বাংলা সাহিত্যের নন্দিত কথাশিল্পী ও চলচ্চিত্রকার হুমায়ুন আহমেদের ৭১তম জন্মদিন গতকাল নানা অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে পালিত হয়েছে। এই উপলক্ষে ঢাকায় জাতীয় জাদুঘরে আয়োজিত সেমিনারে বক্তারা বলেন, বাংলা সািহত্য ও চলচ্চিত্রে তার অবদান চিরস্বরণীয় হয়ে থাকবে। হুমায়ুন আহমেদ কালজয়ী কথাশিল্পের প্রণেতা। তার অসংখ্য উপন্যাস বাংলা কথাসাহিত্যে বিশেষ আসন করে নিয়েছে। তিনি অমর কথাশিল্পী। জাদুঘরের কবি সুফিয়া কামাল মিলনায়তনে ‘হুমায়ুন সাহিত্যে বাঙালির জীবন ও সমাজ ’ শীর্ষক সেমিনারে বক্তারা এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষনে সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সবিচ মোহাম্মদ নাসির উদ্দিন আহমেদ বলেন, হুমায়ুন আহমেদ তার সৃষ্টিতে মানুষকে সর্বাগ্রে তুলে এনেছেন। হাসি-কান্না এবং সমাজের সমস্যা, ভাল-মন্দকে উপন্যাস ও নাটকে তুলে ধরেছেন। বিপুল সংখ্যক মানুষ তার ভক্ত এ কারণেই। তিনি অগণিত পাঠক সৃষ্টি করেছেন। সভাপতির বক্তৃতায় কথাশিল্পী সেলিনা হোসেন বলেন, বাঙালি সমাজের নানা সংস্কৃতির রুপায়ন ঘটেছে তার উপন্যাস, গল্প, নাটক, চলচ্চিত্রে। নিজস্ব ভাষাশৈলি এবং বর্ণনায় সাহিত্যে ভিন্নধারার একটি ঘরানা সৃষ্টি করেছেন। এতে মানুষের বাস্তব জীবনকে যেমন তিনি উপস্থাপন করেছেন, অন্যদিকে সুখ-দু:খের ভেতরে গিয়ে নিজের কলাকৌশলে সাহিত্য সৃষ্টি করেছেন। অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন লেখক মুম রহমান। আলোচনায় আরও অংশ নেন, সংস্কৃতি ব্যক্তিত্ব রামেন্দুৃ মজুমদার, অভিনেতা ডা. এজাজ আহমেদ ও অন্য প্রকাশের স্বত্তাধিকারী মাজহারুল ইসলাম। দিবসটি উপলক্ষে বাংলাদেশ টেলিভিশনসহ বেসরকারী বিভিন্ন টিভিতে হুমায়ুন আহমেদের ওপর বিভিন্ন ধরনের অনুষ্ঠানমালা সম্প্রচার করা হয়। হুমায়ুন আহমেদ পরিচালিত সিনেমা ও নাটক প্রচার করা হয়। গাজীপুর থেকে প্রতিনিধি জানান, বিভিন্ন কর্মসূচি পালনের মধ্য দিয়ে গতকাল নূহাশ পল্লীতে কথাসাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদের ৭১তম জন্মদিন পালন করা হয়েছে মোমবাতি প্রজ্জ্বলন, হুমায়ুন আহমেদের সমাধিতে শ্রদ্ধাজ্ঞাপন, কেক কেটে ও পায়রা উড়িয়ে সকালে গাজীপুরের নুহাশ পল্লীতে প্রয়াত হুমায়ূন আহমেদের জন্মদিন পালন করা হয়। নুহাশ পল্লীতে সোমবার রাত ১২টা ১ মিনিটে মোমবাতি প্রজ্জ্বলন করা হয়। সকালে হুমায়ূন আহমেদের স্ত্রী মেহের আফরোজ শাওন, তাদের দুই ছেলে নিশাদ ও নিনিতসহ স্বজন এবং ভক্তদের নিয়ে কেক কাটেন এবং হুমায়ূন আহমেদের কবরে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন, কবর জিয়ারত ও দোয়া করেন। কবর জিয়ারত শেষে মেহের আফরোজ শাওন সাংবাদিকদের বলেন, ‘হুমায়ূন আহমেদ আছেন এখানে, নুহাশ পল্লীতে। হুমায়ূন আহমেদের আলোয় আসলে গাজীপুরটাও আলোকিত হয়ে আছে, নুহাশ পল্লী আলোকিত হয়ে আছে। এক অর্থে বলব, বাংলাদেশ আলোকিত হয়ে আছে।’ সকালে গাজীপুর হিমু পরিবহনের ২০ জন হিমু গাজীপুর শহর থেকে বাইসাইকেল নিয়ে নুহাশ পল্লীতে আসেন। তারা হুমায়ূন আহমেদের কবরে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবদেন করেন।