বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক, প্রগতিশীল এবং নারীমুক্তি আন্দোলনের অন্যতম অগ্রদূত কবি বেগম সুফিয়া কামালের ১৯তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ মঙ্গলবার। বিভিন্ন সামাজিক সাংস্কৃতিক সংগঠন বিস্তারিত কর্মসূচির মধ্যদিয়ে কাল তার মুত্যুবার্ষিকী পালন করবে। কবি সুফিয়া কামাল ছিলেন নারী আন্দোলনের পথিকৃৎ এবং সাম্প্রদায়িকতা ও ধর্মান্ধতার বিরুদ্ধে এক অকুতোভয় যোদ্ধা। তার জন্ম ১৯১১ সালের ২০ জুন বরিশালে। সে সময় বাঙালি মুসলমান নারীদের লেখাপড়ার সুযোগ একেবারে সীমিত থাকলেও তিনি নিজ চেষ্টায় লেখাপড়া শেখেন এবং ছোটবেলা থেকেই কবিতাচর্চা করেন। রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদ এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে পৃথক বাণী দিয়েছেন। রাষ্ট্রপতি তার বাণীতে মহীয়সী এ নারীর জীবনাদর্শ ও সাহিত্যকর্ম একটি বৈষম্যহীন ও অসাম্প্রদায়িক সমাজ বিনির্মাণে তরুণ প্রজন্মকে উদ্বুদ্ধ ও অনুপ্রাণিত করবে বলে প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন। প্রধানমন্ত্রী তার বাণীতে কবি বেগম সুফিয়া কামালের বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করে বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে পচাঁত্তরের পনেরই আগস্টে নির্মমভাবে হত্যা করে যখন এদেশের ইতিহাস বিকৃতির পালা শুরু হয়, তখনও তাঁর সোচ্চার ভূমিকা বাংলাদেশে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের গণতান্ত্রিক শক্তিকে নতুন প্রেরণা যুগিয়েছিল। সুফিয়া কামাল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম মহিলা হোস্টেলকে ‘রোকেয়া হল’ নামকরণের দাবি জানান। ১৯৬১ সালে পাকিস্তান সরকার রবীন্দ্রসংগীত নিষিদ্ধ করলে এর প্রতিবাদে গঠিত আন্দোলনে কবি যোগ দেন। বেগম সুফিয়া কামাল শিশু সংগঠন কচিকাঁচার মেলা প্রতিষ্ঠা করেন। ১৯৯৯ সালের ২০ নভেম্বর সুফিয়া কামাল মৃত্যুবরন করেন। তাঁকে পূর্ণ রাষ্ট্রীয় মর্যদায় সমাহিত করা হয়। বাংলাদেশের নারীদের মধ্যে তিনিই প্রথম এ সন্মান লাভ করেন। সুফিয়া কামালের লেখা কাব্যগ্রন্থ হচ্ছে সাঁঝের মায়া, মায়া কাজল, মন ও জীবন, দিওয়ান, অভিযাত্রিক ইত্যাদি। ‘কেয়ার কাঁটা নামে একটি গল্পগ্রন্থ ছাড়াও তিনি ভ্রমন কাহিনী, স্মৃতি কথা শিশুতোষ এবং আত্মজীবনীমূলক রচনাও লিখেছেন।