চট্টগ্রাম ও রাজশাহীতে ট্যানারি শিল্পাঞ্চল হবে: প্রধানমন্ত্রী
তারিথ
: ২২-১১-২০১৮
অনলাইন ডেস্ক :
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, তাঁর সরকার পুনরায় নির্বাচিত হলে চট্টগ্রাম ও রাজশাহীতে আধুনিক ট্যানারি ও স্বতন্ত্র চামড়া শিল্প অঞ্চল গড়ে তোলা হবে। সরকার এরইমধ্যে শিল্পাঞ্চলের উপযোগী স্থান নির্ধারণে কর্মকর্তাদের নির্দেশ দিয়েছে উল্লেখ করে তিনি আরো বলেন, তাঁর দল পুননির্বাচিত হলে চামড়া শিল্পাঞ্চল ও ট্যানারি নির্মিত হবে। প্রধানমন্ত্রী গতকাল বৃৃহস্পতিবার বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে ‘বাংলাদেশ লেদার ফুটওয়্যার অ্যান্ড লেদার গুডস ইন্টারন্যাশনাল সোর্সিং শো’ উদ্বোধনকালে এ কথা বলেন। শেখ হাসিনা চামড়া শিল্প নেতৃবৃন্দকে বলেন, আমি নির্বাচিত হলে শিল্পাঞ্চল ও ট্যানারি নির্মাণ করব। অন্যথায় আপনারা নিশ্চিত করবেন যে নতুন সরকার এই পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করবে। প্রধানমন্ত্রী নবনির্মিত বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলের প্রত্যেকটিতে বিশেষ করে চামড়া শিল্পের জন্য একটি করে স্থান রাখতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেন। আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন বর্তমান সরকার রাজনৈতিক কূটনীতির চেয়েও এখন অর্থনৈতিক কূটনীতিতে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রী বলেন, এক সময় আমাদের কূটনীতিটা রাজনৈতিক ছিল। এখন এটা হয়ে গিয়েছে অর্থনৈতিক, অর্থাৎ অর্থনৈতিক কূটনীতিটাকেই আমরা এখন গুরুত্ব দিচ্ছি। কাজেই বিভিন্ন দেশে আমাদের অ্যাম্বাসেডর ও হাই কমিশনার যারা, তাদের একটা দায়িত্ব থাকবে যে যে দেশেই থাকেন, সেই দেশে আমাদের কোন পণ্যটা যেতে পারে, কোন পণ্যটার মার্কেট আছে সেগুলো একটু খুঁজে বের করা, আলাপ আলোচনা করা। কী ধরনের বিনিয়োগ বিদেশ থেকে আসতে পারে তা খুঁজে বের করা এবং সেভাবে উৎপাদন বাড়াতে উদ্যোক্তাদের প্রতি আহ্বান জানান সরকারপ্রধান। তিনি বলেন, সরকার সারাদেশে একশ অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তোলার যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে, সেখানে যাতে দেশি-বিদেশি সব ধরনের বিনিয়োগ হয়, সে দিকে নজর দেওয়া হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই অনুষ্ঠানে তিনি যে ব্যাগটি নিয়ে এসেছেন, সেটা দেশে তৈরি চামড়ার ব্যাগ। বিদেশে গেলেও তিনি বাংলাদেশের তৈরি ব্যাগ নিয়েই যান। জার্মান চ্যান্সেলর অ্যাঙ্গোলা মের্কেলকে বাংলাদেশের চামড়ার ব্যাগ উপহার দেওয়ার ইচ্ছার কথাও এ সময় তিনি প্রকাশ করেন। ব্যবসায়ীদের উদ্দেশ্য করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০০৯ থেকে আমরা ক্ষমতায় আছি, প্রায় দশ বছরের কাছাকাছি হয়ে গেল। আমি আপনাদের কাছেই ছেড়ে দিচ্ছি। আপনারাই বিচার করে দেখবেন। শেখ হাসিনা বলেন, ব্যবসা বাণিজ্য করেন ব্যবসায়ীরা। সরকার ব্যবসা করে না। কিন্তু ব্যবসায়ীদের জন্য পরিবেশ সৃষ্টি করা, সুযোগ তৈরি করা, আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে বাজার খোঁজা, সে অনুযায়ী পণ্য উৎপাদন ও রপ্তানির ব্যবস্থা করা সরকারেরও দায়িত্ব। আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন বর্তমান সরকার সেসব দিকে খেয়াল রেখে দেশের শিল্পকে আরও উন্নত করতে কাজ করছে। পাশাপাশি দেশের অভ্যন্তরে মানুষের আর্থ-সামাজিক উন্নতি যেন হয়, যাতে মানুষের ক্রয় ক্ষমতা বাড়ে এবং ক্রয় ক্ষমতা বৃদ্ধির ফলে দেশের ভেতরেই যেন নিজস্ব বাজার সৃষ্টি হতে পারে- সেদিকে বিশেষ দৃষ্টি দিয়েই অর্থনৈতিক পরিকল্পনা নিয়ে আমরা কাজ করে যাচ্ছি। দেশের সাধারণ মানুষের পাশাপাশি ব্যবসায়ীরাও সরকারের এসব পদক্ষেপের সুফল পাচ্ছে বলে মন্তব্য করেন শেখ হাসিনা। ব্যবসা বাণিজ্যের সম্প্রসারণে কক্সবাজারে আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন বিমানবন্দর করার পরিকল্পনার কথা জানানোর পাশাপাশি যুব সমাজকে প্রশিক্ষণ দিয়ে উপযুক্ত করে গড়ে তোলার কথা বলেন তিনি। চামড়া শিল্পের উন্নয়নে নেওয়া বিভিন্ন পরিকল্পনা বাস্তবায়নের কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, নির্বাচন সামনে। যদি আসতে পারি তখন পরিকল্পনাগুলো বাস্তবায়ন করব। যদি নাও আসতে পারি, এটা বলে গেলাম, আপনারা যারা ব্যবসার সঙ্গে জড়িত আপনারা করিয়ে (বাস্তবায়ন) নেবেন। সেটাও আমি চাই, যেই সরকারই আসুক। আমি আসলে তো সুযোগ করেই দেব। বক্তব্য শেষে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে চামড়াজাত পণ্যের প্রদর্শনী ঘুরে দেখেন প্রধানমন্ত্রী। বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব শুভাশীষ বসু, এফবিসিসিআই প্রেসিডেন্ট শফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন। এতে লেদার গুডস অ্যান্ড ফুটওয়্যার ম্যানুফ্যাকচারাস অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ সভাপতি সফিউল ইসলাম স্বাগত বক্তৃতা করেন।