এ বছর ‘বিশ্ব জনসংখ্যা দিবস’-এর স্লোগান—‘পরিবার পরিকল্পনা মানবাধিকারের অঙ্গ’। আর সেই স্লোগানকেই হাতিয়ার করে ভারতের মিজোরামের সবচেয়ে বড় ছাত্র ও নাগরিক সংগঠন ইয়ং মিজো অ্যাসোসিয়েশন (ওয়াইএমএ) রাজ্যবাসী মিজোদের বেশি করে সন্তানের জন্ম দেওয়ার ডাক দিল! পাশাপাশি, বেশি সন্তানের জন্ম দিলে দম্পতিদের জন্য নগদ পুরস্কার ঘোষণা করেছে প্রভাবশালী গির্জাও।
পড়শি অসমে নতুন জনসংখ্যা নীতি ঘোষণা করা হয়েছে। বলা হয়েছে, দুইয়ের বেশি সন্তান হলেই খোয়াতে হবে সরকারি চাকরি। দাঁড়ানো যাবে না ভোটে। মিলবে না কোনও সরকারি সুবিধা। কিন্তু পার্শ্ববর্তী মিজোরামে ছবিটা ভিন্ন। রাজ্য সরকারের হিসেবে, গত দশকে মিজোরামে জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার ছিল ২৯ দশমিক ১৮ শতাংশ। কিন্তু চলতি দশকে এখনও পর্যন্ত তা কমে ২৩ দশমিক ৪৮ শতাংশ হয়েছে।
অথচ বিশ্বের সর্ববৃহৎ পরিবারের বাস মিজোরামে। সেরচিপ জেলার বাকতাওং লাংনুয়াম গ্রামের বাসিন্দা ৭৪ বছর বয়সী চানা পাওলের ৩৯ জন স্ত্রীর ৯৪ জন ছেলেমেয়ে। নাতি-পুতি মিলিয়ে পরিবারের সদস্য সংখ্যা ১৮০ ছাড়িয়েছে। কিন্তু ওয়াইএমএর মতে, সবাইকেই সমান ‘উদ্যোগী’ হতে হবে।
ওয়াইএমএর দাবি, সন্তানধারণের সিদ্ধান্ত দম্পতির ব্যক্তিগত। তার ‘মানবাধিকার’-এ অন্য কারও হস্তক্ষেপ অন্যায়। খ্রিস্টান প্রধান মিজোরামে ওয়াইএমএর এমন ব্যাখ্যায় বিস্মিত বিভিন্ন মহল। গির্জার প্রভাব রয়েছে ওয়াইএমএর উপর।
ওয়াইএমএর হিসেবে, মিজোরামে জনসংখ্যা ১২ লক্ষ। প্রতি বর্গকিলোমিটারে জনঘনত্ব মাত্র ৫২। জাতীয় গড় ৩৮২। সংগঠনের সভাপতি ভানলালরুয়াতা বলেন, “মিজোদের সংখ্যা বাড়ানো খুব দরকার। এত কম মানুষ থাকলে কোনও ক্ষেত্রেই মিজোদের উন্নতি হবে না।”
মিজোরাম প্রেসবিটেরিয়ান গির্জা ইতিমধ্যেই জননিয়ন্ত্রণ নীতির বিরোধিতা করে তাকে ‘ঈশ্বরবিরোধী’ আখ্যা দিয়েছে। দক্ষিণ মিজোরামের ব্যাপটিস্ট গির্জা চতুর্থ সন্তানের জন্ম হলে চার হাজার ও পঞ্চম সন্তান জন্মালে বাবা-মাকে পাঁচ হাজার টাকা নগদ পুরস্কার দেবে।—আনন্দবাজার