সারাদেশে ইন্টারনেট ছড়িয়ে দিয়ে এই খাত থেকে সুফল পেতে আয়োজন করা হচ্ছে জাতীয় ইন্টারনেট মেলা। আগামি মাসে ঈদের পরে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভাগীয় শহরে ইন্টারনেট মেলা আয়োজনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। দেশের ইন্টারনেট সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানগুলোর সংগঠন আইএসপিএবি এই মেলা আয়োজন করছে। এতে সব ধরনের সহযোগিতা দেবে সরকারের তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) বিভাগ।
প্রসঙ্গত, এর আগেও দেশে একবার ইন্টারনেট মেলা হয়েছিল। সেই মেলার আয়োজক ছিল সফটওয়্যার ও সেবা পণ্যের নির্মাতা প্রতিষ্ঠানগুলোর সংগঠন বেসিস। এবার ইন্টারনেট সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানগুলোর হাতে ফিরে এলো ইন্টারনেট মেলা। জানা গেছে, ইন্টারনেট মেলা হলেও এতে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানগুলো অংশ নেওয়ায় বাদ যাচ্ছে মোবাইল অপারেটর প্রতিষ্ঠানগুলো। জানতে চাইলে মেলার আয়োজক আইএসপিএবির সাধারণ সম্পাদক ইমদাদুল হক বলেন, ‘এবার আমরা রাজধানীসহ সব বিভাগে এই মেলার আয়োজন করবো। পরবর্তী সময়ে রিমোট এরিয়া তথা প্রত্যন্ত এলাকায় মেলা করবো। আমরা চাই শহর ও গ্রাম সব জায়গায় ইন্টারনেট ছড়িয়ে পড়ুক, সবাই জানুক ইন্টারনেট কী, এটা দিয়ে কী হয়।’ তিনি জানান, আইএসপিএবি’র সদস্যসংখ্যা এক হাজার। মেলায় সব সদস্য প্রতিষ্ঠান অংশ নেবে বলে তিনি জানান। ইমদাদুল হক বলেন, ‘ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তিমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার ও আইসিটি বিভাগের প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক মেলা আয়োজনে সার্বিকভাবে সহযোগিতা করছেন এবং উৎসাহ দিচ্ছেন। এরইমধ্যে আমরা অনেকদূর এগিয়েও গিয়েছি।’ তিনি জানান, সদস্য প্রতিষ্ঠানগুলো মেলায় তাদের বিভিন্ন সেবা ও প্যাকেজে ছাড় ঘোষণা করবে, থাকবে উপহারও। অনেক প্রতিষ্ঠান কেবল মেলা উপলক্ষে প্যাকেজ তৈরি করছে। জানা গেছে, মেলার প্রতিপাদ্য চ‚ড়ান্ত করা হয়েছেÑ ‘গ্রাম হবে শহর।’ শহরের সব নাগরিক সুবিধা ইন্টারনেটের মাধ্যমে গ্রামে পৌঁছাতে এই উদ্যোগ। মেলা দুটি ধাপে অনুষ্ঠিত হবে। প্রথম ধাপে রাজধানীতে তিন দিনের মেলা শুরু হবে আগামি ১২ জুন, চলবে ১৪ জুন পর্যন্ত। মেলা বসবে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে। আর দ্বিতীয় ধাপে ১৫ থেকে ১৯ জুন পর্যন্ত মেলা অনুষ্ঠিত হবে বিভাগীয় শহরগুলোতে। মেলার আয়োজকরা জানান, বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে আয়োজিত জাতীয় ইন্টারনেট মেলায় ৩০টি প্যাভিলিয়ন ও ১৬০টি স্টল থাকবে। অন্যদিকে, বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়, রেলস্টেশন, বাসস্টেশন, সদরঘাট টামির্নাল ও হাতিরঝিলসহ ঢাকার অন্তত ২০টি স্পটে ১ জিবিপিএস (গিগা বিটস পার সেকেন্ড) গতির ইন্টারনেট সেবা চালু করা হবে। মেলা চলাকালে মেলা প্রাঙ্গণ ও স্পটগুলোতে সবাই বিনামূল্যে উচ্চগতির ইন্টারনেট ব্যবহার করতে পারবেন। মেলায় প্রতিদিন অন্তত তিনটি করে সেমিনার হওয়ার কথা রয়েছে। অন্যদিকে, কারিগরি পেশায় কর্মরতদের জন্য ১২-১৪ জুন একটি সার্টিফিকেট কোর্স অনুষ্ঠিত হবে। আর ইন্টারনেট ব্যবহারকারীদের জন্য থাকবে নিরাপদ ইন্টারনেট ব্যবহার বিষয়ক প্রশিক্ষণ ও সাইবার বুলিং নিয়ে ফ্রি ইন্টারনেট ক্লিনিক। এছাড়া, মেলায় এই খাতের সফল ১০ ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানকে সম্মাননা জানানো হবে বলে জানা গেছে।