পবিত্র মাহে রমজান শুরু হয়েছে গতকাল শুক্রবার থেকে। এদিন পবিত্র জুমার নামাজের দিন। সকাল থেকে থেমে থেমে বৃষ্টি হলেও তা উপেক্ষা করেই রমজানের প্রথম জুমার নামাজের জামাতে মসজিদে মসজিদে ছিল মানুষের ঢল। নামাজ শেষে দেশের শান্তি ও সমৃদ্ধি কামনা করে মোনাজাত করা হয়। রহমতের ১০ দিনের প্রথম জুমায় রোজাদার মুসল্লিরা বেশ আগে থেকেই উপস্থিত হন মসজিদে। রাজধানীর প্রতিটি মসজিদই নামাজের বেশ আগেই পূর্ণ হয়ে যায় এবং বাইরের রাস্তা বা সংলগ্ন স্থানে নামাজ আদায় করতে হয় বিপুলসংখ্যক মুসল্লিকে। জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররম, হাইকোর্ট মাজার মসজিদ, কারওয়ান বাজার জামে মসজিদ, যাত্রাবাড়ী, মগবাজার, শেওড়াপাড়া মসজিদসহ রাজধানীর ছোট-বড় সব মসজিদে রমজানের প্রথম জুমায় ছিল মানুষের উপচেপড়া ভিড়। এ সময় বিভিন্ন রাস্তায় যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। বৃষ্টির কারণে মসজিদের আশপাশে ও বারান্দা ভেজা থাকায় বায়তুল মোকাররম মসজিদের ভেতর স্থান সংকুলান না হওয়ায় জুমার নামাজে আগত মুসল্লিরা রাস্তার ওপরই জায়নামাজ, পলিথিন ও কাগজ বিছিয়ে নামাজ আদায় করেন। জুমার বয়ানে রোজার গুরুত্ব তুলে ধরা হয়। জুমার নামাজ শেষে মহান রাব্বুল আলামিনের দরবারে দেশ ও জাতির কল্যাণসহ বিশ্ব মুসলিম উম্মাহর শান্তি কামনায় বিশেষ মোনাজাতে শরিক হন মুসল্লিরা। নামাজ পড়তে আসা শরিফুল ইসলাম বলেন, পবিত্র মাহে রমজানের প্রথম জুমার নামাজ। তাই যাত্রাবাড়ী থেকে বায়তুল মোকাররমে নামাজ পড়ে এসেছি। নামাজ শেষে মা-বাবা এবং আত্মীয়স্বজনের জন্য দোয়া করেছি। বায়তুল মোকাররমের উত্তর গেটে নামাজ পড়া মেহেদী হাসান নামের এক ছাত্র বলেন, রমজানে বেশি সওয়াবের আশায় বায়তুল মোকাররমে নামাজ পড়েছি। সবাই যেন সুস্থ থাকে, সে জন্য দোয়া করেছি। বায়তুল মোকাররম মসজিদের উত্তর ও দক্ষিণ গেটে অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে জুমার নামাজকে ঘিরে আশপাশের এলাকায় আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বিপুলসংখ্যক সদস্য মোতায়েন করা হয়। জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমে কয়েক হাজার নারীসহ ৪০ হাজারেরও বেশি মুসল্লি একসঙ্গে জুমার নামাজ আদায় করেন। নামাজ শেষে দেশের শান্তি ও সমৃদ্ধি কামনায় মোনাজাত করা হয়। দুপুর সোয়া ১২টায় আজানের আগেই জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমে জুমার নামাজে শরিক হতে মুসল্লিরা আসতে শুরু করেন। দুপুর পৌনে ১টায় জাতীয় মসজিদ মূল ভবনের নিচতলা থেকে সাততলা কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে যায়। দক্ষিণ প্লাজা, পূর্ব প্লাজা এবং উত্তর গেটে পল্টনের রাস্তায় বসে মুসল্লিরা নামাজ আদায় করেন। রাস্তায়ও নামাজ আদায় করতে দেখা গেছে। রাস্তার ওপরই জায়নামাজ, পলিথিন ও কাগজ বিছিয়ে নামাজ আদায় করেন। জাতীয় মসজিদের গ্রাউন্ড ফ্লোরে নারী মুসল্লিরা জুমার নামাজ আদায় করেন। রমজানের তাৎপর্য ও গুরুত্ব তুলে ধরে জুমার খুতবার পূর্বে বায়তুল মোকাররমের খতিব মিজানুর রহমান জুমার নামাজ পড়ান। নামাজ শেষে তিনি দেশবাসীর কল্যাণ কামনায় দোয়া করেন। তিনি বলেন, পবিত্র রমজান হচ্ছে রহমত, মাগফিরাত ও নাজাতের মাস। পবিত্র এই মাসে এমন একটি রজনী রয়েছে, যা হাজার মাসের চেয়েও উত্তম। এই মাস মুসলমানদের ধৈর্যধারণের উত্তম শিক্ষা দেয়। রমজানের শিক্ষা কাজে লাগিয়ে বিশ্ব মুসলিমকে ভ্রাতৃত্বের বন্ধনে আবদ্ধ হতে হবে।