দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস জানিয়েছেন, আগামী শনিবার (৪ জুলাই) ভোর ৬টা থেকে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ওয়ারী এলাকা লকডাউন করা হবে। ২৫ জুলাই পর্যন্ত মোট ২১ দিন লকডাউন কার্যকর থাকবে।
মঙ্গলবার (৩০ জুন) বিকালে দক্ষিণ সিটির নগরভবনে লকডাউন বিষয়ক কেন্দ্রীয় ব্যবস্থাপনা কমিটির দ্বিতীয় সভা শেষে এক ব্রিফিংয়ে এসব তথ্য জানান তিনি ।
মেয়র তাপস জানান, এখানে সার্বিকভাবে সবকিছুই বন্ধ থাকবে, শুধু ওষুধের দোকান খোলা থাকবে। দৈনন্দিন নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্য ই-কমার্স অ্যাসোসিয়েশনের সঙ্গে সমন্বয় করে সরবরাহের ব্যবস্থা করা হবে। ২৫ জুলাই পর্যন্ত ২১ দিন লকডাউন বাস্তবায়ন করবো।
মেয়র আরো বলেন, যাতায়াত সুবিধার জন্য ওয়ারী এলাকার দুটি পথ খোলা থাকবে। বাকি পথগুলো বন্ধ করে দেওয়া হবে। সেখানে একটি নিয়ন্ত্রণ কক্ষ খোলা হবে। নমুনা সংগ্রহ করার জন্য বুথ থাকবে এবং সিটি করপোরেশনের মহানগর জেনারেল হাসপাতালে আক্রান্তদের জন্য আইসোলেশন কেন্দ্র স্থাপন করা হবে।
তিনি বলেন, ওয়ারী এলাকায় সাধারণ রোগীদের চিকিৎসা নিশ্চিত করার জন্য সব ধরনের ব্যবস্থা থাকবে। এছাড়া নিত্য প্রয়োজনীয় খাদ্য সামগ্রী সরবরাহের জন্য মিনাবাজার ও স্বপ্নসহ অন্যান্য প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ করে ব্যবস্থা করা হবে। আর স্বাস্থ্য অধিদফতর থেকে যেসব এসওপি দেওয়া হয়েছে সেগুলো যথাযথভাবে পালন করা হবে।
ডিএসসিসির আওতাধীন এলাকায় রেড জোন হিসেবে চিহ্নিত অঞ্চলগুলোর মধ্যে প্রথম লকডাউন হচ্ছে ওয়ারীর কয়েকটি সড়ক। যা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন এলাকার ৪১ নম্বর ওয়ার্ডের মধ্যে পড়েছে। লকডাউন আওতায় থাকবে- টিপু সুলতান রোড, জাহাঙ্গীর রোড, ঢাকা-সিলেট হাইওয়ে (জয়কালী মন্দির থেকে বলধা গার্ডেন)। আর ইনার রোডের বর্ণনায় বলা হয়েছে লালমিনি রোড, হরে রোড, ওয়ার রোড, রানকিন রোড ও নওয়াব রোড।
এর আগে রেড জোন ওয়ারী লকডাউন করতে ঢাকা সিটি করপোরেশনকে চিঠি দিয়েছে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়। সোমবার (২৯ জুন) সন্ধ্যায় এ চিঠি পাঠানো হয়। বিষয়টি সাংবাদিকদের নিশ্চিত করেছেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শাহ মো. এমদাদুল হক।
স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের উপসচিব নাজনীন ওয়ারেস স্বাক্ষরিত ওই চিঠিতে বলা হয়েছে, স্বাস্থ্য অধিদফতরের কেন্দ্রীয় কারিগরি গ্রুপের গত ২২ জুন তারিখে অনুষ্ঠিত সভায় গৃহীত সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ওয়ারী এলাকার নিম্ন বর্ণিত অংশকে রেড জোন হিসেবে বাস্তবায়নের জন্য স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য সেবা বিভাগ হতে অনুরোধ করা হয়েছে।
চিঠিতে ওয়ারীর লকডাউন এলাকার আউটার রোডের বর্ণনায় বলা হয়েছে, টিপু সুলতান রোড, জাহাঙ্গীর রোড, ঢাকা-সিলেট হাইওয়ে (জয়কালী মন্দির থেকে বলধা গার্ডেন)। আর ইনার রোডের বর্ণনায় বলা হয়েছে লালমিনি রোড, হরে রোড, ওয়ার রোড, রানকিন রোড ও নওয়াব রোড।
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শাহ মো. এমদাদুল হক সাংবাদিকদের বলেন, আমরা বিকাল সাড়ে ৫টার পর আমাদের ৪১ নম্বর ওয়ার্ড ওয়ারীকে লকডাউন করার জন্য স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় থেকে একটি চিঠি পেয়েছি। যখন চিঠিটা পেয়েছি তখন অফিস বন্ধ হয়ে গেছে। তাই চিঠির বিষয়ে পরবর্তী কার্যক্রম আগামীকাল গ্রহণ করা হবে।
তিনি আরও বলেন, ওয়ারীকে লকডাউন করার জন্য আমাদের প্রয়োজনীয় সব প্রস্তুতি সম্পন্ন রয়েছে। আমরা আগেও একটি লকডাউন বিষয়ক সভা করেছি। এই চিঠি পাওয়ার পর দ্বিতীয় সভা ডাকা হতে পারে। আগামীকাল মেয়র মহোদয় এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত দেবেন।