মানিকগঞ্জের হরিরামপুরে পদ্মা নদীর ভাঙনে পাঁচটি গ্রামের তিন শতাধিক ঘরবাড়ি বিলীন
তারিথ
: ২৪-০৭-২০১৮
মো: আকতার হোসেন,মানিকগঞ্জ প্রতিনিধি : মানিকগঞ্জের হরিরামপুর উপজেলার পদ্মা নদীর ভাঙনে পাঁচটি গ্রামের তিন শতাধিক ঘরবাড়ি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। গত দুই সপ্তাহে নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে গোপীনাথপুর, বড় বাহাদুরপুর, ছোট বাহাদুরপুর, উজানকান্দি, কদমতলী ও রামকৃষ্ণপুর গ্রামের অন্তত তিন শতাধিক ঘর-বাড়ি। এলাকাবাসী ও সংশ্লিষ্টরা আশঙ্কা করছে দ্রুত ভাঙনরোধে ব্যবস্থা না নিলে স্কুল, এতিমখানা ও মসজিদসহ অসংখ্য বাড়ি-ঘর বিলীন হয়ে যাবে। সরেজমিনে ভাঙনকবলিত গোপিনাথপুর ইউনিয়নের কয়েকটি গ্রামে গিয়ে দেখা গেছে, ভাঙনের শিকার পরিবার গুলো ঘর, আসবাবপত্রগুলো নিয়ে নিরাপদ স্থানে চলে যাচ্ছে। অনেকেই বাড়ির পাশের প্রতিবেশীদের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছে। আবার অনেকেই রাস্তার পাশেই সরকারি জায়গায় কোনো মতে আশ্রয় নিতে মানবেতর জীবন পার করছে। ফরহাদ হোসেন ও আনোয়ার হোসেন জানান, নদী ভাঙনে ৩০ টি পরিবার গত সপ্তাহে সর্বহারা হয়েছেন। তাদের বসতভিটা এখন সর্বনাশা পদ্মার গর্ভে। ক্রমান্নয়ে পদ্মার এই ভাঙন অব্যাহত থাকলে ভাঙনের পরিমান বেড়ে দ্বিগুণ হবে বলে আশঙ্কা করছেন। গোপিনাথপুর ইউপির ৮ নং ওয়ার্ডের সাবেক মেম্বার মো. খলিলুর রহমান বলেন, এবার যেভাবে নদীতে ভাঙন শুরু হয়েছে তাতে ৩-৪ দিনে অন্তত ২০ টি বাড়ি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাবে। গোপিনাথপুর ইউপি চেয়ারম্যান আবদুল কুদ্দুস বলেন, এ বছরের পদ্মার ভাঙনে গেলো এক সপ্তাহে কমপক্ষে ২০০ বাড়িঘর নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। এখনই ভাঙনরোধে জিও ব্যাগ না ফেলা হলে আগামী এক সপ্তাহে আরও দুই থেকে তিনশত বাড়িঘর পদ্মার গর্ভে চলে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে তিনি জানান। তিনি আরও বলেন, গেলো মাসে উপজেলা পরিষদের সমন্বয় কমিটির সভায় পদ্মার এমন ভাঙনের বিষয়ে উপজেলা প্রশাসনকে অবহিত করা হলেও এখন পর্যন্ত কোনো সিদ্ধান্ত নেয়া হয়নি। তবে ভাঙনকবলিত এলাকার পরিদর্শন করে তালিকা তৈরি করা হয়েছে বলেও জানান তিনি। পদ্মার নদীর ভাঙনের ব্যাপারে হরিরামপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো: ইলিয়াস মেহেদী জানান, ভাঙনের ব্যাপারে ইতিমধে উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের অবহিত করা হয়েছে। এরমধ্যে উপজেলা প্রশাসন ভাঙনকবলিত এলাকার পরিদর্শনও করা হয়েছে। দ্রুত ভাঙনরোধে বাঁধ নির্মাণে প্রস্তাবও করা হয়েছে। সম্প্রতি ভাঙন পরিদর্শন করেছেন স্থানীয় সংসদ সদস্য মমতাজ বেগম জানান,নদী ভাঙন কবলিত এলাকাগুলোতে বাঁধ নির্মাণ করা হবে। তবে বর্ষা মৌসুম হওয়ায় বাঁধের কাজ করা যাচ্ছেনা। তাই ভাঙন ঠেকাতে অস্থায়ীভাবে জিও ব্যাগ ফেলার জন্য মন্ত্রনালয়ে জানানো হয়েছে। আর ভাঙন কবলিত ক্ষতিগ্রস্থতের সহযোগিতার জন্য তালিকা প্রস্তুত করা হয়েছে।