে দেখা গেছে, ঘনবসতিপূর্ণ ক্যাম্পের বেশ কয়েকটি বাড়িতে হামলার পর ধ্বংসস্তুপ থেকে অন্তত ৪৭টি মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। কয়েক ডজন দর্শককে দু’টি বিস্তীর্ণ গর্তের কিনারায় দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়। লোকরা তখন জীবিতদের উদ্ধার ও অনুসন্ধান কাজ করছিল। কয়েক ঘন্টা পরে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী বলেছে, তারা জাবালিয়া ক্যাম্পকে লক্ষ্য করে হামলা চালিয়েছে। হামাসের প্রধান কমান্ডার ইব্রাহিম বিয়ারিকে হত্যা করেছে। ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী বলেছে, ‘এই হামলায় এলাকায় হামাসের কমান্ড এবং নিয়ন্ত্রণকে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে। সেই সাথে গাজা উপত্যকা জুড়ে পরিচালিত আইডিএফ সৈন্যদের বিরুদ্ধে সামরিক কার্যকলাপ পরিচালনা করার ক্ষমতা খর্ব হয়েছে। আইডিএফ বলেছে, ‘হামলায় হামাসের ভূগর্ভস্থ অবকাঠামোও ধসে পড়েছে।’ জাবালিয়ার বাসিন্দা ৪১ বছর বয়সী রাগেব আকল এই হামলাকে ‘একটি ভূমিকম্প’ বলে বর্ণনা করেছেন যা পুরো শরণার্থী শিবিরকে কাঁপিয়ে দিয়েছিল। আকল এএফপি’কে বলেন, ‘আমি গিয়ে ধ্বংসলীলা দেখেছি। ধ্বংসস্তুপের নিচে চাপা পড়ে থাকা বাড়িঘর এবং শরীরের অঙ্গপ্রত্যঙ্গ এবং বিপুল সংখ্যক শহীদ ও আহত দেখেছি।’ তিনি বলেন, লোকেরা এখনও ‘শিশু, মহিলা এবং বয়স্কদের দেহাবশেষ পরিবহন করছে।’ গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বলেছে, জাবালিয়ায় হামলার আগে পর্যন্ত ইসরায়েলি হামলায় গাজায় ৮,৫২৫ জন নিহত হয়েছে।
|
|
|
|
ইসরায়েলের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করেছে দক্ষিণ আমেরিকার দেশ বলিভিয়া। ল্যাটিন আমেরিকার অন্য দুটি দেশ ফিলিস্তিনের গাজায় ইসরায়েলের নির্বিচার হামলার কারণে তেলআবিব থেকে তাদের দূতদের প্রত্যাহার করছে। এক সংবাদ সম্মেলনে মঙ্গলবার বলিভিয়ার উপ পররাষ্ট্রমন্ত্রী ফ্রেডি মামানি ইসরায়েলের সমালোচনা করে সাংবাদিকদের বলেন, ইসরাইল গাজায় আক্রমণাত্মক ও অসামঞ্জস্যপূর্ণ আচরণ করছে। গাজায় মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ করছে ইসরাইল। এটা গ্রহণযোগ্য হতে পারে না। মূলত গাজার মানুষের ওপর ইসরাইলের এ বর্বরোচিত আচরণের প্রতিবাদ হিসেবে দেশটির সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করেছে বলিভিয়া। লাতিন আমেরিকার প্রথম দেশ হিসেবে বলিভিয়া এ উদ্যোগ নিয়েছে। ২০১৯ সালে দেশ দুটির কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপিত হয়েছিল। এর আগেও বলিভিয়া গাজায় ইসরাইলী হামলার প্রতিবাদে কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করেছিল। একইসঙ্গে বলিভিয়া সরকার গাজায় অবিলম্বে যুদ্ধবিরতি কার্যকর করার আহ্বান জানিয়েছে। সেই সঙ্গে গাজাবাসীর জন্য সহায়তা পাঠানোরও ঘোষণা দিয়েছে দেশটি। এদিকে কলম্বিয়া ও চিলি মঙ্গলবার হামাসের ওপর ইসরাইলী হামলার তীব্র সমালোচনা করেছে। একইসঙ্গে দেশ দুটি ইসরাইল থেকে তাদের দূতদের ফিরিয়ে আনারও ঘোষণা দিয়েছে। উল্লেখ্য, ফিলিস্তিনের সংগঠন হামাস গত ৭ অক্টোবর ইসরাইলে হামলা চালায়। এতে ১ হাজার ৪০০ জনের বেশি মানুষ নিহত হয়। সেদিন থেকেই গাজায় নির্বিচার বোমা হামলা চালাচ্ছে ইসরাইল। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, তিন সপ্তাহের বেশি সময় ধরে চলা ইসরাইলী হামলায় ৮ হাজার ৫শরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। এদের অধিকাংশ বেসামরিক নাগরিক।
|
|
|
|
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু গাজায় যুদ্ধ বিরতির আহ্বান স্পষ্টভাবে প্রত্যাখ্যান করেছেন। এদিকে গাজায় ইসরায়েলি স্থল সেনারা একজন জিম্মিকে মুক্ত করতে পেরেছে। তবে হামাস দাবি করছে, ইসরায়েলি হামলায় ৫০ জিম্মি নিহত হয়েছে। জাতিসংঘের যুদ্ধবিরতির আহ্বান প্রত্যাখ্যান করে সোমবার নেতানিয়াহু বলেছেন, যুদ্ধবিরতির আহ্বান মানে হামাসের কাছে আত্মসমর্পণের আহ্বান, সন্ত্রাসের কাছে সমপর্ণের আহ্বান। বিদেশী সংবাদ মাধ্যমকে নেতানিয়াহু আরো বলেন, এটা হবে না। জয়ী না হওয়া পর্যন্ত যুদ্ধ চলবে। নেতানিয়াহু অঙ্গীকার করে বলেছেন, হামাসকে নির্মূল না করা পর্যন্ত তারা পিছু হটবে না। এদিকে ইসরায়েলি স্থল বাহিনী জিম্মি হিসেবে আটক থাকা ওরি মেগিদিসকে উদ্ধারে সক্ষম হয়েছে। তিনি এখন ইসরায়েলে রয়েছেন এবং ভালো আছেন। ইসরায়েলি সেনা বাহিনী এ কথা জানিয়েছে। গাজায় ইসরায়েলি হামলায় মানবিক পরিস্থিতি ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। জাতিসংঘ বার বার মানবিক যুদ্ধ বিরতির আহ্বান জানিয়ে আসছে। এছাড়া বিভিন্ন দেশ ও আন্তর্জাতিক সংস্থাও গাজায় যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানিয়ে আসছে। ইউনিসেফ বলেছে, গাজার পরিস্থিতি ঘন্টায় ঘন্টায় খারাপ হচ্ছে। হোয়াইট হাউসও গাজায় স্থায়ী যুদ্ধবিরতির আহ্বান প্রত্যাখ্যান করে বলেছে, এতে হামাস শক্তি সঞ্চয় ও ঐক্যবদ্ধ হওয়ার সুযোগ পাবে। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ইসরায়েলি হামলায় আট হাজারেরও বেশি লোক নিহত হয়েছে। যাদের অর্ধেকই শিশু। উল্লেখ্য, গত ৭ অক্টোবর ফিলিস্তিনী গ্রুপ হামাস ইসরায়েলে আকস্মিক বড়ো ধরনের হামলা চালায়। ইসরায়েল পাল্টা হামলা শুরু করে তা অব্যাহত রেখেছে।
|
|
|
|
জাতিসংঘে ইসরায়েলের রাষ্ট্রদূত সোমবার নিরাপত্তা পরিষদে ভাষণকালে তার বুকে একটি হলুদ তারকা ধারণ করেন। তিনি যতক্ষণ না সংস্থার সদস্যরা হামাসের নৃশংসতার নিন্দা না করছে ততক্ষণ ব্যাজটি পরার প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেছেন। এরদান ‘অহংকারের প্রতীক হিসেবে’ তারকা পরেছেন বলে জানান। তিনি বলেন, হামাসের নৃশংসতার নিন্দা না জানানো পর্যন্ত তিনি তারকা পরিধান করবেন। খবর এএফপি’র। ৭ অক্টোবর ইসরায়েলের বিরুদ্ধে হামাসের নজিরবিহীন হামলার জন্য নিরাপত্তা পরিষদের চুপ করে থাকার নিন্দা জানিয়ে দূত গিলাদ এরদান বলেন, ‘গত ৮০ বছরে আপনাদের মধ্যে কেউ কেউ কোনো প্রকার শিক্ষা গ্রহণ করেননি অনেকেই ভুলে গেছেন কেন এই সংস্থা প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।’ তীব্রভাবে বিভক্ত ১৫-সদস্যের নিরাপত্তা পরিষদে ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে তিন সপ্তাহব্যাপী যুদ্ধের বিষয়ে কোনো প্রস্তাব গ্রহণ করেনি। ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়াামিন নেতানিয়াহু ৭ অক্টোবরের হামলাকে হলোকাস্টের (ইহুদি গণহত্যা) পর ইহুদি জনগণের বিরুদ্ধে সবচেয়ে জঘন্য হামলা বলে অভিহিত করেছেন। কয়েক সপ্তাহ ধরে নিরাপত্তা পরিষদে যুদ্ধ ও এর প্রভাব নিয়ে বিভাজন সৃষ্টি হয়েছে এবং সংঘাত সম্পর্কিত চারটি খসড়া প্রস্তাব প্রত্যাখান হয়েছে। এদিকে আমেরিকানদের উপস্থাপিত আরেকটি প্রস্তাবে স্পষ্টভাবে যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানানো হয়নি রাশিয়া ও চীন বিশেষভাবে বাধা দেওয়ায়। অচল পরিস্থিতিতে গত শুক্রবার জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে ‘অবিলম্বে মানবিক যুদ্ধবিরতির’ অনুরোধ করে একটি প্রস্তাব সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোটে গৃহীত হয়েছে, তবে সেখানে হামাসের কর্মকা-ের কথা উল্লেখ নেই। সোমবার নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠকে বেশ ক’জন বক্তা হামাসের হামলার নিন্দা করেন এবং এর পরিপ্রেক্ষিততে গাজার বাসিন্দাদের যে মূল্য দিতে হয়েছে সে কথা তুলে ধরেন। স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা বলেন, হামাস পরিচালিত ফিলিস্তিনি ভূন্ডে ৮,৩০০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছে।
|
|
|
|
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাঁর সরকার একটি অবাধ ও সুষ্ঠু জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের ব্যাপারে অবিচল থাকার কথা পুনর্ব্যক্ত করেছেন। ভারত, মালদ্বীপ, শ্রীলঙ্কা এবং নেপালের বর্তমান ও সাবেক নির্বাচন কমিশনারদের একটি দল আজ এখানে সংসদ ভবন কার্যালয়ে তাঁর সঙ্গে সাক্ষাৎকালে প্রধানমন্ত্রী এই মন্তব্য করেন। তারা হলেন: ভারতের প্রাক্তন প্রধান নির্বাচন কমিশনার ড. এস ওয়াই কুরাইশি, মালদ্বীপের নির্বাচন কমিশনের চেয়ারম্যান ফুওয়াদ তওফিক, শ্রীলঙ্কার নির্বাচন কমিশনের চেয়ারম্যান আরএমএএল রথনায়েক, নেপালের নির্বাচন কমিশনার সাগুন শুমসের জে বি রানা এবং নেপালের সাবেক নির্বাচন কমিশনার ইলা শর্মা। প্রতিবেশী দেশগুলোর বর্তমান ও সাবেক নির্বাচন কমিশনারদের সমন্বয়ে গঠিত একটি নির্বাচন পর্যবেক্ষণকারী সংস্থা ইলেকশন মনিটরিং ফোরাম (ইএমএফ)-এর আমন্ত্রণে তারা বাংলাদেশ সফর করছেন। সাক্ষাৎ শেষে প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম সাংবাদিকদের এতথ্য জানান। বাংলাদেশের নির্বাচন কমিশন ‘প্রধান নির্বাচন কমিশনার এবং অন্যান্য নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ আইন, ২০২২’-এর অধীনে গঠিত হয়েছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এই আইনের অধীনে, প্রধান নির্বাচন কমিশনার এবং অন্যান্য কমিশনারদের নিয়োগ করা হয়েছে। এছাড়াও, সরকার নির্বাচন কমিশনকে বাজেটের বিষয়ে সম্পূর্ণ স্বাধীনতা দিয়েছে।’ ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনা বলেন, নির্বাচন কমিশন (ইসি) ইতোমধ্যে সংসদীয় উপ-নির্বাচন ও স্থানীয় সরকার নির্বাচনসহ বেশ কয়েকটি নির্বাচন অনুষ্ঠানের দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে।
সাক্ষাতের সময় প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতীয় সংসদের ৩০০টি আসনে পুরুষদের পাশাপাশি নারী প্রার্থীরা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারেন, এছাড়াও নারীদের জন্য ৫০টি আসন সংরক্ষিত রয়েছে, যেখানে সংসদে প্রতিনিধিত্বকারী রাজনৈতিক দলগুলো থেকে আনুপাতিকহারে অংশগ্রহন করেন। ২০১৮ সালের সাধারণ নির্বাচনের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, বিএনপি ৩০০টি আসনে ৭০০ জন প্রার্থী মনোনয়ন দিয়ে সেই নির্বাচনে অংশ নিয়েছিল এবং তারা বারবার তাদের প্রার্থী পরিবর্তন করেছে। তিনি আরও বলেন, ‘এমনকি, বিএনপি নির্বাচনকে বিতর্কিত করার জন্য ভোটের দিন তাদের প্রার্থীদের নির্বাচন থেকে প্রত্যাহার করে নেয়।’ সরকারপ্রধান অতীতে সামরিক স্বৈরশাসক ও বিএনপি কর্তৃক ভোট কারচুপির চিত্র সম্পর্কেও তাদের অবহিত করেন এবং বলেন, একজন সামরিক স্বৈরশাসক সংবিধান লঙ্ঘন করে অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল করেন এবং সেনাবাহিনী প্রধান থাকা সত্ত্বেও নিজেকে রাষ্ট্রপতি ঘোষণা করেন। তিনি আরও বলেন, ‘সামরিক স্বৈরশাসকরা অসাংবিধানিকভাবে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় আরোহণ করেন এবং পরে রাজনৈতিক দল গঠন করেন।’ বিএনপির রাজনীতি সম্পর্কে শেখ হাসিনা বলেন, বিএনপিতে এখন কোনো নেতৃত্ব নেই এবং এইদলের দুই শীর্ষ নেতা তাদের অপকর্ম ও অপরাধের জন্য আদালত কর্তৃক সাজাপ্রাপ্ত। বৈঠকে প্রতিনিধি দলের সদস্যরা জানান, বাংলাদেশের আগামী সাধারণ নির্বাচন নিয়ে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। ভারতের সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার ড. এস ওয়াই কুরাইশি বলেন, ‘বাংলাদেশের ইসি একটি অবাধ ও সুষ্ঠুভাবে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের ব্যাপারে অত্যন্ত আস্থাশীল।’ তিনি বলেন, ভারতীয় নির্বাচন কমিশন নির্বাচনের সময় সরকারের প্রশাসনিক ক্ষমতা গ্রহণ করে। এ সময় প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব এম তোফাজ্জেল হোসেন মিয়া উপস্থিত ছিলেন।
|
|
|
|
হামাস বলেছে, তারা রোববার গাজার উত্তরাঞ্চলের অভ্যন্তরে ইসরায়েলের সাথে ‘তুমুল যুদ্ধে’ জড়িয়ে পড়েছে। এদিকে গাজার অবরুদ্ধ হয়ে পড়া বাসিন্দাদের দক্ষিণ দিকে পালিয়ে যাওয়ার ব্যাপারে ফের সতর্ক করা হয়েছে। খবর এএফপি’র। খবরে বলা হয় কয়েক সপ্তাহের ভয়াবহ বিমান হামলার পর ইসরায়েল যুদ্ধের এক নতুন ‘ধাপের’ ঘোষণা দিয়েছে। আর এ যুদ্ধ ‘দীর্ঘ এবং কঠিন’ হবে বলে প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু সতর্ক করে দিয়েছেন। রোববার রাতে ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী যে ভিডিও ফুটেজ প্রকাশ করেছে তাতে ফিলিস্তিনে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক ট্যাঙ্ক, পদাতিক বাহিনী এবং কামান দেখা যায়। সামরিক বাহিনী ‘অপারেশন কমান্ড সেন্টার, পর্যবেক্ষণ ফাঁড়ি এবং অ্যান্টি-ট্যাঙ্ক মিসাইল লঞ্চ কেন্দ্রসহ ৪৫০টিরও বেশি সন্ত্রাসী লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানার দাবি করেছে। হামাস বলেছে, তাদের ইজ্জেদিন আল-কাসাম ব্রিগেড ইতোমধ্যে ইসরায়েলি দখলদার বাহিনীর সাথে তুমুল লড়াইয়ে জড়িয়ে পড়েছে। সেখানে ভয়াবহ ডোর টু ডোর যুদ্ধ হতে পারে উল্লেখ করে ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর মুখাপত্র ড্যানিয়েল হাগারি ফিলিস্তিনি বেসামরিক নাগরিকদের গাজার দক্ষিণাঞ্চলে ‘নিরাপদ এলাকায়’ চলে যেতে বলেছেন। ইসরায়েলের অভ্যন্তরে হামাসের বন্দুকধারীদের রক্তাক্ত আন্ত:সীমান্ত অভিযান শুরু করার ২৩ দিন হয়ে গেছে। ইসরায়েলি কর্মকর্তাদের দেওয়া সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, ৭ অক্টোবর গাজা উপত্যকা থেকে ইসরায়েলে চালানো হামাসের ভয়াবহ হামলায় কমপক্ষে ১,৫০০ জন নিহত হয়েছে। হামাসের হামলায় নিহতদের অধিকাংশই বেসামরিক নাগরিক। হামাসের হামলার প্রথম দিনে তাদের নির্বিচারে গুলি করে ও পুড়িয়ে মারার এবং ২৩৯ জনেরও বেশি লোককে জিম্মি করার পর ইসরায়েল গাজা অবরোধ করে এবং সেখানে ব্যাপক বোমা হামলা চালায়। গাজায় হামাসের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সর্বশেষ পরিসংখ্যান অনুযায়ী, হামাসের হামলার প্রতিশোধ নিতে গাজায় চালানো ইসরায়েলের হামলায় ৮’০০০ জনেরও বেশি ফিলিস্তিনি নাগরিক প্রাণ হারিয়েছে। এদের প্রায় অর্ধেক শিশু। সেখানে ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় হাজার হাজার ভবন ধসে পড়েছে এবং অর্ধেকেরও বেশি জনসংখ্যা বাস্তুচ্যুত হয়েছে।
|
|
|
|
ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী মঙ্গলবার জানিয়েছে, হামাস দেশটির ইতিহাসে সবচেয়ে রক্তক্ষয়ী হামলা চালানোর পর গত ১০ দিনে প্রায় পাঁচ লাখ ইসরায়েলিকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে এবং বাস্তুচ্যুত করা হয়েছে। ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনীর (আইডিএফ) মুখপাত্র জোনাথন কনরিকাস এক অনলাইন ব্রিফিংয়ে বলেন, এদের মধ্যে প্রায় ৫ লাখ বাস্তুচ্যুত রয়েছে। তিনি উল্লেখ করেন, লেবাননের সঙ্গেথ ইসরায়েলের উত্তর সীমান্তের ২০ টিরও বেশি সম্প্রদায় রয়েছে, গাজা উপত্যকার চারপাশের সকল সম্প্রদায়কে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। এটি ছিল দেশটির ৭৫ বছরের ইতিহাসে সবচেয়ে ভয়াবহ হামলা। গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের একের পর এক প্রতিশোধমূলক বিমান হামলায় অন্তত ২,৭৫০ জন নিহত হয়েছে, যাদের বেশিরভাগই সাধারণ ফিলিস্তিনি। হামাসের এই হামলা ছিল দেশের ৭৫ বছরের ইতিহাসে সবচেয়ে ভয়াবহ হামলা। এর জবাবে গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের অবিরাম প্রতিশোধমূলক বিমান হামলায় গাজা মাটির সমতলে মিশে গেছে, এতে কমপক্ষে ২,৭৫০ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে, যাদের বেশিরভাগই সাধারণ ফিলিস্তিনি। ঘনবসতিপূর্ণ ফিলিস্তিন ভূখন্ডের অভ্যন্তরে দশ লাখের বেশি মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে, এরমধ্যে হামাসের বিরুদ্ধে ইসরায়েল পূর্ণাঙ্গ স্থল আক্রমণের প্রস্তুতি নিচ্ছে। কনরিকাস বলেন, গাজা উপত্যকার আশেপাশে ইসরায়েলি সম্প্রদায়ের অনেক লোক প্রাথমিকভাবে ‘তাদের নিজস্ব যোগ্যতা ও উদ্যোগে এলাকা থেকে সরে যায়। তারপর থেকে গাজা উপত্যকার আশেপাশের সব সম্প্রদায়কে সরকারের নির্দেশ অনুযায়ী সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, ‘আমরা ইসরায়েলের একটি উল্লেখযোগ্য মানবিক পরিস্থিতির কথা বলছি।’ যদিও তিনি স্বীকার করেছেন যে, ‘গাজার পরিস্থিতি আরও খারাপ।’
|
|
|
|
যুক্তরাষ্ট্রের ঐতিহাসিক হাওয়াই শহরে ছড়িয়ে পড়া ভয়াবহ দাবানলে বৃহস্পতিবার মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৫৩ জনে দাঁড়িয়েছে। মার্কিন রাজ্য হওয়ার পর এই দ্বীপপুঞ্জে আঘাত হানা সবচেয়ে ভয়াবহ দুর্যোগগুলোর মধ্যে এটি ছিল অন্যতম। খবর এএফপি’র। খবরে বলা হয়, হাওয়াইয়ের পশ্চিম উপকূলে দাবানল মঙ্গলবার ছড়িয়ে পড়ে এবং তা দ্রুততার সাথে সমুদ্র তীরবর্তী শহর লাহাইনাকে গ্রাস করে। এই উপকূলের কাছেই অবস্থান করা হারিকেনের প্রচ- বাতাসে দাবানলটি ভয়াবহ রূপ ধারণ করে। সেখানে দাবানল এত দ্রুত ধেয়ে আসে যে এতে অনেকে বিভিন্ন রাস্তায় আটকে পড়ে বা পালানোর জন্য মরিয়া হয়ে সমুদ্রে ঝাঁপ দেয়। হাওয়াই দ্বীপপুঞ্জ যুক্তরাষ্ট্রের ৫০তম রাজ্য হওয়ার এক বছর পর সেখানে এমন মর্মান্তিক ঘটনা ঘটলো উল্লেখ করে গভর্নর জোশ গ্রিন বলেন, ১৯৬০ সালে বিগ দ্বীপে বিশাল সামুদ্রিক ঢেউয়ের আঘাতে ৬১ জনের প্রাণহানি ঘটেছিল। তিনি বলেন, ‘এবার খুব সম্ভবত আমাদের মৃত্যুর সংখ্যা আগের ওই সংখ্যাকে উল্লেখযোগ্যভাবে ছাড়িয়ে যাবে।’ মাউই কাউন্টির কর্মকর্তারা নিশ্চিত করেছেন যে, এই দুর্যোগে এখন পর্যন্ত মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৫৩ জনে দাঁড়িয়েছে। সেখানে দাবানল নিয়ন্ত্রণে আনতে দমকলকর্মীদের প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।
|
|
|
|
সিএনএনের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জো বাইডেন প্রেসিডেন্ট পদে পুনঃনির্বাচনে লড়াইয়ের আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা দিয়েছেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম টুইটারে এক ভিডিও বার্তায় বাইডেন জানান, প্রতিটি প্রজন্মের একটি নির্দিষ্ট মুহূর্ত আছে যেখানে তাদের গণতন্ত্রের পক্ষে দাঁড়াতে হয়েছে।
তিনি বলেন, আমি বিশ্বাস করি এটা আমাদের সময়। এ কারণেই আমি যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হিসেবে পুনঃনির্বাচনের জন্য প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছি। আমাদের সঙ্গে যোগ দিন, চলেন একসঙ্গে কাজটি সম্পন্ন করি।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে জো বাইডেন সবচেয়ে বয়স্ক প্রেসিডেন্ট। বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, তার জনপ্রিয়তার মাত্রা এখন ৪০ শতাংশেরও নিচে। এর আগে বাইডেনের সবচেয়ে ঘনিষ্ঠজনেরা অবশ্য জোর দিয়ে বলেছিলেন, শিগগিরই তার ২০২৪ সালের নির্বাচনী প্রচারণা শুরু হবে। শেষমেশ বাইডেন এ বিষয়ে চূড়ান্ত ঘোষণা দিলেন।
|
|
|
|
তুরস্কের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ (আফাদ) জানিয়েছে, শুক্রবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) পর্যন্ত দেশটিতে নিহতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৪৪ হাজার ২১৮ জনে।
আর সিরিয়ার সরকার ও উদ্ধারকারী সংগঠনগুলোর তথ্য বলছে, যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশটিতে ভূমিকম্পের আঘাতে প্রাণ হারিয়েছেন ৫ হাজার ৯১৪ জন।
সংস্থাটির তথ্য বলছে, গত ৬ ফেব্রুয়ারি ৭ মাত্রার ওপরে ভয়াবহ দুটি ভূমিকম্পের পর থেকে তুরস্কের দক্ষিণপূর্ব এবং সিরিয়ার উত্তরাঞ্চলে এ পর্যন্ত নয় হাজারের বেশি আফটারশক অনুভূত হয়েছে। তুরস্কের ১টি ভূমিকম্প-বিধ্বস্ত প্রদেশে কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন স্বেচ্ছাসেবকসহ প্রায় ২ লাখ ৪০ হাজার উদ্ধারকর্মী। ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত কিছু এলাকায় প্রাথমিকভাবে প্রবেশ করা কঠিন ছিল। কিন্তু উদ্ধার অভিযান অব্যাহত রয়েছে এবং এর অগ্রগতির সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে হতাহতের সংখ্যা। তবে গত কয়েকদিনে তুরস্ক-সিরিয়া কোনো দেশ থেকেই কাউকে জীবিত উদ্ধারের খবর পাওয়া যায়নি। কেবল তুরস্কের দুর্যোগকবলিত এলাকাগুলো থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে প্রায় ৫ লাখ ৩০ হাজার মানুষকে। তুর্কি সরকার বলছে, গত ৬ ফেব্রুয়ারির ভূমিকম্পে অন্তত ১ লাখ ৭৩ হাজার ভবন ধসে পড়েছে বা মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এগুলোতে বসবাসকারী ১৯ লাখের বেশি মানুষ অস্থায়ী আশ্রয়কেন্দ্র, হোটেল এবং সরকারি বিভিন্ন ভবনে আশ্রয় নিয়েছে। জোড়া ভূমিকম্পে তুরস্কে প্রায় দুই কোটি মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আর জাতিসংঘের ধারণা, সিরিয়ায় ক্ষতিগ্রস্ত লোকের সংখ্যা অন্তত ৮৮ লাখ। অবশ্য বছরের পর বছর ধরে চলা গৃহযুদ্ধের সম্মুখীন দেশটি থেকে খুব কম তথ্যই পাওয়া যায়। ভূমিকম্পের আঘাত থেকে বেঁচে যাওয়া অনেকেই তুরস্কের দক্ষিণাঞ্চল ছেড়ে চলে গেছে অথবা তাঁবু, কন্টেইনার হোম ও অন্যান্য সরকারি সহযোগিতার আবাসস্থলে রাত কাটাচ্ছেন। তাদের ঘরবাড়ি এক বছরের মধ্যেই পুনর্নির্মাণের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন তুর্কি প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোয়ান। তবে বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, কর্তৃপক্ষের উচিত গতির চেয়ে সুরক্ষা ও নিরাপত্তায় অগ্রাধিকার দেওয়া। কারণ, গত ২০ ফেব্রুয়ারি তুরস্কে ফের জোড়া ভূমিকম্পে ধসে পড়েছে টিকে থাকা আরও কয়েকটি ভবন। সেদিন আঘাত হানা প্রথম ভূমিকম্পের মাত্রা ছিল রিখটার স্কেলে ৬ দশমিক ৪। এর কয়েক মিনিট পরেই আঘাত হানে ৫ দশমিক ৮ মাত্রার আরও একটি ভূকম্পন। এ ঘটনায় তুরস্কে অন্তত ছয়জন নিহত এবং দুই শতাধিক মানুষ আহত হন।
|
|
|
|
তুরস্কের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ (আফাদ) জানিয়েছে, শুক্রবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) পর্যন্ত দেশটিতে নিহতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৪৪ হাজার ২১৮ জনে।
আর সিরিয়ার সরকার ও উদ্ধারকারী সংগঠনগুলোর তথ্য বলছে, যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশটিতে ভূমিকম্পের আঘাতে প্রাণ হারিয়েছেন ৫ হাজার ৯১৪ জন।
সংস্থাটির তথ্য বলছে, গত ৬ ফেব্রুয়ারি ৭ মাত্রার ওপরে ভয়াবহ দুটি ভূমিকম্পের পর থেকে তুরস্কের দক্ষিণপূর্ব এবং সিরিয়ার উত্তরাঞ্চলে এ পর্যন্ত নয় হাজারের বেশি আফটারশক অনুভূত হয়েছে। তুরস্কের ১টি ভূমিকম্প-বিধ্বস্ত প্রদেশে কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন স্বেচ্ছাসেবকসহ প্রায় ২ লাখ ৪০ হাজার উদ্ধারকর্মী। ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত কিছু এলাকায় প্রাথমিকভাবে প্রবেশ করা কঠিন ছিল। কিন্তু উদ্ধার অভিযান অব্যাহত রয়েছে এবং এর অগ্রগতির সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে হতাহতের সংখ্যা। তবে গত কয়েকদিনে তুরস্ক-সিরিয়া কোনো দেশ থেকেই কাউকে জীবিত উদ্ধারের খবর পাওয়া যায়নি। কেবল তুরস্কের দুর্যোগকবলিত এলাকাগুলো থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে প্রায় ৫ লাখ ৩০ হাজার মানুষকে। তুর্কি সরকার বলছে, গত ৬ ফেব্রুয়ারির ভূমিকম্পে অন্তত ১ লাখ ৭৩ হাজার ভবন ধসে পড়েছে বা মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এগুলোতে বসবাসকারী ১৯ লাখের বেশি মানুষ অস্থায়ী আশ্রয়কেন্দ্র, হোটেল এবং সরকারি বিভিন্ন ভবনে আশ্রয় নিয়েছে। জোড়া ভূমিকম্পে তুরস্কে প্রায় দুই কোটি মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আর জাতিসংঘের ধারণা, সিরিয়ায় ক্ষতিগ্রস্ত লোকের সংখ্যা অন্তত ৮৮ লাখ। অবশ্য বছরের পর বছর ধরে চলা গৃহযুদ্ধের সম্মুখীন দেশটি থেকে খুব কম তথ্যই পাওয়া যায়। ভূমিকম্পের আঘাত থেকে বেঁচে যাওয়া অনেকেই তুরস্কের দক্ষিণাঞ্চল ছেড়ে চলে গেছে অথবা তাঁবু, কন্টেইনার হোম ও অন্যান্য সরকারি সহযোগিতার আবাসস্থলে রাত কাটাচ্ছেন। তাদের ঘরবাড়ি এক বছরের মধ্যেই পুনর্নির্মাণের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন তুর্কি প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোয়ান। তবে বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, কর্তৃপক্ষের উচিত গতির চেয়ে সুরক্ষা ও নিরাপত্তায় অগ্রাধিকার দেওয়া। কারণ, গত ২০ ফেব্রুয়ারি তুরস্কে ফের জোড়া ভূমিকম্পে ধসে পড়েছে টিকে থাকা আরও কয়েকটি ভবন। সেদিন আঘাত হানা প্রথম ভূমিকম্পের মাত্রা ছিল রিখটার স্কেলে ৬ দশমিক ৪। এর কয়েক মিনিট পরেই আঘাত হানে ৫ দশমিক ৮ মাত্রার আরও একটি ভূকম্পন। এ ঘটনায় তুরস্কে অন্তত ছয়জন নিহত এবং দুই শতাধিক মানুষ আহত হন।
|
|
|
|
|
|
|