রাজধানীর গুলশানে হলি আর্টিজান বেকারিতে জঙ্গি হামলা মামলায় সাতজনের ফাঁসির রায়কে জঙ্গিবাদ প্রশমনের ক্ষেত্রে যুগান্তকারী বলে মনে করেন এটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম।
রায় পরবর্তী এক প্রতিক্রিয়ায় তিনি গণমাধ্যমকে বুধবার এ কথা বলেন। রায় ঘোষণার পর নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম আরও বলেন, জঙ্গিবাদ নির্মূলে একটি সামাজিক আন্দোলন দরকার।
তিনি বলেন, আমাদের দেশ যে জঙ্গিবাদ উৎপাটনের ক্ষেত্রে আন্তরিক এবং দ্রুত পদক্ষেপ নিতে সক্ষম এই মামলার রায় থেকে এটি প্রমাণ হচ্ছে।
মাহবুবে আলম বলেন, হলি আর্টিজানে নৃশংস হামলার ঘটনাটি আমাদের দেশের ভাবমূর্তি অনেকটা ম্লান করেছিলো। এ রায়ের ফলে আমাদের সে ভাবমূর্তি উজ্জ্বল হবে। আমাদের দেশে জঙ্গিবাদ নির্মূলে এবং আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় সরকারের যে তৎপরতা এটি প্রমাণিত হয়েছে।
মামলার পরবর্তী কার্যক্রম সম্পর্কে এটর্নি জেনারেল বলেন, এ রায়ের পরে ডেথ রেফারেন্স (মৃত্যুদন্ডাদেশ অনুমোদনের জন্য) হিসাবে মামলাটি হাইকোর্টে আসবে। তখন আমরা আমাদের সবরকম প্রস্তুতি নিয়ে এ মামলাটি পরিচালনা করার চেষ্টা করবো। যাতে জঙ্গিবাদের ব্যাপারে আদালত যে রায় দিয়েছেন, সে রায়টি বহাল থাকে।
জঙ্গিবাদের বিষয়ে মাহবুবে আলম বলেন, অন্যান্য যারা জঙ্গিবাদে সম্পৃক্ত হচ্ছে এই রায় তাদের কাছে একটা বার্তা। দুঃখজনক ব্যাপার যারা বিত্তবান ঘরের ছেলে তারাই ভালো স্কুলে পড়াশোনা করছে তারাই এসব জঙ্গিবাদের সঙ্গে যুক্ত হচ্ছে। সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে জঙ্গিবাদ বিরোধী সামাজিক আন্দোলন গড়ে তোলা দরকার বলে মনে করেন এটর্নি জেনারেল।
এর আগে আজ হলি আর্টিজান রেস্তোরাঁয় জঙ্গি হামলা মামলার রায়ে ৭ জনকে মৃত্যুদণ্ড এবং একজনকে খালাস দিয়েছেন ঢাকার একটি আদালত। ঢাকার সন্ত্রাসবিরোধী বিশেষ ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. মজিবুর রহমান জনাকীর্ণ আদালতে এ রায় ঘোষণা করেন। রায়ে মামলার ৮ আসামির মধ্যে ৭ জনকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হলো।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন জাহাঙ্গীর হোসেন ওরফে রাজীব গান্ধী, আসলাম হোসেন র্যাশ, হাদিসুর রহমান, রাকিবুল হাসান রিগেন, মো. আবদুস সবুর খান, শরিফুল ইসলাম খালেদ ও মামুনুর রশিদ রিপন। মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত প্রত্যেককে ৫০ হাজার টাকা করে জরিমানাও করা হয়েছে। মামলায় অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় অপর আসামি মিজানুর রহমান ওরফে বড় মিজানকে খালাস দেওয়া হয়েছে।
জঙ্গিরা ২০১৬ সালের ১ জুলাই রাতে গুলশানের হলি আর্টিজানে হামলা চালিয়ে বিদেশি নাগরিকসহ ২২ জনকে হত্যা করে। তাদের গুলিতে দুই পুলিশ কর্মকর্তাও নির্মমভাবে নিহত হন। পরে সেনা-কমান্ডো অভিযানে ঘটনাস্থলে পাঁচ জঙ্গি নিহত হয়। এ ব্যাপারে গুলশান থানায় সন্ত্রাসবিরোধী আইনে মামলা করা হয়। সব বিচারিক প্রক্রিয়া শেষে আজ ওই মামলার রায় ঘোষণা করেন আদালত। বাসস