‘ডিজিটাল নিরাপত্তা বিল-২০১৮’ এর খসড়ায় ১১টি সংশোধনীর প্রস্তাবসহ আরো যাচাই-বাছাইয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সংসদীয় কমিটি।
বুধবার (৪ জুলাই) জাতীয় সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত ডাক টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত হয়। কমিটির সভাপতি ইমরান আহমদ সভায় সভাপতিত্ব করেন।
বৈঠকে কমিটির সদস্য হোসনে আরা লুৎফা ডালিয়া এবং বিশেষ আমন্ত্রণে ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার এবং আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন। এছাড়া কমিটির আমন্ত্রণে অ্যাসোসিয়েশন অব টেলিভিশন চ্যানেল ওনার্সের ভাইস প্রেসিডেন্ট ও ৭১ টিভির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোজাম্মেল হক বাবু, বিএফইউজের সভাপতি মনজুরুল আহসান বুলবুল এবং ডেইলি স্টারের সম্পাদক মাহ্ফুজ আনাম বৈঠকে যোগ দেন। বিস্তারিত আলোচনা করে বিলটিকে অধিকতর যুগোপযোগী করার লক্ষ্যে আরও বৈঠক করার সিদ্ধান্ত হয়।
বৈঠকে সংসদীয় কমিটি জানায়, আগে সাংবাদিকদের বৈঠকের পরিপ্রেক্ষিতে তারা ১১টি সংশোধন এনেছে। এসব সংশোধন সাংবাদিকদের কাছে দেয়া হয়েছে। তারা যাচাই-বাছাই করে ১৬ জুলাই আবার বৈঠক করবে কমিটি।
বৈঠক শেষে সংসদীয় কমিটির সভাপতি ইমরান আহমদ সাংবাদিকদের বলেন, কিছু বিষয়ে সাংবাদিকদের আপত্তি ছিল। সংসদীয় কমিটি কমিটি ১১টি ক্ষেত্রে পরিবর্তনের প্রস্তাব করেছে। সাংবাদিকেরা নিজেদের সঙ্গে আলোচনা করে নিজেদের অবস্থান জানাবেন। ১৬ জুলাই আবার বৈঠক হবে।
তিনি আরও বলেন, প্রস্তাবিত আইনের ২১ ধারায় মুক্তিযুদ্ধের চেতনার কথা বলা হয়েছে। এর সংজ্ঞা হবে সংবিধানের প্রস্তাবে যে ব্যাখ্যা দেওয়া আছে, তা এখানে প্রযোজ্য হবে। ২৫ নম্বর ধারার ‘খ’ উপধারা (এমন কোনো তথ্য সম্প্রচার বা প্রকাশ করা, যা কোনো ব্যক্তিকে নীতিভ্রষ্ট বা অসৎ করতে পারে) বাতিল এবং সব মিলে দুটি উপধারা করা, ২১ ধারায় সাজা যাবজ্জীবনের ক্ষেত্রে ১৪ বছর করার প্রস্তাব করা হয়েছে। আর সর্বোচ্চ সাজার কথা আইনে বলা হয়েছে। অপরাধ বিবেচনায় আদালত ঠিক করবেন সর্বনিম্ন সাজা কত দিন হবে। এছাড়া কিছু ক্ষেত্রে সাজা ও জরিমানার পরিমাণ কমানো এবং কিছু শব্দগত পরিবর্তন আনার প্রস্তাব করা হয়েছে।
বৈঠক শেষে সম্পাদক পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মাহ্ফুজ আনাম সাংবাদিকদের বলেন, প্রথম দফা আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে কিছু সংশোধনী প্রস্তাব করা হয়েছে। তারা সেগুলো পড়ে দেখার সুযোগ পাননি বলে তাৎক্ষণিকভাবে মতামত দিতে প্রস্তুত ছিলেন না। এসব সংশোধনীর বিষয়ে নিজেদের মধ্যে আলোচনা করতে হবে। আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেন, যে পরিবর্তনগুলো করার প্রয়োজন ছিল, সে পরিবর্তনগুলো করা হয়েছে। ওনারা (সাংবাদিক পক্ষ) বলেছেন, এই পরিবর্তনগুলো নিয়ে তারা নিজস্ব ফোরামে আলোচনা করবেন। ১৬ জুলাই আবার বৈঠক হবে।
সূত্র জানায়, প্রস্তাবিত আইনে ডিজিটাল গুপ্তচরবৃত্তির সংজ্ঞায় অফিসিয়াল সিক্রেটস অ্যাক্ট অনুসরণ করার কথা বলা হয়। এতে সাংবাদিকেদের পক্ষ থেকে আপত্তি জানানো হয়। এ বিষয়টি আরও পর্যালোচনা করা হবে।
এ বিষয়ে বিএফইউজের সভাপতি মনজুরুল আহসান বুলবুল সাংবাদিকদের বলেন, অফিশিয়াল সিক্রেটস অ্যাক্ট তথ্য অধিকার আইনের সঙ্গে সাংঘর্ষিক।