ফরিদপুরে চলতি মৌসুমে পেঁয়াজের বাম্পার ফলন হয়েছে। বাজারে পেয়াজের দাম পাওয়ায় কৃষকের মুখে হাঁসি ফুটেছে। এই সময় ভারত থেকে পেঁয়াজের আমদানি না করার দাবী জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। আর পেঁয়াজ আবাদে কৃষকদের সবধরনের সহযোগিতা করার কথা জানালেন কৃষিবিভাগ। ফরিদপুর জেলার মাটি ও আবহাওয়া পেঁয়াজ চাষের উপযোগী হওয়ায় এ জেলায় দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে পেঁয়াজের আবাদ। ভাল মানের পেঁয়াজ উৎপাদনে ফরিদপুর জেলার সুনাম রয়েছে। এই জেলায় মুড়িকাটা পেঁয়াজ, দানা পেঁয়াজ এবং হালি পেঁয়জের আবাদ করা হয়ে থাকে। জেলার নগরকান্দা ও সালথা উপজেলায় সবচেয়ে বেশী পেঁয়াজ উৎপাদন হয়ে থাকে। এছাড়াও জেলার অন্যান্য উপজেলাতেও পেঁয়াজের আবাদ হয়ে থাকে। বর্তমানে কৃষকেরা হালি পেঁয়াজ ঘরে তুলতে ব্যাস্ত সময় পার করছেন। বসেনেই কৃষানীরাও তারাও ব্যস্ত আছেন পেয়াজ ঘরে তুলার কাজে। এই জেলায় উৎপাদিত পেঁয়াজ স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় সরবরাহ করা হয়ে থাকে। বর্তমানে এক মন পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার টাকা থেকে ১১শ টাকায়। সদর উপজেলার চরমাধবদিয়া ইউনিযনের কৃষষক জুয়ের মল্লিক বলেন, পেঁয়াজের ফলন ভাল হয়েছে। বাজারে পেয়াজের দামও ভাল। আমাদের ১মন পেঁয়াজ উৎপাদন করতে খরচ হয়েছে ৮শ থেকে ৯শ টাকা। আমরা এখন পেঁয়াজ বিক্রি করছি ১১শ থেকে ১২শ টাকা। পেঁয়াজের দামটা আর একটু বাড়লে ভাল হয়। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্র জানায়, চলতি বছর পেঁয়াজ আবাদের লক্ষমাত্রা ধরা হয়েছিল ৩৫হাজার ৪৫ হেক্টর জমিতে। আবাদের লক্ষমাত্রা ছাড়িয়ে ৩৬ হাজার ১শত ৭০ হেক্টর জমিতে পেঁয়াজ আবাদ করা হয়েছে। উৎপাদন ৪ লক্ষ ৩৪ হাজার ৪০ মেট্রিক টন। নগরকান্দা বাজারের ব্যবসায়ী নিমাই সরকার জানান, আমরা কেজি পেঁয়াজ কিনছি ২৫ থেকে ২৭টাকায়। ঢাকা পর্যন্ত পৌছাতে কেজিতে ৩ থেকে ৪ টাকা খরচ হয়। আমরা ১টাকা ভাল পেলেই বিক্রি করে দেই। আর আডতদার তার আড়তদারী ভাড়া ১টাকা পায়। পেঁয়াজের মূল লাভটা করছে খুচরা ব্যবসায়ীরা। খুচরা ব্যবসায়ীরা আড়ত থেকে কিনে তাদের ইচ্ছেমত বিক্রি করছে। সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. আবুল বাসার মিয়া বলেন, চলতি বছর আবহাওয়া অনুকুরে থাকায় পেঁয়াজের বাম্পার ফলন হয়েছে। কৃষকেরা এবার পেঁয়াজে ভাল দাম পেয়েছে। চলতি মৌসুমে কৃষকেরা কেজি মুড়িকাটা পেঁয়াজ বিক্রি করছে ৮০টাকা থেকে ১০০টাকা। এখন কৃষকেরা হালি পেঁয়াজ ও দানা পেঁয়াজ ঘরে তুলছে। বর্তমানে পেয়াজের দামও ভাল। তবে কিছু দিন পেঁয়াজ ঘরে রাখতে পারলে কৃষক আরও বেশী দাম পাবে। কৃষি সম্প্রসারণ অদিদপ্তরের পক্ষ থেকে আমরা কৃষকদের সবধরনের সহযোগিতা করে থাকি। কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তর ফরিদপুর এর উপ-পরিচালক কার্তিক চন্দ্র চক্রবর্তী বলেন, সারা বাংলাদেশের মধ্যে ফরিদপুর জেলায় বেশী পেয়াজ উৎপাদন হয়। পেঁয়াজ আবাদের শুরু থেকেই আমরা কৃষকদের প্রশিক্ষণসহ বিভিন্ন পরামর্শ দিয়ে থাকি। পেঁয়াজের ফলন ভাল হয়েছে। বাজারে পেঁয়াজের দামও ভাল। কৃষক লাভবান হবে। সরকারি সহযোগিতা ও সার-অসুধের দাম কম এবং পেঁয়াজের সঠিক মূল্য পেলে আগামীতে আরও বেশী পেঁয়াজ উৎপাদন করতে পারবে বলে মনেকরছেন ফরিদপুর অঞ্চলের কৃষকেরা।