শনিবার থেকে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপ শুরু করছে সরকার
অন্তর্র্বতী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদ দেশের আইন ও শৃঙ্খলা পরিস্থিতি এবং রাষ্ট্র সংস্কারের লক্ষ্যে গঠিত ছয়টি কমিশনের কাজ নিয়ে শনিবার থেকে প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপ শুরু করবে। প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম আজ ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে ব্রিফিংকালে বলেন, ‘উপদেষ্টা পরিষদ রাজনৈতিক দলগুলোকে কমিশনের কাজের অগ্রগতি সম্পর্কে অবহিত করবে। উপদেষ্টারা আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে তাদের (রাজনৈতিক নেতাদের) সাথে মতবিনিময় করবেন এবং তাদের পরামর্শ নেবেন।’ তিনি আশা প্রকাশ করেন, দুই-তিন দিনের মধ্যে পূর্ণাঙ্গ কমিশন গঠন করা হবে যাতে তারা পুরোদমে কাজ শুরু করতে পারে। এক প্রশ্নের জবাবে প্রেস সচিব বলেন, কমিশনের প্রধানরা ইতিমধ্যে তাদের কাজ শুরু করেছেন এবং কমিশনগুলির কার্যপরিধি (টিওআর) ইতিমধ্যে চূড়ান্ত করা হয়েছে এবং সংশি¬ষ্ট কর্তৃপক্ষ কমিশনগুলোর জন্য অফিসের জায়গা খুঁজছে। সংলাপকে একটি চলমান প্রক্রিয়া হিসেবে উলে¬খ করে তিনি বলেন, প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোকে সংলাপে যোগ দিতে আমন্ত্রণ জানানো হবে এবং উপদেষ্টা পরিষদ রাজনৈতিক নেতাদের সঙ্গে কথা বলবে। আলম বলেন, সংস্কার কমিশনগুলো ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে তাদের নিজ নিজ রিপোর্ট জমা দেবে এবং তারপর উপদেষ্টা পরিষদ আবার রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করবে বলে আশা করা হচ্ছে। অন্তর্র্বতী সরকার সমালোচনাকে স্বাগত জানায় উলে¬খ করে তিনি বলেন, উপদেষ্টা পরিষদ দেশের জনগণের প্রতিনিধিত্ব করছে এবং কেউ সমালোচনার ঊর্ধ্বে নয়। পার্বত্য চট্টগ্রামের (সিএইচটি) পরিস্থিতি নিয়ে অন্য এক প্রশ্নের জবাবে প্রেস সচিব বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রাম একটি বৃহত্তর এলাকা এবং তিনি মনে করেন না পার্বত্য অঞ্চলে এখন কোনো অস্থিতিশীল পরিস্থিতি বিরাজ করছে। পরিস্থিতি এখন অনেক ভালো বলে মন্তব্য করেন তিনি।
|
অন্তর্র্বতী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদ দেশের আইন ও শৃঙ্খলা পরিস্থিতি এবং রাষ্ট্র সংস্কারের লক্ষ্যে গঠিত ছয়টি কমিশনের কাজ নিয়ে শনিবার থেকে প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপ শুরু করবে। প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম আজ ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে ব্রিফিংকালে বলেন, ‘উপদেষ্টা পরিষদ রাজনৈতিক দলগুলোকে কমিশনের কাজের অগ্রগতি সম্পর্কে অবহিত করবে। উপদেষ্টারা আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে তাদের (রাজনৈতিক নেতাদের) সাথে মতবিনিময় করবেন এবং তাদের পরামর্শ নেবেন।’ তিনি আশা প্রকাশ করেন, দুই-তিন দিনের মধ্যে পূর্ণাঙ্গ কমিশন গঠন করা হবে যাতে তারা পুরোদমে কাজ শুরু করতে পারে। এক প্রশ্নের জবাবে প্রেস সচিব বলেন, কমিশনের প্রধানরা ইতিমধ্যে তাদের কাজ শুরু করেছেন এবং কমিশনগুলির কার্যপরিধি (টিওআর) ইতিমধ্যে চূড়ান্ত করা হয়েছে এবং সংশি¬ষ্ট কর্তৃপক্ষ কমিশনগুলোর জন্য অফিসের জায়গা খুঁজছে। সংলাপকে একটি চলমান প্রক্রিয়া হিসেবে উলে¬খ করে তিনি বলেন, প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোকে সংলাপে যোগ দিতে আমন্ত্রণ জানানো হবে এবং উপদেষ্টা পরিষদ রাজনৈতিক নেতাদের সঙ্গে কথা বলবে। আলম বলেন, সংস্কার কমিশনগুলো ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে তাদের নিজ নিজ রিপোর্ট জমা দেবে এবং তারপর উপদেষ্টা পরিষদ আবার রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করবে বলে আশা করা হচ্ছে। অন্তর্র্বতী সরকার সমালোচনাকে স্বাগত জানায় উলে¬খ করে তিনি বলেন, উপদেষ্টা পরিষদ দেশের জনগণের প্রতিনিধিত্ব করছে এবং কেউ সমালোচনার ঊর্ধ্বে নয়। পার্বত্য চট্টগ্রামের (সিএইচটি) পরিস্থিতি নিয়ে অন্য এক প্রশ্নের জবাবে প্রেস সচিব বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রাম একটি বৃহত্তর এলাকা এবং তিনি মনে করেন না পার্বত্য অঞ্চলে এখন কোনো অস্থিতিশীল পরিস্থিতি বিরাজ করছে। পরিস্থিতি এখন অনেক ভালো বলে মন্তব্য করেন তিনি।
|
|
|
|
ঢাকায় নিযুক্ত ইতালির রাষ্ট্রদূত আন্তোনিও আলেসান্দ্রো বলেছেন, ইতালি বাংলাদেশের পুলিশ সংস্কারে সহায়তা এবং দেশটিতে আনুষ্ঠানিক অভিবাসনের জন্য একসঙ্গে কাজ করবে। আজ তেজগাঁওয়ের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে এক সৌজন্য সাক্ষাতকালে রাষ্ট্রদূত এ মন্তব্য করেন। আলোচনায় ইতালিতে নিরাপদ, সংগঠিত ও নিয়মিত অভিবাসন, অর্থনৈতিক ও বাণিজ্য সহযোগিতা এবং পুলিশ সংস্কার প্রাধান্য পেয়েছে। নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সদর দপ্তরে প্রধান উপদেষ্টা ও ইতালির প্রধানমন্ত্রী জর্জিয়া মেলোনির মধ্যে এক বৈঠক অনুষ্ঠিত হওয়ার এক সপ্তাহ পরে এ সাক্ষাত হলো। জাতিসংঘের বৈঠকে অধ্যাপক ইউনূস বাংলাদেশ থেকে ইতালিতে বড় আকারে আনুষ্ঠানিক অভিবাসনের আহ্বান জানান। মেলোনি বলেন, উভয় দেশেরই অবৈধ অভিবাসন ঠেকাতে জোর প্রচেষ্টা চালানো উচিত। তিনি বলেন, ‘আমরা বাংলাদেশের অভিবাসীদের রক্ষা করতে চাই। আমাদের আরও উন্নত নিয়মিত অভিবাসনের জন্য কাজ করতে হবে।’ ইতালির রাষ্ট্রদূত অন্তর্বর্তী সরকারের সংস্কার প্রচেষ্টার প্রশংসা করে নিরাপত্তা বাহিনীর প্রশিক্ষণসহ পুলিশ সংস্কারে ইতালির সহায়তার প্রস্তাব দেন। তিনি বলেন, ‘আমাদের পুলিশ বেশ কয়েকটি দেশে এ সহায়তা দিয়ে থাকে।’ রাষ্ট্রদূত আশা প্রকাশ করেন, দুই দেশের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ‘শীঘ্রই ঘুরে দাঁড়াবে’। তিনি বলেন, বর্তমানে দুই দেশের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য প্রায় ২.৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। তিনি জানান, ইতালি দূতাবাসও শীঘ্রই একটি চলচ্চিত্র উৎসব ও একটি ব্যালে অনুষঠানের আয়োজন করবে।
|
|
|
|
প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের পর আগামীকাল ঢাকা যুক্তরাষ্ট্রের প্রথম উচ্চ পর্যায়ের একটি প্রতিনিধিদলকে স্বাগত জানিয়ে বিস্তৃত ও বহুমুখী আলোচনার প্রস্তুতি নিচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়া বিষয়ক ব্যুরোর সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডোনাল্ড লু প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেবেন। তিনি বর্তমানে নয়াদিল্লি সফরে আছেন। মার্কিন প্রতিনিধি দলটি প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ইউনূস, পররাষ্ট্র বিষয়ক উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন এবং অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহ উদ্দিন আহমেদ ছাড়াও অন্য কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠকে অংশ নেবে। পররাষ্ট্র সচিব মো. জসিম উদ্দিন একটি মধ্যাহ্নভোজের আয়োজন করবেন, এতে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধিরা উপস্থিত থাকবেন। পররাষ্ট্র সচিব সফর প্রসঙ্গে গণমাধ্যমকে বলেন, আলোচনায় শুধু একটি নয়, বিস্তৃত বিষয় থাকবে। মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের একজন মুখপাত্র জানান, আলোচনায় যুক্তরাষ্ট্র কীভাবে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি, আর্থিক স্থিতিশীলতা এবং উন্নয়ন অগ্রাধিকারে অবদান রাখতে পারে তা নিয়ে আলোচনা করা হবে। মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, সফরকালে সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডোনাল্ড লু ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ও স্থিতিশীলতা জোরদারে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করবেন। লু ঢাকায় অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে বৈঠকের জন্য একটি আন্তঃসংস্থা প্রতিনিধি দলের সঙ্গে যোগ দেবেন। প্রতিনিধি দলে যুক্তরাষ্ট্রের ট্রেজারি বিভাগ, ইউএসএআইডি এবং মার্কিন বাণিজ্য প্রতিনিধির কার্যালয়ের প্রতিনিধিরা থাকবেন। নতুন রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের অগ্রগতি নিয়ে আলোচনা হবে।
|
|
|
|
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, ‘আমাদের কাজ বড় কঠিন, কিন্তু জাতি হিসেবে এবার ব্যর্থ হওয়ার কোনো অবকাশ আমাদের নেই। আমাদের সফল হতেই হবে। ’ দেশবাসীর সহযোগিতার হাত ধরে এই সাফল্য আসবে এমন দৃঢ় আশাবাদ ব্যক্ত করে তিনি বলেন, ‘আপনাদের সহযোগিতার কারণেই সাফল্য আসবে। আমাদের কাজ হবে আপনার, আমার স্বপ্নকে বাস্তবে রূপায়িত করা। এখন আমরা দ্বিতীয় মাস শুরু করছি। আমাদের দ্বিতীয় মাসে যেন আপনাদের মনে দৃঢ় আস্থার সৃষ্টি করতে পারি সে চেষ্টা করে যাবো।’ অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের এক মাস পূর্তি উপলক্ষ্যে আজ বুধবার সন্ধ্যায় প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে এ কথা বলেন। গত ৮ আগস্ট অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের পর দ্বিতীয় বারেরমত তিনি জাতির উদ্দেশে ভাষণ দিলেন। ছাত্র-জনতার আকাঙ্খার বাংলাদেশ গড়ে তুলতে দেশবাসীকে একযোগে কাজ করার আহবান জানিয়ে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘আমাদের সামনে অনেক কাজ। সবাই মিলে একই লক্ষ্যে আমরা অগ্রসর হতে চাই। আমাদের মধ্যে, বিশেষ করে নতুন প্রজন্মের মধ্যে যে সুপ্ত প্রতিভা লুকিয়ে আছে সেটা যেন বিনা বাধায়, রাষ্ট্রের এবং সমাজের সহযোগিতায় প্রকাশ করতে পারি সেই সুযোগের কাঠামো তৈরি করতে চাই। সকলে মিলে আমাদের পরিবারের প্রতিটি সদস্যকে, সে ঝাড়ুদার হোক, ছাত্র হোক, শিক্ষক হোক, যে কোনো ধর্মের হোক, সবার সমান অধিকার নিশ্চিত করতে চাই। এই হলো আমাদের সংস্কারের মূল লক্ষ্য। আসুন ছাত্র, শ্রমিক, জনতার এই বিপ্লবের লক্ষ্যকে আমরা দ্রুত বাস্তবায়ন করি।’ দেশের আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নয়নে দেশবাসীকে সহযোগিতার প্রদানের আহবান জানিয়ে ড. ইউনূস বলেন, ‘আমাদের প্রথম মাসে আমরা যে গতিতে, যে উদ্যম নিয়ে কাজ এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার কথা চিন্তা করেছিলাম হয়ত সেটা করতে পারিনি বাস্তব অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে। দেশের আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখা গেলে আশা করি আমরা আমাদের গতি অনেক বাড়াতে পারবো। এজন্য দেশের সকল মানুষের কাছে- শিক্ষক, ছাত্র-ছাত্রী, কৃষক, শ্রমিক, পেশাজীবী, বড় ব্যবসায়ী, ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী, দিন মজুর , গৃহিণী সকলের সহযোগিতা চাইছি।’ দেশগঠন ও সংস্কার কর্মসূচি বাস্তবায়নে সঠিকভাবে কাজ করে যাওয়ার অঙ্গীকার ব্যক্ত করে নোবেল বিজয়ী ড. ইউনূস। জুলাইয়ের গণঅভ্যুত্থান ও সাম্প্রতিক বন্যা মোকাবিলায় বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর ভূমিকার প্রশংসা করেন ড. ইউনূস। তিনি বলেন, বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর সকল সদস্যক ধন্যবাদ জানাই তাদের সততা, ত্যাগ ও অসীম দেশপ্রেমের জন্য। দেশের স্বাধীনতা সংগ্রাম থেকে শুরু করে বন্যা, খরা, ঝড়, বৃষ্টি, ঘূর্ণিঝড় সহ সকল প্রাকৃতিক দুর্যোগে আপনারা সকলের শেষ ভরসার স্থান। দেশের প্রতিটি ক্রান্তিলগ্নে আপনারা দেশের মানুষের পাশে থেকেছেন। দেশের স্বাধীনতার পক্ষে, সার্বভৌমত্বের পক্ষে অবস্থান নিয়েছেন। দেশ গঠনেও আপনারা সবার আগে এগিয়ে এসেছেন। বিগত জুলাই হতে শুরু হওয়া গণঅভ্যুত্থান, বন্যা, নিরাপত্তা প্রদান, অস্ত্র উদ্ধারসহ সকল কার্যক্রমে আপনারা সফলভাবে দিনরাত কাজ করে যাচ্ছেন। এজন্য তিনি সরকার ও জনগণের পক্ষ থেকে কৃতজ্ঞতাও প্রকাশ করেন। যাতায়াতে ব্যাঘাত সৃষ্টি করে এমন কর্মসূচি থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানিয়ে অধ্যাপক ইউনূস বলেন, যেসমস্ত ভাই-বোনেরা গত ১৬ বছরের বেদনা জানিয়ে তার প্রতিকার পাওয়ার জন্য আমার অফিস এবং সচিবালয়ের সামনে ঘেরাও কর্মসূচি দিয়ে আমাদের কাজকর্ম ব্যাহত করছিলেন তারা আমার আহ্বানে সাড়া দিয়ে ঘেরাও কর্মসূচি থেকে বিরত হয়েছেন বটে তবে অন্যত্র আবার তারা তাদের কর্মসূচি দিয়ে যাতায়াতে ব্যাঘাত সৃষ্টি করছেন। আমি কথা দিচ্ছি আপনাদের ন্যায্য আবেদনের কথা ভুলে যাবো না। আমরা সকল অন্যায়ের প্রতিকারের জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। আমরা আমাদের দায়িত্বকালে যথাসম্ভব সব সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করবো। যাতায়াতে ব্যাঘাত সৃষ্টি থেকে বিরত থাকুন। জাতি আপনাদের প্রতি কৃতজ্ঞ থাকবে। তিনি দৃঢ়তার সাথে উল্লেখ করেন সরকার আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতির জন্য দিনরাত পরিশ্রম করে যাচ্ছে।
|
|
|
|
যুক্তরাষ্ট্রের আসন্ন উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধিদল বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি, আর্থিক স্থিতিশীলতা ও উন্নয়ন চাহিদা সহায়তার ওপর ওয়াশিংটনের দৃষ্টি নিবদ্ধ করবে। মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর একথা জানিয়েছে। মঙ্গলবার মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের মুখপাত্রের অফিসের একটি মিডিয়া নোটে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়া বিষয়ক ব্যুরোর সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডোনাল্ড লু ১০ থেকে ১৬ সেপ্টেম্বর ভারত ও বাংলাদেশ সফর করবেন। এতে বলা হয়, ‘সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী লু ঢাকায় বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের সাথে বৈঠকের জন্য একটি আন্তঃসংস্থা প্রতিনিধি দলে যোগ দেবেন।’ প্রতিনিধি দলে মার্কিন ট্রেজারি বিভাগ, ইউএসএআইডি ও মার্কিন বাণিজ্য প্রতিনিধি অফিসের প্রতিনিধিরা থাকবেন। ঢাকায় অবস্থানকালে লুয়ের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস, পররাষ্ট্র বিষয়ক উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন ও সুশীল সমাজের বিভিন্ন সদস্যের সাথে দেখা করার কথা রয়েছে। গত ৮ আগস্ট বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের পর যুক্তরাষ্ট্র থেকে এটিই প্রথম এ ধরনের সফর হতে যাচ্ছে। পররাষ্ট্র দপ্তর জানিয়েছে, সফলকালে সহকারী সেক্রেটারি লু তার অংশীদারদের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ও সমগ্র ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চল জুড়ে স্থিতিশীলতাকে সমর্থন করার জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করবেন। ভারতে তিনি ইউএস-ইন্ডিয়া বিজনেস কাউন্সিল আয়োজিত ইন্ডিয়া আইডিয়াস সামিটে উন্নয়ন, নিরাপত্তা ও নারীদের অর্থনৈতিক ক্ষমতায়নের বিষয়ে মার্কিন-ভারত সহযোগিতার বিষয়টি তুলে ধরবেন। এছাড়া, তিনি মার্কিন প্রিন্সিপাল ডেপুটি অ্যাসিসট্যান্ট সেক্রেটারি অব ডিফেন্স জেডিদিয়া পি রয়েল ও ভারতের পররাষ্ট্র ও প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের সাথে অষ্টম ইউএস-ইন্ডিয়া ২+২ ইন্টারসেশনাল ডায়ালগের সহ-সভাপতিত্ব করবেন। সংলাপে মার্কিন-ভারত দ্বিপক্ষীয় অংশীদারিত্ব বাড়ানো এবং ইন্দো-প্যাসিফিক ও তার বাইরে সহযোগিতা সম্প্রসারণের ওপর আলোকপাত করা হবে।
|
|
|
|
গাজা যুদ্ধের ক্ষোভ এবং মানবিক সহায়তা কার্যক্রমে বাধা দেয়ার প্রতিক্রিয়ায় বৃহস্পতিবার জাতিসংঘের একজন শীর্ষস্থানীয় সাহায্য কর্মকর্তা ‘আমাদের মৌলিক মানবতার কী পরিণত হয়েছে’ তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। জাতিসংঘ মানবিক বিষয়ক সমন্বয়ের অফিস (ওসিএইচএ) এর ভারপ্রাপ্ত প্রধান জয়েস মসুয়া বলেছেন, ‘আমরা ২৪ ঘন্টার আগে পরিকল্পনা করতে পারি না। কারণ, আমাদের কাছে কী সরবরাহ থাকবে, কখন আমাদের কাছে সেগুলো থাকবে বা আমরা কোথায় সরবরাহ করতে সক্ষম হব তা জানার জন্য আমাদের রীতিমত সংগ্রাম করতে হচ্ছে।’ নিরাপত্তা পরিষদে তিনি বলেন, ‘বেসামরিক নাগরিকরা ক্ষুধার্ত। তারা তৃষ্ণার্ত। তারা অসুস্থ। তারা গৃহহীন। তাদের বাইরে ঠেলে দেওয়া হয়েছে। এ অবস্থা কি কোন মানুষ সহ্য করতে পারে।’ সাহায্য কর্মীদের জন্য একটি কেন্দ্র হয়ে ওঠা দেইর আল-বালাহ এলাকায় নতুন ইসরাইলি উচ্ছেদ আদেশের কারণে সোমবার গাজার মধ্যে জাতিসংঘের সাহায্য ও সাহায্য কর্মীদের চলাচল বন্ধ করার পর মসুয়া এই মন্তব্য করেছেন। ‘গাজার ৮৮ শতাংশেরও বেশি ভূ-খন্ড বিভিন্ন সময়ে ইসরাইলের খালি করার আদেশের নির্দেশ এসেছে’ এ কথা উল্লেখ করে মসুয়া বলেন, ‘অচল অবস্থায়’ বেসামরিক নাগরিকদের গাজা উপত্যকার মাত্র ১১ শতাংশের সমতুল্য এলাকায় আশ্রয় নিতে বাধ্য করা হচ্ছে। তিনি বলেন, ‘উচ্ছেদের আদেশ আন্তর্জাতিক মানবিক আইনের প্রয়োজনীয়তাকে অস্বীকার করা হচ্ছে বলে মনে হয়।’ ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী হামাসের বিরুদ্ধে ইসরাইলের যুদ্ধে বেসামরিক মৃত্যুর সংখ্যা বৃদ্ধির সাথে সাথে ক্রমবর্ধমান তদন্তের আওতায় এসেছে। তবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ আন্তর্জাতিক শক্তিগুলো এখন পর্যন্ত যুদ্ধবিরতির আলোচনায় সহায়তা করতে ব্যর্থ হয়েছে। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রনালয় জানায়, ইসরাইলের প্রতিশোধমূলক সামরিক অভিযানে গাজায় কমপক্ষে ৪০,৬০২ জন বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছে। এদের বেশির ভাগই নারী ও শিশু। মসুয়া বলেন, ‘গত ১১ মাসে আমরা যা দেখেছি,তা আন্তর্জাতিক আইনি আদেশের প্রতি বিশ্বকে বৃদ্ধাঙ্গুলি প্রদর্শন ছাড়া আর কিছু নয়।’ তিনি বলেন, ‘আমাদের মানবতার মৌলিক অনুভূতির কী হলো? এই প্রশ্ন তুলতে বাধ্য করেছে।’ নিরাপত্তা পরিষদ এবং বৃহত্তর আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে যুদ্ধের অবসান ঘটাতে তাদের প্রচেষ্টা জোরদার, জিম্মিদের মুক্তি এবং ‘গাজায়’ একটি স্থায়ী যুদ্ধবিরতি’ কার্যকর করার আহ্বান জানান মসুয়া।
|
|
|
|
বিদ্যুৎ জালানি ও খনিজ সম্পদ এবং সড়ক পরিবহন, সেতু ও রেলপথ উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান বলেছেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার পদ্মা সেতু প্রকল্পে ১ হাজার ৮২৫ কোটি টাকা ব্যয় সাশ্রয় করেছে। তিনি বলেন, পদ্মা সেতু প্রকল্পের সর্বশেষ প্রাক্কলিত ব্যয় ছিল ৩২ হাজার ৬০৫ কোটি ৫২ লাখ টাকা। ব্যয় সংকোচননীতি অবলম্বন করে সর্বশেষ চূড়ান্ত ব্যয় দাঁড়িয়েছে ৩০ হাজার ৭৭০ কোটি ১৪ লাখ টাকা। এখানে প্রায় ১ হাজার ৮২৫ কোটি টাকা সাশ্রয় হয়েছে। এটা থেকে বুঝা যায় যে আগে যদি ভালো সরকার থাকতো তাহলে আরও ব্যয় সংকোচন করা যেত। মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান আজ শুক্রবার সন্ধ্যায় জেলার জাজিরা সার্ভিস এরিয়া-২’র কনফারেন্স রুমে সাংবাদিকদের সঙ্গে আয়োজিত এক মতবিনিময় সভায় কথা বলেন। এরআগে তিনি পদ্মা সেতু পরিদর্শন করেন। মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান বলেন, ব্যয় সংকোচন নীতি গ্রহণ করে মূল সেতুতে ৫৩০ কোটি টাকা, নদী শাসনে ৮০ কেটি টাকা, সংযোগ সড়ক ও সার্ভিস এড়িয়ায় ১৭৮ কোটি টাকা, ভূমি অধিগ্রহণ ১০৩ কোটি টাকা ও অন্যান্য সকল ব্যয় ১ হাজার ৪৯১ কোটি টাকা সাশ্রয় করা হয়েছে। তিনি আরও বলেন, বিদ্যুৎ খাতে বিভিন্ন অনিয়মের কারণে যে অতিরিক্ত ব্যয় হয়েছে, তা নিরসনে আমরা কাজ করে যাচ্ছি। শুধু সংখ্যাগত উন্নয়ন হলেই হবে না, গুণগত উন্নয়ন নিশ্চিত করতে প্রধান উপদেষ্টা নির্দেশ দিয়েছেন। মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান বলেন, তিনি মূলত খুলনা যাচ্ছেন রূপসা বিদ্যুৎ কেন্দ্র পরিদর্শন করতে। খুলনার রূপসায় ৮৮০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ কেন্দ্রের গ্যাস সরবরাহ নাই। কিন্তু উন্নয়ন দেখানো হয়েছে, বিভ্রান্ত করা হয়েছে যে জিডিপি বাড়ছে, গ্রোথ বাড়ছে। কিন্তু এ গ্রোথ তো কাজের না। যদি বিদ্যুৎ না থাকে তাহলে তো এ গ্রোথ একটা সংখ্যা মাত্র । রূপসা বিদ্যুৎ কেন্দ্র কি করা যায়, তা নিয়ে পরদর্শন শেষে পদক্ষেপ নেওয়া হবে। এসময় সেতু বিভাগের সিনিয়র সচিব মো. মুনজুর হোসেন, জ্বালানী ও খনিজ সম্পদ বিভাগের সচিব মো. নূরুল আলম, শরীয়তপুরের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মো. সাইফুদ্দিন গিয়াসসহ অন্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
|
|
|
|
জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনারের একজন মুখপাত্র জানিয়েছেন, জাতিসংঘের মানবাধিকার ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং টিম শিগগির বাংলাদেশ সফরে আসছে, এই টিম ন্যায়বিচার, জবাবদিহিতা এবং দীর্ঘমেয়াদী সংস্কার এগিয়ে নেয়ার লক্ষ্যে সুপারিশ করবে। মুখপাত্র রাভিনা শামদাসানি আজ এক বিবৃতিতে বলেন, জাতিসংঘ কার্যালয় আগামী কয়েক সপ্তাহের জন্য বাংলাদেশে একটি ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং দল নিয়োজিত করবে, তাদের লক্ষ্য হবে বিক্ষোভের সময় সংঘটিত মানবাধিকার লঙ্ঘন ও নিপীড়নের বিষয়ে প্রতিবেদন তৈরী করা, মূল কারণগুলো বিশ্লেষণ করা এবং ন্যায়বিচার ও জবাবদিহিতা এবং দীর্ঘমেয়াদী সংস্কার এগিয়ে নেয়ার জন্য সুপারিশ করা। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনার ভলকার তুর্ক বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছ থেকে গত ১ জুলাই থেকে ১৫ আগস্ট পর্যন্ত সংঘটিত মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিষয়ে একটি নিরপেক্ষ ও স্বাধীন সত্য অনুসন্ধান মিশন পরিচালনা করার জন্য আনুষ্ঠানিকভাবে আমন্ত্রণ পেয়েছেন। এতে আরো বলা হয়, দলটি এই কাজে পূর্ণ সহযোগিতার বিষয়ে অন্তর্বর্তী সরকার ও নিরাপত্তা বাহিনীর কাছ থেকে প্রতিশ্রুতি পেয়েছে। তদন্তের পদ্ধতি নিয়ে আলোচনা করার জন্য জাতিসংঘের একটি অগ্রবর্তী দলের সপ্তাহব্যাপী সফর শেষ হওয়ার পরে মুখপাত্র এই বিবৃতি দিয়েছেন। বিবৃতিতে বলা হয়, ‘একটি অগ্রবর্তী দল গত সপ্তাহে (২২-২৯ আগস্ট পর্যন্ত) বাংলাদেশে সাম্প্রতিক বিক্ষোভকারী ছাত্র নেতাদের মধ্যে যাদের অনেকেই সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে আটক বা আহত হয়েছেন তাদের সঙ্গে বৈঠক করেছে। পাশাপাশি এ টিম বিস্তৃত পরিসরে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টা, প্রধান বিচারপতি, পুলিশ ও সশস্ত্র বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, আইনজীবী, সাংবাদিক, মানবাধিকার কর্মী, রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধি এবং সংখ্যালঘু ও আদিবাসী সম্প্রদায়ের সঙ্গেও আলোচনা করেছে। এতে বলা হয়েছে, জাতিসংঘের অগ্রবর্তী দলটি বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের অনুরোধ অনুযায়ী সাম্প্রতিক সহিংসতা ও অস্থিরতার প্রেক্ষাপটে মানবাধিকার লঙ্ঘন ও নির্যাতনের বিষয়ে তদন্তের পদ্ধতি নিয়ে আলোচনা করেছে। মুখপাত্র বলেন, ‘এ টিম সংস্কার প্রক্রিয়া ছাড়াও নাগরিক অধিকার, সত্যানুসন্ধান, ন্যায়বিচার, চিকিৎসা, ক্ষতিপূরণ ও সংহতি এবং অন্যান্য মানবাধিকারের বিষয় সহ বিস্তৃত ক্ষেত্র নিয়েও আলোচনা করেছে যেখানে আমাদের হাইকমিশন অফিস টেকসই সহায়তা প্রদান করতে পারে’। মুখপাত্র আরও বলেন, হাইকমিশনার এ প্রসঙ্গে ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন ফর দ্য প্রোটেকশন অব অল পার্সনস ফ্রম ফোর্সড ডিসএপিয়ারেন্স বিষয়ক চুক্তিতে বাংলাদেশের যোগদান এবং আইন প্রয়োগকারী সংস্থা কর্তৃক জোরপূর্বক নিখোঁজ হওয়া ব্যক্তিদের হদিস নির্ধারণের জন্য পাঁচ সদস্যের জাতীয় তদন্ত কমিশন গঠনের ঘোষণাকে স্বাগত জানিয়েছে। শামদাসানি বলেন, বাংলাদেশে জোরপূর্বক গুমের বিষয়টির একটি দীর্ঘ ও বেদনাদায়ক ইতিহাস রয়েছে, এ বিষয়ে জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয় এবং জাতিসংঘের মানবাধিকার ব্যবস্থা সোচ্চার ছিল। তিনি বলেন, ‘আমরা কমিশনকে তার কাজে সহায়তা করার জন্য প্রস্তুত আছি। এ ক্ষেত্রে নিখোঁজ ব্যক্তিদের সন্ধানের জন্য আন্তর্জাতিক মানবাধিকার মানদন্ড সহ নীতিমালা অনুসরণ করে ঘটনার শিকার ব্যক্তি ও তাদের পরিবারের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে পরামর্শ করতে হবে। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয় বাংলাদেশের সকল মানুষের জন্য মানবাধিকারকে এগিয়ে নিতে, জবাবদিহিতা ও সংহতি বিধান এবং গণতন্ত্র পুন:প্রতিষ্ঠা করার এই গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্তে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার ও জনগণকে সহায়তা প্রদান করার অপেক্ষায় রয়েছে
|
|
|
|
পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী মুহাম্মদ শেহবাজ শরিফ বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের নেতৃত্ব গ্রহণ করায় প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে এক টেলিফোন কলের মাধ্যমে অভিনন্দন জানিয়েছেন। পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী আজ শুক্রবার টেলিফোনে প্রধান উপদেষ্টাকে তার শুভ কামনা জানান এবং দক্ষিণ এশিয়ার দেশ দু’টির মধ্যকার সৌহার্দ্য তাদের জনগণের স্বার্থে বাস্তবিক সহযোগিতায় রূপান্তরিত হবে বলে আশা প্রকাশ করেন। প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং একথা জানায়, প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ইউনূস ছাত্র-নেতৃত্বে একটি বিপ্লবের পর বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে শপথ গ্রহণ করায় ফোন কল এবং অভিনন্দন বার্তার জন্য পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শরিফকে ধন্যবাদ জানান। অধ্যাপক ইউনূস বাংলাদেশের বন্যার্তদের প্রতি পাকিস্তানের জনগণের সহানুভূতি ও সংহতি জানিয়ে বার্তা পাঠানোর জন্যও প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফকে ধন্যবাদ জানান। অধ্যাপক ইউনূস দুই দেশের মধ্যে অর্থনৈতিক সম্পর্ক এবং জনগণের মধ্যে সংযোগ জোরদার করারও আহ্বান জানান। সার্ক প্রক্রিয়া পুনরুজ্জীবিত করার ওপর গুরুত্ব আরোপ করে ড, ইউনূস বলেন, দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে সম্পর্ক জোরদারে সার্ককে একটি শীর্ষ আঞ্চলিক ফোরাম হিসেবে পুনরুজ্জীবিত করতে তিনি প্রতিশ্রুুতিবদ্ধ। তিনি নিয়মিত সার্ক সম্মেলন আয়োজনের প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেন এবং যত দ্রুত সম্ভব সার্কের রাষ্ট্র ও সরকার প্রধানদের একটি সংক্ষিপ্ত বৈঠকের আয়োজনের ওপর জোর দেন। শেহবাজ শরিফ বাংলাদেশের দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের জন্য সহায়তা প্রদানের আগ্রহ প্রকাশ করেন। তিনি দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ক পুনরুজ্জীবিত করার প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দিয়ে বলেন, দু’দেশের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ও অর্থনৈতিক সহযোগিতা বাড়ানোর বিপুল সম্ভাবনা রয়েছে। পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ঢাকা ও ইসলামাবাদের মধ্যে পররাষ্ট্র সচিব পর্যায়ের পরামর্শ এবং যৌথ অর্থনৈতিক কমিশনের মতো প্রক্রিয়া পুনরায় শুরু করার প্রয়োজনীয়তারও ওপর জোর দেন।
|
|
|
|
স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যায় ১২ জেলার ৭৭ উপজেলার ৪৮ লাখ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। জেলাগুলো হলো, ফেনী, কুমিল্লা, চট্টগ্রাম, খাগড়াছড়ি, রাঙ্গামাটি, নোয়াখালী, মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জ, ব্রাহ্মণবাড়ীয়া, সিলেট, লক্ষীপুর ও কক্সবাজার। আকষ্মিক এই বন্যায় ২ জন নারীসহ ১৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. কামরুল হাসান গতকাল মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে দেশের চলমান বন্যা সম্পর্কে সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে বলেন, বন্যায় দেশের ৫৮৪টি ইউনিয়ন ও পৌরসভার ৮ লাখ ৮৭ হাজার ৬২৯ পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে এবং ক্ষতিগ্রস্ত ৪৮ লাখ মানুষ। বন্যায় মারা গেছেন ১৫ জন । এর মধ্যে কুমিল্লায় ৪ জন, ফেনীতে ১ জন, চট্টগ্রামে ৪ জন, নোয়াখালীতে ১ জন, ব্রাহ্মণবাড়ীয়ায় ১ জন, লক্ষীপুরে ১ জন ও কক্সবাজারে ৩ জন রয়েছেন। বন্যায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা হচ্ছে ফেনী শহর ও জেলার ৬ উপজেলা। জেলার ৯০ শতাংশ মোবাইল টাওয়ার কাজ করছে না। বিদ্যূত না থাকায় এই জেলার প্রায় সব এলাকা টেলিযোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের উদ্ধার ও তাদের মাঝে পর্যাপ্ত ত্রাণ সামগ্রী বিতরণের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে উল্লেখ করে সচিব বলেন, পানিবন্দি ও ক্ষতিগ্রস্ত লোকদের আশ্রয় প্রদানের জন্য মোট ৩ হাজার ১৬০টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে এবং আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে ১ লাখ ৮৮ হাজার ৭৩৯ জন লোক ও ১৭ হাজার ৮৪৮টি গবাদি পশুকে আশ্রয় দেয়া হয়েছে। এছাড়া, ১১ জেলার ক্ষতিগ্রস্তদের চিকিৎসা সেবা প্রদানের জন্য মোট ৬৩৭টি মেডিকেল টিম চালু রয়েছে। তিনি জানান, বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে বিতরণের জন্য ক্ষতিগ্রস্ত বিভিন্ন জেলায় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় ৩ কোটি ৫২ লাখ নগদ টাকা, ২০ হাজার ১৫০ মেট্রিক টন চাল এবং ১৫ হাজার প্যাকেট শুকনা খাবার বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। এর মধ্যে চট্টগ্রামে ৩৫ লাখ টাকা ও ১ হাজার ৬শ’ মেট্রিক টন চাল; কুমিল্লায় ৪৫ লাখ টাকা ও ২ হাজর ৬শ’ মেট্রিক টন চাল; ফেনীতে ৬২ লাখ টাকা, ২ হাজার ৯শ’ মেট্রিক টন চাল ও ৬ হাজার প্যাকেট শুকনা খাবার; নোয়াখালীতে ৪৫ লাখ টাকা, ২ হাজার ৬শ’ মেট্রিকটন চাল ও ১ হাজার প্যাকেট শুকনা খাবার; সিলেটে ৪৫ লাখ টাকা, ২ হাজার ৬শ’ মেট্রিকটন চাল ও ৪ হাজার প্যাকেট শুকনা খাবার; মৌলভীবাজারে ৩০ লাখ টাকা, ২ হাজার ৩৫০ মেট্রিক টন চাল ও ১ হাজার প্যাকেট শুকনা খাবার; হবিগঞ্জে ৩৫ লাখ টাকা, ২ হাজার ৪শ’ মেট্রিক টন চাল ও ৩ হাজার প্যাকেট শুকনা খাবার; ব্রাহ্মণবাড়ীয়ায় ১৫ লাখ টাকা, ১ হাজার ৬শ’ মেট্রিক টন চাল; লক্ষ্মীপুরে ১০ লাখ টাকা, ৫শ’ মেট্রিক টন চাল; খাগড়াছড়িতে ১০ লাখ টাকা, ৫শ’ মেট্রিক টন চাল এবং কক্সবাজারে ২০ লাখ টাকা, ৫শ’ মেট্রিক টন চাল বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। এছাড়া, দেশের সকল জেলায় পর্যাপ্ত ত্রাণ সামগ্রী মজুদ রয়েছে। বন্যায় আক্রান্ত জেলাসমূহের জেলা প্রশাসককে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক, সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী, কোস্টগার্ডের সদস্যরা, মেডিকেল টিম ও অন্যান্য স্বেচ্ছাসেবকদের সাথে সমন্বয় করে এক সাথে কাজ করার জন্য প্রয়োজনীয় নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ে সার্বক্ষণিক কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে। তথ্য ও সহযোগিতার জন্য ০২৫৫১০১১১৫ নম্বর চালু রয়েছে। ফেনী, নোয়াখালী, চট্টগ্রাম, ব্রাহ্মণবাড়ীয়া, কুমিল্লা, হবিগঞ্জ ও লক্ষীপুর জেলার বন্যা উপদ্রুত এলাকায় সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী, কোষ্ট গার্ড ও বিজিবি জেলা প্রশাসনের সাথে সমন্বয় করে উদ্ধার কাজে নিয়োজিত রয়েছে। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ও সচিব বন্যা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণের জন্য বন্যা উপদ্রুত এলাকা সরেজমিনে পরিদর্শন করেছেন বলে জানানো হয়।
|
|
|
|
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস দেশের সাম্প্রতিক বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করতে বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থার (এনজিও) নেতৃবৃন্দের সঙ্গে আজ বৈঠকে বসছেন। বিকাল ৩টায় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। প্রধান উপদেষ্টার উপ-প্রেস সচিব অপূর্ব জাহাঙ্গীর বাসসকে বলেন,‘সাম্প্রতিক ভয়াবহ বন্যায় উদ্ধার কার্যক্রম ও ক্ষতিগ্রস্তদের ত্রাণ বিতরণ করছে অনেক এনজিও। মূলত তাদের সঙ্গে বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলার বিষয় নিয়ে আলোচনা করবেন প্রধান উপদেষ্টা।’ সাম্প্রতিক নজিরবিহীন বন্যায় দেশের বন্যা কবলিত ১১ জেলার প্রায় ৫০ লাখ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন।
|
|
|
|
ফিলিস্তিনী সংগঠন হামাস গাজায় যুদ্ধবিরতি পরিকল্পনার নতুন শর্তাবলী প্রত্যাখ্যান করেছে। কাতারে ইসারায়েলের সাথে দুদিনের আলোচনার পর যুক্তরাষ্ট্র যুদ্ধবিরতির নতুন এ প্রস্তাব উত্থাপন করলে শুক্রবার হামাস তা প্রত্যাখ্যান করে। গাজায় ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে ১০ মাসেরও বেশি সময় ধরে যুদ্ধ চলার প্রেক্ষিতে তা বন্ধে আন্তর্জাতিক চাপ তীব্র হয়েছে। এ প্রেক্ষাপটে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেছেন, “আগের যে কোন সময়ের তুলনায় আমরা এখন যুদ্ধবিরতির অনেক কাছাকাছি”। গত মে মাসে বাইডেন যুদ্ধবিরতির যে রূপরেখা তুলে ধরেছিলেন তা মিসর, কাতার ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থকারীরা চূড়ান্ত করার চেষ্টা করছে। কিন্তু বিগত কয়েক মাসের আলোচনাতেও যুদ্ধবিরতি ও জিম্মি মুক্তি নিয়ে বিস্তারিত কিছু তুলে ধরা সম্ভব হয়নি। এদিকে যুদ্ধবিরতিতে হামাসকে যেসব শর্ত অন্তর্ভূক্ত করতে চাপ দেয়া হচ্ছে তা হলো মিসর সীমান্ত বরাবর গাজায় ইসরায়েলি সৈন্যের উপস্থিতি, ইসরায়েলি জিম্মি মুক্তির বিনিময়ে ফিলিস্তিনী বন্দীদের ছেড়ে দেয়ার বিষয়ে তেলআবিবের ভেটো দেয়ার অধিকার এবং কিছু বন্দীকে গাজায় ফেরত না পাঠিয়ে বরং অন্যত্র নির্বাসন দেয়া। কিন্তু হামাস খুব দ্রুতই এসব শর্ত প্রত্যাখ্যান করেছে। যদিও ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু মধ্যস্থতাকারীদের প্রতি যুদ্ধবিরতির শর্তাবলী মেনে নিতে হামাসকে চাপ দেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। এদিকে ইসরায়েল গাজায় হামলা অব্যাহত রেখেছে। গত ৭ অক্টোবর শুরু করা এ হামলায় এ পর্যন্ত ৪০ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনী প্রাণ হারিয়েছে।
|
|
|
|
মাঙ্কিপক্সের লক্ষণ দেখা গেলে সন্দেহভাজনদের দ্রুততম সময়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হটলাইন ১৬২৬৩ ও ১০৬৫৫ নম্বরে যোগাযোগ করতে বলা হয়েছে। আজ শনিবার স্বাস্থ্য অধিদফতর থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, এমপক্স (মাঙ্কিপক্স) ভাইরাস দ্বারা সৃষ্ট এক সংক্রামক রোগ। এতে বেদনাদায়ক ফুঁসকুড়ি, লিম্ফ নোড ফুলে যাওয়া ও জ্বর হতে পারে। মাঙ্কিপক্স মধ্য আফ্রিকার কঙ্গো, বুরুন্ডি, রুয়ান্ডা, উগান্ডা, কেনিয়াসহ বিশ্বের অনেক দেশে ছড়িয়ে পড়েছে উল্লেখ করে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, আপনার শরীরে এর কোন লক্ষ্মণ দেখা দিলে অথবা আক্রান্ত ব্যক্তির সংস্পর্শে এলে অথবা সংক্রমিত দেশ ভ্রমণের ২১ দিনের মধ্যে এই লক্ষণ দেখা দিলে ১৬২৬৩, ১০৬৫৫ নম্বরে যোগাযোগ করুন। মাঙ্কিপক্সের সাধারণ লক্ষণগুলির মধ্যে রয়েছে- জ্বর, মাথাব্যথা, পেশী ব্যথা, পিঠে ব্যথা, দুর্বলতা, ফোলা লসিকা গ্রন্থি ও ত্বকের ফুসকুড়ি বা ক্ষত। লসিকা গ্রন্থিও ফোলাভাব মাঙ্কিপক্সের একটি বৈশিষ্ট্যযুক্ত লক্ষণ। এদিকে, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) বিশ্বব্যাপী এমপক্স বিস্তারের ব্যাপারে জরুরি স্বাস্থ্য সতর্কতা জারি করেছে। এতে বলা হয়েছে, মাঙ্কিপক্স একপ্রকার সংক্রামক রোগ। এর উপসর্গ অনেকটা জ্বর বা ফ্লু’র মতো। এ রোগে আক্রান্ত ব্যক্তির সংস্পর্শে এলে এমনকি শ্বাসপ্রশ্বাস থেকেও অন্য কেউ এতে সংক্রমিত হতে পারে। বাসস/সবি/বিকেডি/১৭২৫/-কেএটি
|
|
|
|
বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে আহতদের যাবতীয় চিকিৎসা ব্যয় সরকার বহন করবে। আজ শনিবার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সেবা বিভাগের সচিব মো.জাহাঙ্গীর আলম স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা বলা হয়েছে। এতে বলা হয়,‘বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে যারা আহত হয়েছেন,সরকারি হাসপাতালে তাদের বিনামূল্যে চিকিৎসাসহ যাবতীয় চিকিৎসা ব্যয় বহন করা হবে।’ এ ছাড়া বেসরকারি হাসপাতালগুলোকে আন্দোলনে আহতদের চিকিৎসা বিল গ্রহণ না করতে অনুরোধ জানানো হয়। প্রয়োজনে বেসরকারি হাসপাতালগুলোতে চিকিৎসাধীন আহত আন্দোলনকারীদের চিকিৎসা খরচ সরকার বহন করবে বলে বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়েছে। বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়,বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে হতাহতের ব্যাপারে অনুসন্ধান করতে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় ইতোমধ্যে একটি কমিটি গঠন করেছে। উক্ত কমিটির সদস্যগণ তাদের কর্মপন্থা নির্ধারণ করতে আগামীকাল রোবববার বৈঠকে মিলিত হবেন।
|
|
|
|
টেকসই ভবিষ্যত বিনির্মাণ ও নতুন বিশ্ব গড়ে তুলতে গ্লোবাল সাউথ এর কৌশলের কেন্দ্রবিন্দুতে তরুণ ও ছাত্রদের রাখার আহ্বান জানিয়েছেন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেছেন,তরুণরা নতুন বিশ্ব গড়ে তুলতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। তিনি গ্লোবাল সাউথ নেতৃবৃন্দের উদ্দেশ্য বলেন,‘আমাদের কৌশলগুলোর কেন্দ্রবিন্দুতে অবশ্যই তরুণ এবং ছাত্রদের রাখতে হবে, যারা গ্লোবাল সাউথের জনসংখ্যার উল্লেখযোগ্য অংশ। আমাদের জনসংখ্যার দুই তৃতীয়াংশ তরুণ এবং তারা সমাজের সবচেয়ে শক্তিশালী অংশ।’ শনিবার ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লিতে অনুষ্ঠিত ‘থার্ড ভয়েস অব গ্লোবাল সাউথ সামিট-২০২৪’ এর ইনঅগারাল লিডার্স অধিবেশনে ড. মুহাম্মদ ইউনূস একথা বলেন। তিনি ঢাকা থেকে ভার্চুয়ালি সম্মেলনে যুক্ত হন। অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান হিসাবে শপথ নেয়ার পর এটিই ড. ইউনূসের প্রথম বহুপক্ষীয় কোন অনুষ্ঠানে যোগদান। আফ্রিকা, লাতিন আমেরিকা, এশিয়া ও ক্যারিবিয়ান অঞ্চলের দেশ গ্লোবাল সাউথের অন্তর্ভুক্ত। মূলত এসব দেশে মাথাপিছু আয় উন্নত দেশের তুলনায় কম। প্রধান উপদেষ্টা বাংলাদেশের তরুণদের প্রশংসা করে বলেন, ‘বীর ছাত্রদের নেতৃত্বে বাংলাদেশে গত ৫ আগস্ট দ্বিতীয় বিপ্লব সংগঠিত হয়েছে। আর জনগণের যোগদানের মাধ্যমে এই বিপ্লব গণঅভ্যুত্থানে রূপ নেয়। যার ফলস্বরূপ গত ৮ আগস্ট অন্তর্বর্তীকালীন সরকার শপদ গ্রহণ করে।’ উল্লেখ্য, ছাত্রজনতার প্রবল আন্দোলনের মুখে গত ৫ আগস্ট স্বৈরাচার শেখ হাসিনা সরকারের পতন ঘটে এবং এর মাধ্যমে তার ১৫ বছরের দীর্ঘ শাসনের অবসান হয়। প্রধান উপদেষ্টা বলেন, বৈপ্লবিক পরিবর্তনের লক্ষ্য নিয়ে তরুণরা আন্দোলন করেছে এবং তাদের আকাক্সক্ষা দেশবাসীকে প্রভাবিত করেছে। এখন গণতন্ত্র ও মানবাধিকার নিশ্চিত করতে অর্থবহ সংস্কার জরুরি। যার মাধ্যমে ভঙ্গুর হয়ে পড়া রাষ্ট্রের সকল প্রতিষ্ঠানকে পুনরুদ্ধার করা হবে। তিনি বলেন,বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকার অন্তর্ভুক্তিমূলক এবং বহুত্ববাদী গণতন্ত্রে উত্তরণ এবং একটি পরিবেশ তৈরি করতে প্রতিশ্রতিবদ্ধ। যার মাধ্যমে অবাধ, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহমূলক নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে পারে।
গণঅভ্যুত্থানের পরে বাংলাদেশে নানা পরিবর্তন ঘটছে উল্লেখ করে শান্তিতে নোবেল বিজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূস গ্লোবাল সাউথের নেতৃবৃন্দকে ঢাকা সফরের আমন্ত্রণ জানিয়ে বলেন,‘তরুণ ছাত্র এবং ১২ থেকে ১৩ বছর বয়সী শিশুরা ৪০০ বছরের শহরের দেয়ালে একটি নতুন গণতান্ত্রিক বাংলাদেশের ছবি আঁকছে। এর জন্য কোনো সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা বা নির্দেশনা তাঁদের নেই। কারোর পক্ষ থেকে বাজেট সমর্থনও নেই। এটি দ্বিতীয় বিপ্লবের আকাঙ্খার প্রতি তাদের আবেগ এবং অঙ্গীকারের বহিঃপ্রকাশ মাত্র।’ তিনি বলেন, বাংলাদেশের তরুণদের দেয়ালের লেখা পড়ে যেকেউ বুঝবেন, তারা কী স্বপ্ন দেখছে। তরুণদের স্বপ্ন পূরণ করাই আমাদের প্রধান কাজ বলে তিনি দূঢ়তার সাথে উল্লেখ করেন। প্রধান উপদেষ্টা বলেন, বিশ্বব্যাপী তরুণরা আলাদা, তারা সক্ষম এবং প্রযুক্তিগতভাবে আগের প্রজন্মের তুলনায় অনেক এগিয়ে। তিনি বলেন, ‘তারা সব অসম্ভবকে সম্ভব করতে পারে। তারা উদ্যোক্তা। কিন্তু তারা চাকরী চায়, কারণ দেশে দেশে এমন একটি শিক্ষা ব্যবস্থা রয়েছে, যা তাদেরকে চাকরির জন্য প্রস্তুত করে। অথচ সকল মানুষের মধ্যে সৃজনশীলতা রয়েছে।’ কেবলমাত্র চাকরিপ্রার্থী তৈরি করে এমন শিক্ষা ও আর্থিক ব্যবস্থা নতুনভাবে ঢেলে সাজানোর আহবান জানান অধ্যাপক ইউনূস। তৃতীয়বারের মত গ্লোবাল সাউথ সম্মেলনের আয়োজন করেছে ভারত। এবারের সম্মেলনে রাষ্ট্র বা সরকারপ্রধানদের নিয়ে উদ্বোধনী অধিবেশনের প্রতিপাদ্য এবং মূল সম্মেলনের প্রতিপাদ্য হলো-‘অ্যান এমপাওয়ারড গ্লোবাল সাউথ ফর এ সাসটেইনেবল ফিউচার’। রাষ্ট্র বা সরকারপ্রধান পর্যায়ে অনুষ্ঠিত উদ্বোধনী অধিবেশনটি সঞ্চালনা করেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। ভারত ২০২৩ সালের ১২ ও ১৩ জানুয়ারি প্রথম ভয়েস অব গ্লোবাল সাউথ সামিট (ভিওজিএসএস) এবং একই বছরের ১৭ নভেম্বর দ্বিতীয় ভয়েস অব গ্লোবাল সাউথ সামিটের আয়োজন করেছিল। দুটি সামিটই ভার্চ্যুয়াল ফরম্যাটে আয়োজন করা হয়। শীর্ষ সম্মেলনের পূর্ববর্তী উভয় আয়োজনে গ্লোবাল সাউথ থেকে শতাধিক দেশ অংশ নিয়েছিল।
|
|
|
|
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বুধবার আফ্রিকায় এমপক্সের ব্যাপক বিস্তারের জন্য বিশ্বব্যাপী জনস্বাস্থ্য জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছে। সংস্থা ক্রমবর্ধমান পরিস্থিতির জন্য তারা সর্বোচ্চ সম্ভাব্য বিপদের আশঙ্কা করছে। ডাব্লিউএইচও জানায়,পূর্বে মাঙ্কিপক্স নামে পরিচিত এমপক্স একটি ভাইরাল রোগ যা মানুষ এবং সংক্রামিত প্রাণীদের মধ্যে সহজেই ছড়িয়ে পড়তে পারে। এটি ঘনিষ্ঠ যোগাযোগের মাধ্যমে যেমন স্পর্শ, চুম্বন বা যৌনতার পাশাপাশি চাদর,পোশাক এবং সূঁচের মতো দূষিত পদার্থের মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়তে পারে। ডেমোক্রেটিক রিপাবলিক অফ কঙ্গোতে সংক্রমণ বৃদ্ধি এবং আশেপাশের দেশগুলোতে ছড়িয়ে পড়ায় উদ্বিগ্ন ডাব্লিউএইচও প্রাদুর্ভাব পর্যালোচনার জন্য দ্রুত বিশেষজ্ঞদের একটি সভা আহ্বান করেছে। ডব্লিউএইচও প্রধান টেড্রোস আধানম গেব্রেয়েসাস এক সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, ‘আজ, জরুরী কমিটি বৈঠক করেছে এবং আমাকে পরামর্শ দিয়েছে যে তাদের দৃষ্টিতে জনস্বাস্থ্য পরিস্থিতি আন্তর্জাতিকভাবে উদ্বেগজনক। জনস্বাস্থ্য বিষয়ে এই উদ্বেগ ও একটি জনস্বাস্থ্য জরুরী পরামর্শ আমি গ্রহণ করেছি।’ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার অধীনে পিএইচইআইসি (পাবলিক হেলথ ইমার্জেন্সি অব ইন্টারন্যাশনাল কনসার্ন) এই রোগের সম্ভাব্য বিস্তার রোধে জনস্বাস্থ্যের ঝুঁকি এড়াতে একটি সমন্বিত আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়ার প্রয়োজনীয়তা বিবেচনায় স্বাস্থ্য জরুরি অবস্থা ঘোষণা করা হয়। একটি পিএইচইআইসি আন্তর্জাতিক স্বাস্থ্য প্রবিধানের অধীনে সর্বোচ্চ স্তরের সতর্কতা,যা ১৯৬টি দেশের জন্য আইনত বাধ্যতামূলক। টেড্রস বলেছেন,‘পূর্ব ডিআরসিতে এমপক্সের একটি নতুন ক্লেডের সনাক্তকরণ এবং দ্রুত বিস্তার, প্রতিবেশী দেশগুলো যেখানে এর আগে সংক্রমণের রিপোর্ট পাওয়া যায়নি সে সব দেশে এমপক্স সনাক্ত হয়েছে এবং আফ্রিকা এবং তার বাইরে আরও ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা খুবই উদ্বেগজনক।’ তিনি বলেন,‘এটা স্পষ্ট যে এই প্রাদুর্ভাব বন্ধ করতে এবং জীবন বাঁচাতে একটি সমন্বিত আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া অপরিহার্য। এটি এমন কিছু যা আমাদের সকলকে উদ্বিগ্ন করে।’
|
|
|
|
|
|
|