ধামরাই প্রতিটি মাঠ জুেেড় সরিষা ফুলের মৌ মৌ গন্ধে মুখরিত ফসলের মাঠ। যে দিকেই চোখ যায় শুধু হলুদ আর হলুদ। প্রকৃতির নির্মল বাতাসে ভেসে বেড়াচ্ছে সরিষা ফুলের মাতাল করা ঘ্রাণ। উপজেলার প্রতিটি মাঠে এখন শুধু সরিষা ফুলের হলুদ রঙের চোখ ধাঁ-ধাঁলো বর্ণীল সমরাহ। মৌমাছির গুনগুন শব্দে ফুলের রেণু থেকে মধু সংগ্রহ আর প্রজাপতির এক ফুল থেকে আরেক ফুলে পদার্পন এ অপরুপ প্রাকৃতিক দৃশ্য সত্যিই যেন মনো মুগ্ধকর এক মূহুর্ত। ভোরের বিন্দু বিন্দু শিশির আর সকালের মিষ্টি রোদ ছুঁয়ে যায় সেই ফুলগুলোকে। ভালো ফলনের আশায় উপজেলার কৃষকেরা রাতদিন পরিশ্রম করে যাচ্ছে। কৃষকের পাশাপাশি বসে নেই কৃষি কর্মকর্তারাও।এবারের প্রাকৃতিক দুযোর্গ কারণে ধামরাই উপজেলায় রোপ-আমন ধানের ব্যাপক ক্ষতি হলেও দ্রুত মাঠে মাঠে রবিশস্যের উপযুগি জমিতে গতবছেেরর ক্ষতি পুষিয়ে নিতে কৃষকরা আগাম সরিষা চাষে ব্যস্ত হয়ে উঠে। সরকার পর্যায় থেকে কৃষকদের মাঝে কৃষি উপকরণ, সরিষার বীজ, রাসায়নিক সার বিনা মূল্যে যথা সময়ে বিতরণ করায় এই এলাকার অসহায় কৃষকদের পক্ষে আগাম জাতের সরিষা বপণ করা সম্ভব হয়েছে ।প্রান্তিক কৃষকরা বলছেন সরিষা ক্ষেতে যদি মধু চাষ করা হয় তাহলে একদিকে যেমন ফলন বৃদ্ধি আবার অন্যদিকে বাড়তি লাভ মধু। আর তাই রবি শস্য সরিষার সঙ্গে মৌমাছি চাষ করে মধুর সংগ্রহের এ পদ্ধ তি জনপ্রিয় হয়ে উঠছে ধামরাই শরীফবাগ গ্রাম। কৃষিবিভাগের পরামর্শও সহযোগিতায় চলতি বছরে উপজেলায় সরিষা ক্ষেতে মধু সংগ্রহের এমন ১৩টি খামার গড়ে তোলা হয়েছে। বড় ধরনের কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে সরিষায় বাম্পার ফলনের পাশাপাশি মধু বিক্রি করে লাভবান হওয়ার আশা করছেন কৃষকরা। আর সরিষা ক্ষেতে মৌমাছির খামার করে লাভবানের উজ্জল সম্ভাবনা দেখছে স্থানীয় কৃষি কর্মকর্তারা।সরিষা ক্ষেতে মৌমাছি থাকলে তা স্বাভাবিকের চেয়ে ৩০ থেকে ৩৫ শতাংশ ফলন বাড়ে।’ কারণ হিসেবে তিনি জানান, মৌমাছি সরিষার ফুলে যে পরাগায়ন ঘটায় তাতে সরিষার দানা ভালো হয় এবং ফলনও বাড়ে। যে সরিষা ক্ষেতে মৌমাছি নেই সেখানে সরিষার ফলন কম হয়।চলতি মৌসুমে ধামরাই উপজেলার ১৬ টি ইউনিয়নে ৩ হাজার হেক্টর জমিতে সরিষা চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হলেও এবছর উপজেলায় প্রায়২ হাজার ২শ’ হেক্টর জমিতে সরিষার আবাদ হয়েছে।শÍরু তেই সরিষা ক্ষেতে পোকা-মাকড়ের আনাগোনা দেখা দিলেও মাঠ পর্যায়ে সরিষা চাষিদেরকে কৃষি অফিসের পক্ষ থেকে যথাযথ পরামর্শ ও প্রত্যক্ষ কারিগরী সহযোগিতার কারণে সরিষা ক্ষেত অনেকটা রোগ-বালাই মুক্ত হওয়ায় বাম্পার ফলনের আশা করছেন কৃষকরা।ধামরাই উপজেলার স্বর্নখালী গ্রামের সরিষা চাষি মনিরুল ইসলাম জানান, আমি চলতি মৌসুমে প্রায় ২বিঘা জমিতে সরিষা চাষ করেছি। কোন প্রকার দূর্যোগ ও রোগবালাই না থাকায় এবছর সরিষার বাম্পার ফলন পাব বলে আমি আশা করছি। উপজেলা কৃষি অফিসার মোঃ আরিফুল হাসান জানান,এবারে ধামরাাই উপজেলার১৬টি ইউনিয়নে বিগত বছরের তুলনায় সবচেয়ে বেশি পরিমান সরিষা চাষ হয়েছে। যথা সময়ে জমি চাষ যোগ্য হওয়ায় এলাকার কৃষকরা সুযোগ বুঝে সরিষা চাষ করেছে। কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে তাদেরকে যথাযথ পরামর্শ ও পরিচর্যার বিষয়ে দিক নির্দেশনা দেওয়া হচ্ছে।প্রাকৃতিক দূর্যোগে কোন প্রকার ক্ষতি না হলে ধামরাই উপজেলায় সরিষা আবাদের বাম্পার ফলনের সম্ভবনা রয়েছে। শুধু তাই নয় সরিষা চাষের জমিগুলো উব্ব্ররতা বেশি থাকায় কৃষকরা ইরি-বোরো চাষেও এর সুফল পাবে।