নিরাপত্তা নিশ্চিতে সকল মহাসড়ককে সিসিটিভির আওতায় আনার উদ্যোগ
তারিথ
: ০৪-১২-২০১৮
অনলাইন ডেস্ক :
নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে দেশের সকল মহাসড়ককে সার্বক্ষণিক ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরার (সিসিটিভি) আওতায় আনার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। তার মধ্যে পুলিশ ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের পুরোটাই সিসিটিভির আওতায় আনতে চায়। যাতে ওই মহাসড়কের সারাদিনের ভিডিওচিত্র পর্যালোচনা করে সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করা যায়। পর্যায়ক্রমে অন্য মহাসড়কগুলোকেও সিসিটিভির আওতায় নিয়ে আসার পরিকল্পনা রয়েছে। পাশাপাশি রেকার ও অ্যাম্বুলেন্সসহ বিভিন্ন প্রকার যানবাহন ও সরঞ্জাম কেনার মাধ্যমে হাইওয়ে পুলিশকে আরো গতিশীল করারও পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে। তবে মহাসড়কগুলোতে সিসিটিভি বসানোর কাজটি শুরু করতে আরো বেশ কিছুদিন সময় লাগবে বলে সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়। সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, অভ্যন্তরীণ ব্যবসা-বাণিজ্য ছাড়াও আমদানি-রফতানি বাড়ানোর জন্য মহাসড়কগুলোয় শৃঙ্খলা ও নিরাপদ যাতায়াত সুবিধা নিশ্চিত করা জরুরি। কারণ দেশের অর্থনৈতিক ক্রমবিকাশ ও অগ্রযাত্রায় মহাসড়কগুলোর পূর্ণ ব্যবহার, রক্ষণাবেক্ষণের কোনো বিকল্প নেই। কিন্তু সার্বিক অগ্রগতি ও উন্নয়নের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে প্রতিনিয়ত যানবাহনের সংখ্যা বেড়ে চলেছে। ফলে মহাসড়কগুলোয় তৈরি হচ্ছে যানজট। ঘটছে দুর্ঘটনা ও প্রাণহানি। অতিরিক্ত যানবাহনের চাপে যাত্রীদের নিরাপদ ভ্রমণ নিশ্চত করা চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। পুলিশের হাইওয়ে ইউনিটের সক্ষমতা না বাড়ালে এসব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করা সম্ভব নয়। সে জন্য পুলিশ সদর দফতরের প্রস্তাবনা অনুযায়ী সরকার হাইওয়ে পুলিশের সক্ষমতা বাড়াতে উদ্যোগ নিয়েছে। সূত্র জানায়, দেশের মহাসড়কগুলোর মধ্যে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কটি দেশের মূল বাণিজ্যিক রুট হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। সেজন্য আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ককে সিটিটিভি ক্যামেরার আওতায় এনে সার্বক্ষণিক নজরদারির উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। যাতে অনিয়ন্ত্রিত যানবাহন, ট্রাফিক জ্যাম ও সড়ক দুর্ঘটনাকে নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হবে। ফলে নাগরিকের জীবন ও সম্পদের নিরাপত্তা দেয়ার সক্ষমতা বাড়বে। প্রায় একবছর আগেই হাইওয়ে পুলিশের সক্ষমতা বাড়াতে আধুনিক সরঞ্জাম, প্রয়োজনীয় যানবাহন সংগ্রহের মাধ্যমে হাইওয়ে পুলিশের সক্ষমতা বাড়ানোর জন্য প্রস্তাব করা হয়। ওই লক্ষ্যে স¤প্রতি জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি ‘হাইওয়ে পুলিশের সক্ষমতা বৃদ্ধি’ নামে ২৪৪ কোটি টাকার একটি প্রকল্পের অনুমোদন দেয়া হয়েছে। আগামী ২০২১ সালের মধ্যে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ককে সিসিটিভির আওতায় নিয়ে আসা সম্ভব হবে। সূত্র আরো জানায়, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রস্তাবিত প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে হাইওয়েতে যানবাহনের গতিসীমা নিয়ন্ত্রণ রাখা সম্ভব হবে। দুর্ঘটনাসহ বিভিন্ন ঘটনা ও বিষয়ে মামলার তদন্তের ক্ষেত্রেও সুফল পাওয়া যাবে। অস্ত্র ও মাদকপাচার রোধ ও চোরাচালান প্রতিরোধ করা যাবে এবং সন্দেহভাজন অভিযুক্তদের গ্রেফতারের জন্য প্রযুক্তিগত সহায়তা পাওয়া যাবে। তখন মহাসড়কের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে নাগরিকদের মধ্যে নিরাপত্তাবোধ বাড়িয়ে তোলা সম্ভব হবে। তাছাড়া আধুনিক টেকনোলজির মাধ্যমে সন্দেহজনক গতিবিধি শনাক্ত করা, অটোমেটিক নম্বর প্লেট শনাক্ত করা, উদ্দেশ্যহীন ঘোরাফেরা বা সন্দেহজনক আচরণ শনাক্ত করার মাধ্যমে মহাসড়ককে যানজট মুক্ত রাখা যাবে। এদিকে দেশের মহাসড়কগুলোকে সিসিটিভির আওতায় নিয়ে আসাসহ হাইওয়ে পুলিশের সক্ষমতা বাড়ানোর বিষয়ে হাইওয়ে পুলিশের ডিআইজি মো. আতিকুল ইসলাম জানান, প্রতিনিয়ত পুলিশের সক্ষমতা বাড়ানোর কাজ চলছে। তবে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কসহ বিভিন্ন মহাসড়ককে সিসিটিভির আওতায় নিয়ে আসার কাজ শুরু করতে আরও সময় লাগবে। কারণ সেগুলো বাস্তবায়ন করতে আরো অনেক ধাপ অতিক্রম করতে হবে। তবে সেটা বাস্তবায়িত হলে মহাসড়কের অপরাধ নিয়ন্ত্রণে হাইওয়ে হাইওয়ে পুলিশ অনেক এগিয়ে যাবে।