জীবন সায়াহ্নে কিছু চাই না ,স্বামী হত্যার বিচার চাই
ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি :
অসোমনি যেন বয়সের গাছ-পাথর ।মুখের বলি রেখায় স্পস্ট ফেলে আসা দীর্ঘ জীবনের নানাঘাত প্রতিঘাতের ছাপ। সেই মূুখচছবি এখন আরও দীর্ণ,বিষন্ন, ¯œান ।একাত্তরের সেই দিনগুলোর কথা ভুলতে পারেনি ।স্বামী-দেবর,ভাইসহ পরিবারের পাঁচ জন হারিয়েছি ।আর কী আছে হারার ! জীবনের এই পড়ন্ত বেলায় চাওয়া পাওয়ার আর নেই। তবে সেই ঘাতকদের বিচার চাই- এ বলে চোখে পানি ছেড়ে দেন অসোমনি । ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার জগন্নাথ পুর সরকার গ্রামে থাকেন অন্যের জমিতে ঘর তুলে অসোমনি । তার মত এ গ্রামে নিদারুন কষ্টে আছেন টুলটুলী, ঝলমলি, শুখানী, বুধারী ও বাতাসীসহ অনেকে । ঘাতকের গুলিতে নিহতদের স্ত্রী ও পরিবারের আক্ষেপ গণহত্যাকারী ও যুদ্ধাপরাধীদের বিচার শুরু হলেও তারা কেন বিচার পাচেছন না । ২৩ এপ্রিল । একাত্তরের এই দিনে সদর উপজেলার জাঠিভাঙ্গা এলাকায় এক গণহত্যা সংঘটিত হয় ।দেশীয় দালালদের সহযোগিতায় পাক-হানাদাররা দুই হাজারের বেশি নিরিহ মানুষকে নৃশংস ভাবে হত্যা করে । এ উপজেলাসহ আশপাশে এলাকার তিন-চারটি গ্রামের মানুষ বর্বরোচিত হত্যাকান্ডের শিকার হয়েছেন হানাদারদের গুলিতে। ৬০ উর্ধো বয়সী তিপানন রায় । সেই গণহত্যায় গুলিবিদ্ধ হয়ে পঙ্গুত্ব জীবন কাটছেন । হাত পায়ের শক্তি নেই তার । হারিয়েছেন বাক শক্তিও।। টাকার অভাবে তার চিকিৎসা বন্ধ । মৃত্যুর সঙ্গে লড়ছেন তিনি ।গণহত্যার আজ ৪৭ বছর । কিন্তু এই অসহায় মানুষ গুলোর খোঁজ নেয়নি কেউ । করুন দশা শুধু অসোমনি আর তিপানন রায়ের নয় । গণহত্যার শিকার শহীদ পরিবারের ৩ শতাধিক স্বামীহারা নারী বেঁচে আছে খেয়ে না খেয়ে।আর চিকিৎসার অভাবে ধুঁেক ধুঁেক ওপারের ডাকের প্রহর গুনছে যেন তারা । জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক জেলা কমান্ডার বদরুদ্দোজা বদর এই সব নারীদের পুনর্বাসন ও শহীদ পরিবার ঘোষনার দাবি করেন । এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক মো. আখতারুজ্জামান ওই পরিবারগুলোর সহযোগিতা ও চিকিৎসা সেবার আশ্বাস দেন।