ইতিহাস সৃষ্টিকারীদের নিয়ে মাতামাতি হবে এটাই স্বাভাবিক। হয়েছেও তাই। সকাল থেকেই সাজ সাজ রব ছিলো বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডে। যেন উৎসবের শহর। এ যাত্রায় রং ছড়িয়েছেন সমর্থকরা। দেশের ক্রিকেটকে যারা নিয়ে গেছেন গৌরবের শীর্ষে তাদের ছুঁয়ে দেখতে ভক্তদের আকুতি সীমাহীন। সকাল থেকেই তাই লাল সবুজের জার্সিতে বিসিবিতে জড়ো হতে থাকেন সমর্থকরা।
বিশ্বকাপজয়ী বাংলাদেশ যুব ক্রিকেট দল ঢাকায় এসে পৌঁছে বুধবার (১২ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে।
হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পা রাখার পর বিশ্বজয়ী আকবর আলিদের সংবর্ধনা জানায় ক্রীড়া মন্ত্রণালয় ও বিসিবি। সেখান থেকে বিশ্বকাপজয়ী দলকে ‘চ্যাম্পিয়ন বাস’-এ নিয়ে আসা হয় মিরপুর শেরেবাংলা ক্রিকেট স্টেডিয়ামে। বিমানবন্দরের মতো স্টেডিয়ামও লোকে লোকারণ্য হয়ে ওঠে আগে থেকেই। মিরপুর-১০ নম্বর থেকে ২ নম্বর পর্যন্ত এবং স্টেডিয়ামের সামনের এলাকায় অন্তত হাজার দশেক মানুষ ব্যানার, ফেস্টুন, জার্সি এবং জাতীয় পতাকা হাতে নিয়ে অপেক্ষমাণ থাকে বিশ্বজয়ী বীরদের বরণ করে নিতে।
এরপর আকবর আলিদের বাস মিরপুর ঢোকার সঙ্গে সঙ্গে অপেক্ষার অবসান ঘটে সেখানে অপেক্ষমাণ ক্রিকেট ভক্ত-সমর্থকদের। ক্রিকেটাররা স্টেডিয়ামে এসে পৌঁছার আগ পর্যন্ত পুলিশ প্রশাসন দর্শকদের উপচে পড়া ভিড় সামলাচ্ছিলেন। কিন্তু আকবর-ইমন-রাকিবুলরা স্টেডিয়ামে প্রবেশ করার পরপরই সেই উপচে পড়া ভিড় সামলাতে পারেনি পুলিশ।
হুড়মুড়িয়ে দর্শকরা প্রবেশ করে স্টেডিয়াম চত্বরে। এ সময় অন্তত আড়াই থেকে তিনশ মোটরসাইকেল শোভাযাত্রাও প্রবেশ করে স্টেডিয়ামের মূল চত্বরে। এরপর অবশ্য দর্শকদের জন্য খুলে দেয়া হয় স্টেডিয়ামে গ্র্যান্ড স্ট্যান্ড গ্যালারির গেট। দর্শকরা সবাই বিশ্বজয়ী বীরদের বরণের জন্য চলে যায় গ্র্যান্ড স্ট্যান্ডে। বিসিবি কার্যালয় থেকে স্টেডিয়ামে নেমে আসার পথে আগে থেকেই বিছানো ছিল লাল গালিচা।
আন্তর্জাতিক ম্যাচ শেষে যে জায়গায় পুরস্কার বিতরণ করা হয়, সেখানে রাখা ‘ওয়ার্ল্ড চ্যাম্পিয়ন’ লেখা ব্যাকড্রপ। যার ঠিক সামনেই টেবিলে সাজানো ‘বিশ্বচ্যাম্পিয়ন’ লেখা কেক। আকবর আলিরা লাল গালিচা দিয়ে সেই জায়গায় পৌঁছার পর আনা হয় বিশ্বকাপের ট্রফিটি। এরপর বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন আর বাংলাদেশ যুব দলের বিশ্বকাপজয়ী অধিনায়ক আকবর আলি একসঙ্গে ট্রফি উঁচিয়ে অংশ নেন ফটোসেশনে। দুই কেকের মাঝখানে রাখা হয় ট্রফিটি। তারপরই কেক কেটে উদযাপন।
কনফেত্তি আর আলোর ঝলকানিতে উৎসবমুখর এক পরিবেশ শেরেবাংলায়। এর আগে, বুধবার (১২ ফেব্রুয়ারি) বিকেল ৪টা ৫৫ মিনিটে ইয়াং টাইগারদের বহনকারী বিমানটি হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে। যুবাদের বরণ করতে এয়ারপোর্টের বাইরে জড়ো হয় হাজারো মানুষ। এ সময় বাংলাদেশ বাংলাদেশ স্লোগানে প্রকম্পিত হয় পুরো এলাকা।
বিমানবন্দরের ভেতরে আকবর আলীর দল এবং কোচদের গলায় ফুলের মালা পরিয়ে দেন ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেল ক্রিকেটার। এছাড়া বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন দলের সদস্যদের মুখে মিষ্টি তুলে দেন। এরপর সকলের উষ্ণ অভ্যর্থনা গ্রহণ শেষে বিসিবির বিশেষ চ্যাম্পিয়ন বাসে চেপে মিরপুর শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামের পৌঁছান বিশ্বকাপজয়ী দল। বিমানবন্দরে সাংবাদিকদের সাথে আনুষ্ঠানিকভাবে কথা বলছেন অধিনায়ক আকবর আলী ও টিম ম্যানেজমেন্ট।