স্থূলতা নিয়ে চিন্তিত? তাহলে নিয়ম করে খাওয়া বাদ দিন। এতে কমবে দেহের বাড়তি ওজন। অস্ট্রেলিয়ার ইউনিভার্সিটি অফ আডেলএইড’য়ের একটি গবেষণায় এরকম তথ্যই পাওয়া গিয়েছে। গবেষকদের দাবি, এতে ওজন কমার পাশাপাশি স্বাস্থ্যেরও উন্নতি হবে। দেখা গেছে, যেসব নারী অনিয়মিতভাবে অভুক্ত থেকেছেন এবং খাদ্যাভ্যাস নিয়ন্ত্রণে রেখেছেন, তাদের স্বাস্থ্য যারা এই দুটির যে কোনো একটি কাজ করেছেন তাদের চাইতে বেশি উপকৃত হয়েছে। স্থূলাকায় নারীদের মধ্যে যাদের খাদ্যাভ্যাস ছিল প্রয়োজনীয় খাবারের ৭০ শতাংশ খাওয়া এবং কালেভদ্রে অভুক্ত থাকা, তাদের ওজন কমেছে তুলনামূলক বেশি মাত্রায়। গবেষণার প্রধান লেখক, অস্ট্রেলিয়ার ইউনিভার্সিটি অফ আডেলএইড’য়ের অ্যামি হাচসন বলেন, “প্রতিনিয়ত খাদ্যাভ্যাস কড়া নিয়ন্ত্রণে রাখার মাধ্যমেই স্থূলকায় নারীরা ওজন কমানোর চেষ্টা করেন।” একই বিশ্ববিদ্যালয়ের আরেক অধ্যাপক লিওনি হেইলব্রন বলেন, “স্বল্প সময়ের মধ্যে হলেও মাঝেমধ্যে না খেয়ে থাকা প্রতিনিয়ত খাদ্যাভ্যাস নিয়ন্ত্রণে রাখার চাইতে বেশি উপকারী হতে পারে, এই ধারণার প্রমাণ হিসেবে যোগ হল এই গবেষণা।” “একটি নির্দিষ্ট নিয়মের মধ্যে থেকে মাঝেমধ্যে না খেয়ে থাকা এবং খাদ্যাভ্যাস নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে স্থূলকায় নারীরা উল্লেখযোগ্য মাত্রায় ওজন কমাতে সফল হয়েছেন। সেই সঙ্গে হৃদরোগের মতো মারাত্বক রোগের ঝুঁকিও কমেছে তাদের ক্ষেত্রে।” ‘ওবেসিটি’ শীর্ষক জার্নালে এই গবেষণার প্রতিবেদনে এমনটা বলা হয়। গবেষণার জন্য ৩৫ থেকে ৭০ বছর বয়সি ১০০ জন অতিরিক্ত ওজনের সমস্যায় ভোগা নারীকে পর্যবেক্ষণ করেছেন গবেষকরা। অংশগ্রহণকারীরা ১০ সপ্তাহ ধরে অস্ট্রেলিয়ার সাধারণ খাদ্যাভ্যাস অনুসরণ করেছেন, যেখানে আছে ৩৫ শতাংশ চর্বি, ১৫ শতাংশ প্রোটিন এবং ৫০ শতাংশ কার্বোহাইড্রেট। যারা কালেভদ্রে না খেয়ে থেকেছেন, তারা সকালে খেয়ে তারপর ২৪ ঘণ্টা না খেয়ে থেকেছেন। পরবর্তী ২৪ ঘণ্টা আবার স্বাভাবিক খাওয়া-দাওয়া করেছেন। তার পরের দিন আবার একইভাবে পদ্ধতি অনুসরণ করেছেন। হেইলব্রন বলেন, “এই গবেষণা প্রমাণ করে যে প্রতিদিন শক্ত খাদ্যাভ্যাস মানার চাইতে মাঝেমধ্যে অভুক্ত থাকা আর নিয়ন্ত্রিত খাওয়া-দাওয়া বেশি উপকারী। এই পদ্ধতি অনুসরণের কারণে খাওয়ার রুচি কমে যাওয়াই সম্ভবত ওজন কমার পেছনের কারণ। তবে এ বিষয়ে আরও গবেষণা প্রয়োজন।” ছবি: রয়টার্স।