যথাযথ ধর্মীয় ভাবগম্ভীর পরিবেশে এবাদত-বন্দেগীর মধ্যদিয়ে সারাদেশের মুসলিম স¤প্রদায় গত রোববার সৌভাগ্যের রজনী শবেবরাত উদযাপন করেছে। ধর্মপ্রাণ মুসলমানগণ মহান আল্লাহর রহমত ও নৈকট্য লাভের আশায় নফল নামাজ আদায়, কোরআন তেলাওয়াত, জিকির, ওয়াজ ও মিলাদ মাহফিলসহ এবাদত-বন্দেগীর মধ্য দিয়ে সারারাত অতিবাহিত করেন। মহিমান্বিত এ রজনীতে মুসলিম উম্মাহর সুখ, শান্তি ও সমৃদ্ধি কামনা করে বিশেষ মোনাজাত ও দোয়া করা হয়। সৌভাগ্যের এ রজনীতে রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশে নারী-পুরুষ-শিশু-বৃদ্ধসহ সর্বস্তরের মুসলমানগণ কোরআন তেলাওয়াত, নফল নামাজ আদায় করেন। বিশেষ মোনাজাতের মধ্য দিয়ে মহান সৃষ্টিকর্তা আল্লাহতায়ালার সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য এবাদত-বন্দেগীতে রাতটি অতিবাহিত করেন। বাসাবাড়ি ছাড়াও মসজিদে-মসজিদে সারারাত নফল নামাজ, পবিত্র কোরআন তেলাওয়াত, ওয়াজ মাহফিল, অন্যান্য এবাদত-বন্দেগী ও মোনাজাত অনুষ্ঠিত হয়। ঐতিহ্য অনুসারে বাড়িতে-বাড়িতে তৈরি রুটি হালুয়াসহ বিভিন্ন খাদ্যসামগ্রী আত্মীয়-স্বজনদের বাড়িতে এবং দুস্থ-গরীবদের মাঝে বিতরণ করা হয়। রাতব্যাপী এবাদত, বন্দেগী, জিকির ছাড়াও এই পবিত্র রাতে মুসলমানগণ মৃত পিতা-মাতা ও আত্মীয়-স্বজনসহ প্রিয়জনদের কবর জিয়ারত করেন। রাজধানী ঢাকার কবরস্থানগুলোতেও মুসল্লীদের উপচেপড়া ভিড় ছিল। ঢাকায় ইসলামিক ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদে রাতভর বিভিন্ন অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এতে ওয়াজ মাহফিল, কোরআন তেলাওয়াত, মিলাদ মাহফিল, হামদ্, না’ত, নফল ও তাহাজ্জুদের নামাজ এবং আখেরী মোনাজাতে হাজার হাজার মানুষ অংশ নেন। এ ছাড়া রাজধানীরসহ সারাদেশের মসজিদে এশার নামাজের পর থেকেই দফায় দফায় ওয়াজ মাহফিল, জিকির ও মিলাদের পর বাদ ফজর দেশ, জাঁতি ও মুসলিম উম্মাহর জন্য আল্লাহর রহমত কামনায় মোনাজাতের মধ্য দিয়ে পবিত্র লাইলাতুল বরাত উদযাপিত হয়। পবিত্র শবেবরাত উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বাণী দেন। বাণীতে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী পবিত্র শবেবরাত উপলক্ষে দেশের এবং সারাবিশ্বের মুসলমানদের প্রতি শুভেচ্ছা ও মোবারকবাদ জানিয়েছেন। তাঁরা মুসলিম উম্মাহসহ সমগ্র জাতির শান্তি, অগ্রগতি ও সমৃদ্ধি কামনা করেছেন। বাংলাদেশ টেলিভিশন, বাংলাদেশ বেতারসহ বিভিন্ন বেসরকারি টিভি চ্যানেল ও রেডিও এ উপলক্ষে ধর্মীয় নানা অনুষ্ঠান স¤প্রচার করে। দিবসটির তাৎপর্য তুলে ধরে জাতীয় দৈনিকগুলোতে বিশেষ নিবন্ধ প্রকাশিত হয়। মুসল্লীদের সার্বিক নিরাপত্তার জন্য নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছিলো। এ উপলক্ষে ধর্মপ্রাণ নারী-পুরুষগণ নফল রোজাও পালন করেছেন।