মনোনয়ন দাখিলে ৭ জনের বেশি লোকবল নেওয়া যাবে না: ইসি
তারিথ
: ২৭-১১-২০১৮
অনলাইন ডেস্ক :
বুধবার মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ সময় জানিয়ে নির্বাচন কমিশন (ইসি) সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ বলেছেন, রিটার্নিং কর্মকর্তা বা সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ে মনোনয়নপত্র দাখিলের সময় ৫-৭ জনের বেশি লোকবল নেওয়া যাবে না। একইসঙ্গে কোনো মিছিল, শোডাউন করা যাবে না। এর ব্যত্যয় হলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। গতকাল মঙ্গলবার নির্বাচন ভবনের মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। হেলালুদ্দীন আহমদ বলেন, মনোনয়নপত্র দাখিলের সময় কোনো ধরনের শোডাউন, মিছিল, মশাল-মিছিল করা যাবে না। প্রার্থিরা প্রচারণার কাজ চালাতে পারবেন প্রতীক বরাদ্দের পর অর্থাৎ ১০ ডিসেম্বর থেকে আনুষ্ঠানিক প্রচারণা চালাতে পারবেন। এর আগে কেউ কোনো ধরনের প্রচার চালাতে পারবেন না। এ ক্ষেত্রে মিছিল, মশাল-মিছিল, মোটর সাইকেল, ট্রাক, বাসহ কোনো যানবাহন সহকারে মিছিল বা মশাল মিছিল বা শোডাউন করতে পারবে না। আমরা রিটার্নিং কর্মকর্তাকে এ বিষয়ে নির্দেশনা দিয়েছি। কারো বিরুদ্ধে নির্বাচনী আচরণবিধি ভঙ্গের প্রমাণ পেলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবে ইসি সচিব বলেন, মন্ত্রীরা সরকারি গাড়ি করে এবং পতাকা লাগিয়ে নির্বাচনী প্রচারণা করতে পারবে না। সংসদ সদস্যরাও সরকারি সুবিধা নিয়ে বা গাড়িতে এ-সংক্রান্ত স্টিকার লাগিয়ে নির্বাচনী প্রচার কাজ চালাতে পারবে না। তিনি বলেন, শুধুমাত্র দলীয় প্রধান নির্বাচনী কাজে হেলিকপ্টার ব্যবহার করতে পারবেন। তবে হেলিকপ্টার থেকে কোনো প্রকার লিফলেট বা প্রচার সামগ্রী ফেলা যাবে না। দলীয় প্রধান যেহেতু বিভিন্ন স্থানে যান, সেজন্য তিনিই কেবল হেলিকপ্টার ব্যবহার করতে পারবেন। বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া তিন আসনে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করছেন। সচিব এ বিষয়ে বলেন, তিনি নির্বাচনের অংশ নিতে পারবেন কি না, তা আদালতের বিষয়। আমাদের কিছু করার নেই। আগামী ৩০ ডিসেম্বর সংসদ নির্বাচনের ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ সময় ২ ডিসেম্বর। প্রার্থিতা প্রত্যাহার ৯ ডিসেম্বর। আর প্রতীক বরাদ্দ ১০ ডিসেম্বর। একাদশ সংসদ নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা অর্থাৎ, জেলা প্রশাসক বা বিভাগীয় কমিশনারদের ব্রিফ না করতে সরকারকে নির্দেশনা দিয়েছে নির্বাচন কমিশন। এ ক্ষেত্রে তাদের কেবল নির্বাচন কমিশনই ব্রিফ করবে। গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে নির্বাচন কমিশন সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ নির্বাচন ভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে একথা জানান। তিনি বলেন, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে নির্বাচন কমিশনের এ-সংক্রান্ত পাঠানো হয়েছে। হেলালুদ্দীন আহমদ বলেন, রিটার্নিং কর্মকর্তারা সাংবাদিকদের ব্রিফ করতে পারবেন না, এমন কোনো নির্দেশনা জারি করা হয়নি। তবে রিটার্নিং কর্মকর্তাদের নির্বাচন কমিশন ছাড়া অন্য কেউ ব্রিফ করতে পারবেন না, সে নির্দেশনা মন্ত্রিপরিষদকে দেওয়া হয়েছে। কাজেই রিটার্নিং কর্মকর্তারা সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলতে বা ব্রিফ করতে কোনো বাধা নেই। যেহেতু রিটার্নিং কর্মকর্তারা নির্বাচন কমিশনের অধীন, তাই সরকারের কোনো মন্ত্রণালয়, দফতর তাদের ব্রিফ করতে পারবেন না। এ ক্ষেত্রে রিটার্নিং কর্মকর্তাদের কেবল নির্বাচন কমিশনেই ব্রিফ করবে। ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার ও জেলা প্রশাসকদের সংসদ নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা নিয়োগ করেছে নির্বাচন কমিশন। স¤প্রতি বিএনপি ও জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট থেকে অভিযোগ করা হয়-প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে তাদের ডেকে নিয়ে ব্রিফ করা হয়েছে। তাদের অভিযোগ আমলে নিয়ে তাই নির্বাচন কমিশন মন্ত্রিপরিষদকে ওই নির্দেশনা দেয়। নির্দেশনায় বলা হয়, ঢাকা ও চট্টগ্রামের বিভাগীয় কমিশনার এবং জেলা প্রশাসকদের রিটার্নিং কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। তাদেন চাকরি বর্তমানে নির্বাচন কমিশনের অধীন। তাই নির্বাচনের ফলাফল গেজেট আকারে প্রকাশ পর্যন্ত তারা ইসির অনুমতি ছাড়া কর্মস্থল ত্যাগ করতে পারবেন না। এ ছাড়া সকারের উন্নয়ন, প্রশাসনিক বা নির্বাচন সংক্রান্ত কোনো ব্রিফে অংশ নিতে পারবেন। স্থানীয় সরকার প্রধানদের নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার বিষয়ে নিয়ে ইসি সচিব বলেন, দÐবিধির ২১ ধারা অনুযায়ী, সাংবিধানিক পদে নিয়োগপ্রাপ্ত নয় এমন ব্যক্তি যিনি লাভজনক পদে আছেন, তাকে পদত্যাগ করে নির্বাচনে অংশ নিতে হবে। জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান, উপজেলা পরিষদ ও ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের প্রধানদের পদত্যাগ করে নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন। আইন অনুযায়ী, সিটির মেয়ররা আগে থেকেই স্বপদে থেকে সংসদ নির্বাচনে অংশ নিতে পারেন না। আর পৌরসভা মেয়রা পদে থেকে নির্বাচন করতে আদালতের আদেশ নিয়েছেন। তাই তাদের ক্ষেত্রে কোনো বাধা নেই। তবে অন্য কোনো স্থানীয় সরকার প্রধানরা পারবেন না। সচিব বলেন, সরকারি ব্যাংকের চেয়ারম্যান কোনো নিয়মিত, স্থায়ী পদ না। তাই তারা স্বপদে থেকে নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন। সচিব আরো বলেন, আজ (গতকাল মঙ্গলবার) আমরা আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে বাজেট নিয়ে আলোচনায় বসেছিলাম। সেখানে আমরা বলেছি আগামি সাতদিনের মধ্যে নিজ নিজ বাহিনীর বাজেট প্রস্তাবনা দেওয়ার জন্য। এ ক্ষেত্রে আনসার বাহিনীকে পুরো টাকা অগ্রিম দেবো। পুলিশ, বিজিবিসহ অন্যান্যের ৫০ শতাংশ অগ্রিম দেওয়া হবে। আগামী ৩০ ডিসেম্বর সংসদ নির্বাচনের ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ সময় ২ ডিসেম্বর। প্রার্থিতা প্রত্যাহার ৯ ডিসেম্বর। আর প্রতীক বরাদ্দ ১০ ডিসেম্বর।