বিদ্যুৎ-জ¦ালানিসহ বাংলাদেশে বিভিন্ন খাতে জার্মানি আরও বিনিয়োগে আগ্রহী বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশে দেশটির নতুন রাষ্ট্রদূত পিটার ফারেনহোলৎজ। গতকাল মঙ্গলবার সকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে তার কার্যালয়ে সাক্ষাতে গিয়ে এই আগ্রহের কথা জানান নতুন রাষ্ট্রদূত। পরে প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন। বাংলাদেশের বিভিন্ন খাতে জার্মানির বিনিয়োগে রয়েছে। স¤প্রতি পায়রায় ৩৬০০ মেগাওয়াট ক্ষমতার এলএনজিভিত্তিক একটি বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মার্ণে সরকারের সঙ্গে সমঝোতা করেছে জার্মানির কোম্পানি সিমেন্স। কক্সবাজারের মহেশখালীতেও সিমেন্সে একই ক্ষমতার আরেকটি বিদ্যুৎকেন্দ্র করার পরিকল্পনা করেছে। জার্মান রাষ্ট্রদূত বাংলাদেশে বিনিয়োগের আগ্রহের কথা জানালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, বিনিয়োগ সুবিধার জন্য তার সরকার ১০০টি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তুলছে। বাংলাদেশের উদার বিনিয়োগ নীতির সুবিধা নিয়ে জার্মান ব্যবসায়ীরা এসব অর্থনৈতিক অঞ্চলে শিল্প স্থাপন করতে পারে। বিদ্যুৎ-জ¦ালানি ছাড়াও রোহিঙ্গা সঙ্কট, বিভিন্ন ক্ষেত্রে অর্থায়ন ও ই-পাসপোর্টের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে নতুন রাষ্ট্রদূতের আলোচনা হয়েছে বলে জানান প্রেস সচিব। নির্যাতনের মুখে মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসা ১১ লাখ রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দেওয়ায় শেখ হাসিনার প্রশংসা করেছেন পিটার। নিজেদের দেশেও শরণার্থীদের আশ্রয় দেওয়ার কথা উল্লেখ করে তিনি রোহিঙ্গাদের সহায়তায় তার দেশের ৭৫ মিলিয়ন ডলার সহায়তা দেওয়ার কথা জানান। রাষ্ট্রদূত বলেন, বাংলাদেশের বিভিন্ন খাতে জার্মানি ইতোমধ্যে ৩০০ মিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করেছে। বাংলাদেশের পোশাক শ্রমিকদের মজুরি বাড়ানোর কথা জানালে রাষ্ট্রদূত এ পদক্ষেপের প্রশংসা করেন। এসময় প্রধানমন্ত্রীর পররাষ্ট্র বিষয়ক উপদেষ্টা গওহর রিজভী, মুখ্য সচিব নজিবুর রহমান, সামরিক সচিব মিয়া মোহাম্মদ ময়নুল আবেদিন উপস্থিত ছিলেন। ইতালির রাষ্ট্রদূতের সাক্ষাৎ: জার্মান রাষ্ট্রদূতের পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে দেখা করেন ইতালির রাষ্ট্রদূত মারিও পালমা। প্রেস সচিব বলেন, হলি আর্টিজানসহ বিভিন্ন স্থানে জঙ্গি তৎপরতা মোকাবেলায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে ধন্যবাদ জানান রাষ্ট্রদূত। ২০১৬ সালে গুলশানের হলি আর্টিজান বেকারিতে জঙ্গি হামলায় প্রায় ২০ জন বিদেশি নাগরিক নিহত হন; যাদের মধ্যে কয়েকজন ইতালির নাগরিকও রয়েছেন। ওই হামলার ঘটনার ‘দ্রæত বিচার’ শুরুর প্রশংসা করেন রাষ্ট্রদূত। মারিও পালমা ঢাকার বাইরে বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থান পরিদর্শনের কথা উল্লেখ করেন। লালনের কিছু গান তিনি নিজে ইটালিয়ান ভাষায় অনুবাদের কথাও জানান। প্রধানমন্ত্রী এ সময় বলেন, তার সরকার গ্রাম ও হতদরিদ্র মানুষের জীবনমান পরিবর্তনে কাজ করে যাচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী তার ইতালি সফরের সময় দেশটির আতিথেয়তার প্রশংসা করেন এবং দুই দেশের পারস্পরিক সহযোগিতার সম্পর্ক নিয়েও সন্তোষ প্রকাশ করেন।