ভুঁড়ি কমাতে রাতের খাবার বাদ দিয়ে হিতে বিপরীত হলো না তো?
ওজন কমানোর জন্য কিংবা সারাদিনের ক্লান্তি থেকে ক্ষুধামন্দার কারণে অনেকেই রাতের খাবার বাদ দিয়ে থাকেন। এমনটা যদি কালেভদ্রে হয় তাতে সমস্যা নেই, তবে তাকে নিত্যদিনের অভ্যাসে পরিণত করা কখনই উচিত হবে না। খালি পেটে ঘুমাতে যাওয়ার ক্ষতিকারক দিকগুলো জানানো হলো স্বাস্থ্যবিষয়ক এক ওয়েবসাইটের তথ্য অবলম্বনে। পুষ্টির অভাব: রাতের খাবার বাদ দিলে শরীরে পুষ্টির অভাব দেখা দিতে পারে, বিশেষত, ‘মাইক্রোনিউট্রিয়েন্ট’য়ের অভাব। ভারতের ম্যাক্স সুপার স্পেশালিটি সেন্টারের খাদ্য ও পুষ্টি বিভাগের পরামর্শদাতা মঞ্জরি চন্দ্র বলেন, “শরীরের প্রয়োজনীয় ‘মাইক্রোনিউট্রিয়েন্ট’গুলোর মধ্যে ম্যাগনেসিয়াম, ভিটামিন বি টুয়েলভ এবং ভিটামিন ডি থ্রি অন্যতম, যার সবগুলোই শরীরের স্বাভাবিক কার্যাবলী বজার রাখার জন্য জরুরি। একজন ব্যক্তি রাতে না খেয়ে থাকার অভ্যাস গড়লে সে এই পুষ্টিগুলোর অভাবে ভুগবে।” বিপাকক্রিয়ার ক্ষতি: নিয়মিত রাতের খাবার বাদ দিয়ে কিংবা বেখেয়ালী খাদ্যাভ্যাস গড়লে বিপাকীয় প্রক্রিয়া ক্ষতিগ্রস্ত হয়। মঞ্জরি চন্দ্র বলেন, “এতে শরীরের ইনসুলিনের মাত্রায় ভারসাম্যহীনতা দেখা দিতে পারে, যা শরীরের সবচাইতে গুরুত্বপূর্ণ হরমোন। এছাড়াও খাদ্যাভ্যাসের অনিয়মের কারণে ‘কোলেস্টেরল’ ও ‘থাইরয়েড’য়ের মাত্রাও ক্ষতিগ্রস্থ হয়।” সঠিক সময়ে সঠিক খাবার না খেলে হরমোনের উৎপাদন ক্ষতিগ্রস্থ হয় ফলে শরীরে বিভিন্ন রোগের আক্রমণ হয়। ঘুমের সমস্যা: পেটে ক্ষুধা নিয়ে ঘুমাতে গেলে শুধু এপাশ-ওপাশ করাই হবে, ঘুম আর আসবেনা। কারণ ক্ষুধাই আপনাকে সতর্ক রাখবে এবং গভীরভাবে ঘুমানোর সুযোগ দেবে না। মঞ্জরি বলেন, “এর কারণ হলো আমাদের শরীর দুইভাবে নিয়ন্ত্রিত হয়, স্নায়বিকভাবে ও হরমোনের প্রভাবে। আর পর্যাপ্ত খাবার না পেলে দুটোই ক্ষতির শিকার হয়। ওজন বৃদ্ধি: ওজন কমাতে রাতের খাবার বাদ দেন অনেকে কিন্তু ফলাফল হয় উল্টো। রাতে কম খাওয়া উচিত একথা সত্য, তবে একেবারে না খেয়ে থাকা ভালো নয়। এ ব্যাপারে মঞ্জরি চন্দ্রের মত, “এসময় শরীর চর্বি জমা করতে শুরু করে, কর্মশক্তি সংরক্ষণ করতে শুরু করে, যার কারণে ওজন বাড়ে। ওজন কমানোর একমাত্র উপায় হলো পরিমাণমতো খাওয়া। বদমেজাজ: খালি পেটে কাজ করতে থাকলে মানুষ বদমেজাজি হয়ে যায়। আর রাতে না খেয়ে থাকলে কাজেও মনোযোগ থাকে না। তাই দিন শুরু করতে হবে ভালোভাবে নাস্তা করে। বিশেষ কোনো খাদ্যাভ্যাস অনুসরণ কিংবা উপোস বা রোজা না থাকলে কখনই খালি পেটে ঘুমানো উচিত নয়। মঞ্জরির মতে, ঐতিহ্যগত উপোস বা রোজা শরীর থেকে ক্ষতিকর উপাদান অপসারণ এবং রোগ দূরে রাখায় অত্যন্ত কার্যকরী। এরা শরীরকে ক্ষয়পূরণের সুযোগ করে দেয়। তবে তা প্রতিনিয়ত চালিয়ে যাওয়া উচিত হবে না। আবার যারা কোনো চিকিৎসার অন্তর্ভুক্ত আছেন তাদের কোনো একবেলা না খেয়ে থাকার সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।