তুরস্কের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ (আফাদ) জানিয়েছে, শুক্রবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) পর্যন্ত দেশটিতে নিহতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৪৪ হাজার ২১৮ জনে।
আর সিরিয়ার সরকার ও উদ্ধারকারী সংগঠনগুলোর তথ্য বলছে, যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশটিতে ভূমিকম্পের আঘাতে প্রাণ হারিয়েছেন ৫ হাজার ৯১৪ জন।
সংস্থাটির তথ্য বলছে, গত ৬ ফেব্রুয়ারি ৭ মাত্রার ওপরে ভয়াবহ দুটি ভূমিকম্পের পর থেকে তুরস্কের দক্ষিণপূর্ব এবং সিরিয়ার উত্তরাঞ্চলে এ পর্যন্ত নয় হাজারের বেশি আফটারশক অনুভূত হয়েছে। তুরস্কের ১টি ভূমিকম্প-বিধ্বস্ত প্রদেশে কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন স্বেচ্ছাসেবকসহ প্রায় ২ লাখ ৪০ হাজার উদ্ধারকর্মী। ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত কিছু এলাকায় প্রাথমিকভাবে প্রবেশ করা কঠিন ছিল। কিন্তু উদ্ধার অভিযান অব্যাহত রয়েছে এবং এর অগ্রগতির সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে হতাহতের সংখ্যা। তবে গত কয়েকদিনে তুরস্ক-সিরিয়া কোনো দেশ থেকেই কাউকে জীবিত উদ্ধারের খবর পাওয়া যায়নি। কেবল তুরস্কের দুর্যোগকবলিত এলাকাগুলো থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে প্রায় ৫ লাখ ৩০ হাজার মানুষকে। তুর্কি সরকার বলছে, গত ৬ ফেব্রুয়ারির ভূমিকম্পে অন্তত ১ লাখ ৭৩ হাজার ভবন ধসে পড়েছে বা মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এগুলোতে বসবাসকারী ১৯ লাখের বেশি মানুষ অস্থায়ী আশ্রয়কেন্দ্র, হোটেল এবং সরকারি বিভিন্ন ভবনে আশ্রয় নিয়েছে। জোড়া ভূমিকম্পে তুরস্কে প্রায় দুই কোটি মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আর জাতিসংঘের ধারণা, সিরিয়ায় ক্ষতিগ্রস্ত লোকের সংখ্যা অন্তত ৮৮ লাখ। অবশ্য বছরের পর বছর ধরে চলা গৃহযুদ্ধের সম্মুখীন দেশটি থেকে খুব কম তথ্যই পাওয়া যায়। ভূমিকম্পের আঘাত থেকে বেঁচে যাওয়া অনেকেই তুরস্কের দক্ষিণাঞ্চল ছেড়ে চলে গেছে অথবা তাঁবু, কন্টেইনার হোম ও অন্যান্য সরকারি সহযোগিতার আবাসস্থলে রাত কাটাচ্ছেন। তাদের ঘরবাড়ি এক বছরের মধ্যেই পুনর্নির্মাণের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন তুর্কি প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোয়ান। তবে বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, কর্তৃপক্ষের উচিত গতির চেয়ে সুরক্ষা ও নিরাপত্তায় অগ্রাধিকার দেওয়া। কারণ, গত ২০ ফেব্রুয়ারি তুরস্কে ফের জোড়া ভূমিকম্পে ধসে পড়েছে টিকে থাকা আরও কয়েকটি ভবন। সেদিন আঘাত হানা প্রথম ভূমিকম্পের মাত্রা ছিল রিখটার স্কেলে ৬ দশমিক ৪। এর কয়েক মিনিট পরেই আঘাত হানে ৫ দশমিক ৮ মাত্রার আরও একটি ভূকম্পন। এ ঘটনায় তুরস্কে অন্তত ছয়জন নিহত এবং দুই শতাধিক মানুষ আহত হন।