বিশিষ্ট অভিনেতা এটিএম শামসুজ্জামান আবারো অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। সোমবার দুপুরে তাকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
এটিএম শামসুজ্জামানের ছোট ভাই আলহাজ্ব সালেহ জামান সেলিম জানান, আগস্ট মাসে বাসায় ফেরার পর তিনি ভালোই ছিলেন। কিন্তু চিকিৎসকের কিছু পরামর্শ সঠিকভাবে না মানায় তিনি আবারো অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। তবে এটি গুরুতর কিছু না।
পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, এটিএম শামসুজ্জামান মলত্যাগের জটিলতায় ভুগছেন। তিনদিন ধরে মলত্যাগ করতে পারছেন না তিনি। ফলে পেটে ব্যথা ও গ্যাসের সমস্যা দেখা দিয়েছে। দুপুর ১২টায় তাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। চিকিৎসকরা দেখার পর ভর্তির পরামর্শ দেন। পরে তাকে বঙ্গবন্ধু মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
এর আগে গত ২৬ এপ্রিল রাতে হঠাৎ করেই অসুস্থ হয়ে পড়েন এটিএম শামসুজ্জামান। এ সময় তার মল-মূত্র বন্ধ হয়ে যায় ও শ্বাসকষ্ট শুরু হয়। গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় ওইদিন রাত এগারোটার দিকে তাকে রাজধানীর গেণ্ডারিয়ার আজগর আলী হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরদিন ২৭ এপ্রিল (শনিবার) দুপুরে প্রায় তিন ঘণ্টার অপারেশন শেষে তাকে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) রাখা হয়। এ সময় তিনি স্বাভাবিক নিঃশ্বাস নিতে না পারায় তাকে লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়।
হাসপাতালের ওই বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক ক্রিটিক্যাল কেয়ার বিশেষজ্ঞ মো. মতিউল ইসলাম জানান, আমরা এখনও তাকে বিপদমুক্ত বলতে পারছি না। কেননা তিনি মূলত বার্ধক্যজনিত সমস্যায় ভুগছেন। এই অবস্থায় সমস্যা একটি অঙ্গ থেকে অন্য অঙ্গে ছড়িয়ে পড়ে। কেবিনে দেওয়ার আগে পর্যন্ত আমরা কোনোভাবে বিপদমুক্ত বলতে পারছি না।
উল্লেখ্য, এটিএম শামসুজ্জামান ১৯৪১ সালের ১০ সেপ্টেম্বর নোয়াখালীর দৌলতপুরে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি জীবনের দীর্ঘ সময় কাটিয়েছেন পুরান ঢাকার দেবেন্দ্রেনাথ দাস লেনে। ১৯৬১ সালে পরিচালক উদয়ন চৌধুরীর বিষকন্যা, চলচ্চিত্রে সহকারী পরিচালক হিসেবে সিনেমা জগতে প্রবেশ করেন। পরিচালক নারায়ণ ঘোষ মিতার পরিচালনায় জলছবি. চলচ্চিত্রের জন্য জীবণের প্রথম কাহিনী ও চিত্রনাট্য লিখেছেন। এ ছবির মাধ্যমেই অভিনেতা ফারুকের চলচ্চিত্রে অভিষেক।
এরপর এখন পর্যন্ত শতাধিক চিত্রনাট্য ও কাহিনী লিখেছেন তিনি। তবে অভিনেতা হিসেবে এ টি এম শামসুজ্জামানে চলচ্চিত্র পর্দায় পা রাখেন ১৯৬৫ সালের দিকে। ১৯৭৬ সালে চলচ্চিত্রকার আমজাদ হোসেনের নয়নমণি, চলচ্চিত্রে খলনায়কের চরিত্রে অভিনয়ের মাধ্যমে আলোচনা আসেন তিনি। ১৯৮৭ সালে কাজী হায়াত পরিচালিত দায়ী কে চলচ্চিত্রে অভিনয় করে শ্রেষ্ঠ অভিনেতা বিভাগে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পান।