বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেছেন, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন করার কোনো আগ্রহ সরকারের নেই। আর সে জন্য গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচন স্থগিত করেছে। গতকাল সোমবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবে বাংলাদেশ ইসলামিক পার্টির প্রয়াত চেয়ারম্যান আবদুল মোবিনের তৃতীয় মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা ও দোয়া মাহফিলে নজরুল এসব কথা বলেন। বিএনপি নেতা বলেন, এ মুহূর্তে বড় খবর হলো, গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচন স্থগিত হয়ে গেছে। স্থগিতের জন্য রিট করেছেন আওয়ামী লীগেরই একজন লোক। আর এই রিটের বিরুদ্ধে নির্বাচন কমিশন কোনো জোরালো ব্যবস্থা নেয়নি। বরং তারা সহযোগিতা করেছে যেন রিট গৃহীত হয় এবং নির্বাচন স্থগিত হয়। আওয়ামী লীগ যেটা চায়, বর্তমান নির্বাচন কমিশন সেটায় সহযোগিতা করে। নজরুল ইসলাম বলেন, ঢাকা উত্তর ও গাজীপুর সিটি করপোরেশন স্থগিত হওয়া একই সূত্রে গাঁথা। নির্বাচনে আওয়ামী লীগের জেতার কোনো সুযোগ নেই দেখেই তা স্থগিত করা হয়েছে। গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচন স্থগিত হওয়ায় আমাদের নেতারা এখন খুলনায় যাবেন। বিএনপির এ নেতা বলেন, মানুষের মধ্যে এখন গণজোয়ার শুরু হয়েছে। এখন হয়তো এই জনজোয়ার দেখে পরাজয়ের ভয়ে খুলনার নির্বাচনও স্থগিত করতে পারে। বিএনপির স্থায়ী কমিটির এ সদস্য বলেন, সিটি নির্বাচনে বিএনপি অংশ নেওয়ায় সরকার নিজেদের পরাজয় দেখে নির্বাচন স্থগিত করেছে। এখন দেশের মানুষ ভাবছে, বিএনপি জাতীয় নির্বাচনে অংশ নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিলে সেটাও স্থগিত হয়ে যাবে কি না। খালেদা জিয়ার চিকিৎসার বিষয়ে নজরুল বলেন, ভ্রান্ত ও বানানো নথিপত্র দিয়ে সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াকে কারাগারে রাখা হয়েছে। হাইকোর্ট খালেদা জিয়াকে জামিন দিয়েছেন। আর সেই জামিন ঠিকমতো দেওয়া হলো কি না, সেটা দেখার জন্য সুপ্রিম কোর্ট লম্বা ডেট ঠিক করল। এসবের কারণ কী, কী চান আপনারা? আপনারা কি চান খালেদা জিয়া পঙ্গু হয়ে যাক, দৃষ্টিহীন হয়ে যাক? এ সময় বিএনপি নেতা বলেন, খালেদা জিয়ার প্রতি সরকার নিষ্ঠুর আচরণ করছে। আগামীকাল (মঙ্গলবার) তাঁর জামিনের শুনানি আছে। এখানে জামিন পেলেও আরেকটা মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে আটকে রাখতে পারে। কারণ সরকার চায় না খালেদা জিয়া কোনোভাবে মুক্তি পাক। নজরুল ইসলাম বলেন, খালেদা জিয়া আগে ছিলেন দেশনেত্রী, আজকে বাংলাদেশের মানুষ তাকে মা বলে। মায়ের পরে কোনো সম্মান হয় না। তাঁরা মুক্তির জন্য কঠোর আন্দোলন করুন, সরকারের পতন করুন এটা আজ গণদাবিতে পরিণত হয়ে যাচ্ছে। ইসলামিক পার্টির প্রয়াত চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট আবদুল মোবিন সম্পর্কে বিএনপি নেতা বলেন, তিনি একজন হোমিও ডাক্তার ছিলেন। আবার ছিলেন রজনীতিক। যখন যে পেশায় আত্মনিয়োগ করেছেন, তাঁর সবই জনকল্যাণে। গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় কাজ করেছেন। এর জন্য তাঁকে কারাবরণও করতে হয়েছে। কিন্তু তিনি পিছপা হননি। ইসলামিক পার্টির চেয়ারম্যান আবু তাহের চৌধুরীর সভাপতিত্বে আরো উপস্থিত ছিলেন এনপিপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মঞ্জুর হোসেন ঈসা, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব শওকত হোসেন চৌধুরী জীবন, মা. শওকত আমিন, মক্কা গ্রুপের চেয়ারম্যান লায়ন এম এ রশিদ।