স্ত্রী আমিনা বশীরের কবরের পাশে চিরনিদ্রায় শায়িত হলেন প্রখ্যাত শিল্পী, ভাষা সংগ্রামী মুর্তজা বশীর। শনিবার (১৫ আগস্ট) বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে বনানী কবরস্থানে মুর্তজা বশীরের দাফন সম্পন্ন হয়েছে। শিল্পীর পারিবারিক বন্ধু আলোকচিত্রী মোহাম্মদ আসাদ এ তথ্য জানান।
তিনি জানান, দুপুর ১টায় এভারকেয়ার হাসপাতালে রহমতে আলম সমাজ সেবা সংস্থার ব্যবস্থাপনায় করোনা স্বাস্থ্যবিধি মেনে তার মরদেহের গোসল সম্পন্ন করা হয়। এরপর মরদেহ মণিপুরি পাড়ায় তার নিজ বাসায় নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে হাউজিং সোসাইটির ব্যবস্থাপনায় তার জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। বাদ আসর বনানী কবরস্থানে তার দাফন সম্পন্ন হয়।
মুর্তজা বশীর দীর্ঘদিন ধরেই হৃদরোগ, ফুসফুস ও কিডনি জটিলতায় ভুগছিলেন।বৃহস্পতিবার (১২ আগস্ট) রাতে তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে হাসপাতালে নেওয়া হয়।
তিনি সেখানে আইসিইউতে চিকিৎসাধীন ছিলেন। শুক্রবার তার করোনা পরীক্ষা করা হলে ফলাফল পজিটিভ আসে। শুক্রবার (১৪ আগস্ট) থেকে তার পালস পাওয়া যাচ্ছিল না। পরে শনিবার সকাল ৯টা ১০ মিনিটে চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
চিত্রশিল্পী মুর্তজা বশীর ভাষাবিদ ড. মুহাম্মদ শহীদুল্লাহর ছেলে। তিনি ১৯৩২ সালের ১৭ আগস্ট ঢাকায় জন্মগ্রহণ করেন।
৮৮ বছর বয়সী এ চিত্রশিল্পীকে এর আগেও বিভিন্ন শারীরিক জটিলতা নিয়ে একাধিকবার হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে হয়েছে।
চিত্রকলায় গুরুত্বপূর্ণ অবদানের জন্য ১৯৮০ সালে একুশে পদক পান মুর্তজা বশীর। একই কাজে স্বাধীনতা পুরস্কার পান ২০১৯ সালে। কর্মজীবনে তিনি দীর্ঘদিন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা বিভাগের অধ্যাপক ও চেয়ারম্যান হিসেবে কর্মরত ছিলেন।
বাংলাদেশে বিমূর্ত ধারার চিত্রকলার অন্যতম পথিকৃৎ মুর্তজা বশীরের ‘দেয়াল’, ‘শহীদ শিরোনাম’, ‘পাখা’, ‘রক্তাক্ত ২১শে’ শিরোনামের চিত্রকর্মগুলো বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। পেইন্টিং ছাড়াও ম্যুরাল, ছাপচিত্রসহ চিত্রকলার বিভিন্ন মাধ্যমে কাজ করেছেন তিনি। এছাড়া লিখেছেন বই এবং গবেষণা করেছেন মুদ্রা ও শিলালিপি নিয়েও।