কিশোরগঞ্জে কালবৈশাখী ঝড়ে বোরো ধানের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি
তারিথ
: ০৬-০৪-২০২১
এনামুল হক সেলিম কিশোরগঞ্জ থেকে:
কিশোরগঞ্জের ইটনা উপজেলার রায়টুটী ইউনিয়নের হুলিয়া হাওরে গত রোববার বিকেলেও বিশাল হাওরের জমির রং ছিল সবুজ। কিন্তু রোববার রাতে প্রায় তিন ঘন্টার কালবৈশাখী ঝড় ও গরম বাতাসে এ হাওরের বেশিরভাগ বোরো জমির ধান সাদা হয়ে নষ্ট হয়ে গেছে। কিশোরগঞ্জের ১৩ উপজেলার প্রায়২৫ হাজার হেক্টর বোরো জমির ধান একেইভাবে আক্রান্ত হয়েছে। কৃষি সম্প্রসারণ অফিস সুত্রে জানা যায়, চলতি বছর জেলায় ১ লাখ ৬৫ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের আবাদ করা হয়েছে এবং ফলনও অনেক ভাল। কিন্তু গত রোববার রাতে কালবৈশাখী ঝড় ও গরম বাতাসে কিশোরগঞ্জে হাওরের ইটনা উপজেলার রায়টুটী, বাদলা, বড়িবাড়ী ইউনিয়ন, কিশোরগঞ্জ সদর উপজেলা, করিমগঞ্জ উপজেলা, হোসেনপুর উপজেলা ও তাড়াইল উপজেলায় বেশি ক্ষতি হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা বলছেন, এর আগে কৃষকরা শিলাবৃষ্টি কিংবা আগাম বন্যায় ক্ষতির সম্মুখীন হলেও গরম বাতাসে বোরো জমি নষ্ট হতে প্রথম দেখেছে। এ রকম ক্ষতি হওয়ায় দিশেহারা কৃষক। প্রায় তিন ঘন্টার কালবৈশাখী ঝড় ও গরম বাতাসে কিশোরগঞ্জের হাওরসহ জেলার বিভিন্ন উপজেলায় ২৫ হাজার হেক্টর বোরো ধানের ক্ষতি হয়েছে। রাজী গ্রামের কৃষক আতাউর বলেন, আর ১০-১৫ দিন পরে ধান কাটার কথা ছিল। কিন্তু গরম বাতাসে ধান সব নষ্ট হয়ে গেছে । উত্তর রাজী গ্রামের বুদু মিয়া জমিতে দাঁড়িয়ে কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, ১৪ কাটা জমিতে ধান লাগাইছিলাম, কিন্তু গতকালকে রাতে গরম বাতাসে আমার সব শেষ করে দিছে। এখন ধান কাটার আর ইচ্ছে নাই। কিশোরগঞ্জ জেলা কৃষক লীগের সভাপতি আহমেদ উল্লাহ এবং সাধারণ সম্পাদক মো. আনোয়ার হোসেন বাচ্চু বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের প্রতি সুদৃষ্টি দিবেন এবং প্রণোদনার ব্যবস্থা করবেন বলে আশা করেন। কিশোরগঞ্জ জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর উপ-পরিচালক কৃষিবিদ মো. ছাইফুল ইসলাম বলেন, কিশোরগঞ্জের ১৩ উপজেলায় প্রায় ২৫ হাজার হেক্টর বোরো জমি আক্রান্ত হয়। তবে আগামী কয়েকদিনের মধ্যে চুড়ান্ত প্রতিবেদন তৈরি করে কৃষি মন্ত্রণালয়ে অবহিত করা হবে । কিশোরগঞ্জ-৪ (ইটনা-মিঠামইন-অষ্টগ্রাম) আসনের সংসদ সদস্য রেজওয়ান আহাম্মদ তৌফিক বলেন, ‘আমি কৃষি বিভাগকে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের তালিকা তৈরির নির্দেশ দিয়েছি। তালিকা হাতে পেলে সহায়তা চেয়ে মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে।’