বড় একটি দল না থাকায় উপজেলা নির্বাচনে ভোটার উপস্থিতি কম: সিইসি
তারিথ
: ১৩-০৩-২০১৯
অনলাইন ডেস্ক :
প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নুরুল হুদা বলেছেন, বড় একটি রাজনৈতিক দল উপজেলা নির্বাচন বয়কট করায় প্রথম ধাপে ভোটার উপস্থিতি কম হয়েছে। তবে নির্বাচন ও ভোটের প্রতি তাদের অনীহার কোনো কারণ ঘটেনি। গতকাল বুধবার দুপুরে সিলেটের জেলা প্রশাসক সম্মেলন কক্ষে প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের সঙ্গে দ্বিতীয় ধাপে সিলেট জেলার ১২টি উপজেলা নির্বাচন নিয়ে এক মতবিনিময় সভা শেষে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন কে এম নুরুল হুদা। এ সময় সিইসি বলেন, বড় একটি দল নির্বাচন বয়কট করেছে। আমার ধারণা, সে কারণে নির্বাচনে তাদের ভোটার আসেনি এবং নির্বাচনটা ওইভাবে প্রতিদ্ব›িদ্বতাপূর্ণ হয়নি। তবে নির্বাচন নিয়ে তাঁদের কোনো অনীহা ঘটেনি। তিনি বলেন, কত শতাংশ ভোট হলে জনপ্রতিনিধি নির্বাচিত হবেন, এর কোনো মাপকাঠি নেই। সবচেয়ে বেশি ভোট যিনি পাবেন, তিনিই নির্বাচিত হবেন। কতভোট পড়লো তা কমিশনের দেখার বিষয় না। যতো সংখ্যক ভোটার যাবেন ভোট দিতে, ততো সংখ্যকের ভোট নেওয়া হবে। তাদের ভোটে যারা নির্বাচিত হবেন, তারাই হবেন জনপ্রতিনিধি। মতবিনিময় সভায় সুষ্ঠ ও সুন্দরভাবে নির্বাচন পরিচালনার জন্য রিটার্নিং কর্মকর্তাসহ দায়িত্বশীল সবাইকে যথাযথভাবে কাজ করার আহŸান জানান সিইসি কে এম নুরুল হুদা। এ সময় নির্বাচনে কোনো অবস্থাতেই সহিংসতা বরদাশত করা হবে না বলে জানান সিইসি। তিনি বলেন, সহিংসতা বন্ধ করতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে কঠোর হতে হবে। প্রধান নির্বাচন কমিশনার আরো জানান, পঞ্চম উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের প্রথম ধাপ সুষ্ঠু হয়েছে। প্রশাসনের সহযোগিতায় নির্বাচনটা ভালোভাবে করা সম্ভব হয়েছে। দ্বিতীয় ধাপের (১৮ মার্চ) নির্বাচনও সুষ্ঠু করতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য ও নির্বাচনী কর্মকর্তাদের গুরুত্বপূর্ণ ভ‚মিকা পালন করতে হবে বলে জানান তিনি। প্রশাসনের আন্তরিকতার ফলে ভোট উৎসব সুষ্ঠু হয়ে থাকে জানিয়ে সিইসি নুরুল হুদা বলেন, প্রত্যেক ভোটার বিনা বাধায় যেন পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিতে পারেন, এ রকম পরিবেশ তৈরি করতে হবে। ভোটকেন্দ্রে যেন কোনো ভোটারকে বাধা দেওয়া না হয়, সে বিষয়েও দৃষ্টি দিতে হবে বলে জানান তিনি। সিইসি আরো বলেন, ভোট গ্রহণ শেষে প্রত্যেক প্রার্থীর একজন করে এজেন্টের উপস্থিতিতে ভোট গণনা সম্পন্ন করে তার স্বাক্ষর নিতে হবে। রাতে ব্যালট বাক্স ভর্তির আশঙ্কায় ইভিএম চালু করার বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নে নির্বাচন কমিশনার বলেন, নির্বাচনে ব্যালট বাক্স বড় ঝামেলা। এজন্য ইভিএম চালু করলে সমস্যা সমাধান হয়ে যাবে। যদিও ইভিএম চালু করার ব্যাপারে আগে থেকেই সিদ্ধান্ত আছে। প্রেক্ষাপট বিবেচনায় ইভিএম চালুর কথা বলেছি। কেননা, নির্বাচনের ব্যালট বাক্স ছিনতাই হয়, আগুন দেওয়া হয়, উপড়ে ফেলা, জোর করে সিল মারার ঘটনা ঘটে। আর আগের রাতে নির্বাচনের বাক্সে ভোট দেওয়া পুরনো ঘটনা। তিনি বলেন, দ্বিতীয় ধাপে সিলেটে ইভিএম চালু করতে পারিনি। তবে চতুর্থ ও পঞ্চম ধাপে ১০টি উপজেলায় ইভিএম পদ্ধতিতে ভোটগ্রহণ করা হবে। বিশেষ করে সদর উপজেলাগুলোতে ইভিএম পদ্ধতিতে ভোটগ্রহণের উদ্যোগ নেওয়া হবে। তার কারণ, সেখানে যোগাযোগ ব্যবস্থা একটু ভাল। প্রাথমিক পর্যায়ে মানুষের সঙ্গে পরিচিতি করানোর জন্য এটা শুরু করব। এ ছাড়া পরবর্তী সময়ে পৌরসভা ও সংসদ আসনের উপনির্বাচনে পুরোপুরি ইভিএমে ভোট গ্রহণ করা হবে বলেও জানান সিইসি। নির্বাচন কমিশনার বলেন, নিষেধ অমান্য করে সুনামগঞ্জ-১ আসনের সংসদ এমপি রতন এলাকায় থাকার বিষয়টি তার জানা নেই। তিনি (এমপি রতন) নির্বাচনে প্রভাব বিস্তার করেছেন কিনা, খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সিলেটে পঞ্চম উপজেলা পরিষদ নির্বাচন সুষ্ঠু হবে এমন আশাবাদ ব্যক্ত করে তিনি বলেন, সিলেটে নির্বাচনের পরিবেশ অনেক ভালো। সিলেট নিয়ে শঙ্কা খুব কম। এখানের মানুষ নিয়ম মেনে চলেন। নির্বাচনে এতোগুলো প্রার্থী দাঁড়ালেও অন্যান্য স্থানের মতো কোনো ধরনের সহিংসতা নেই। এর আগে আইন-শৃঙ্খলা কমিটির বৈঠকে নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ করতে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের বিভিন্ন দিক নির্দেশনা দেন সিইসি। সভায় বিভাগীয় প্রশাসন, জেলা প্রশাসন, রেঞ্জ ও মেট্টোপলিটন পুলিশ, বিজিবি, র্যাব, আনসার ভিডিপিসহ নির্বাচন সংশ্লিষ্ট উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।