কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আবদুর রাজ্জাক বলেছেন, তামাক চাষে কৃষকদের নিরুৎসাহিতকরণে উৎপাদিত অন্য সব কৃষিপণ্যের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করতে হবে। কৃষিপণ্যের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করতে কৃষির আধুনিকায়ন, যান্ত্রিকিকরণ এবং রপ্তানির বাজার অপরিহার্য। সামগ্রীক অর্থে কৃষির আধুনিকায়নই তামাক চাষে নিরুৎসাহিত করবে চাষিদের।
গতকাল রোববার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে পল্লী কর্মসহায়ক ফাউন্ডেশন (পিকেএসএফ) মিলনায়তনে তামাক বিরোধী জাতীয় প্ল্যাটফর্ম-এর উদ্যোগে আয়োজিত ‘সেমিনার ও তামাক নিয়ন্ত্রণ পদক-২০১৯’ প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। পিকেএসএফ-এর সভাপতি ড. খলীকুজ্জমান আহমদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় আধ্যাপক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব:) আবদুল মালিক। অনুষ্ঠানে তামাক বিরোধী জনসচেতনতা বৃদ্ধিতে অগ্রণী ভ‚মিকার জন্য চার জনকে সম্মাননা দেওয়া হয়। কৃষিমন্ত্রী অনুষ্ঠানে আরও বলেন, তামাক ও তামাকজাত পণ্য উৎপাদনকারী কোম্পানিগুলো থেকে প্রতিবছর সরকারের প্রায় ২০ হাজার কোটি টাকা রাজস্ব আদায় হচ্ছে। আর পরোক্ষভাবে তার চেয়ে বেশি খরচ হচ্ছে তামাকজনিত রোগে আক্রান্ত লোকদের দীর্ঘমেয়াদি চিকিৎসা ও অন্যান্য আনুষঙ্গিক ব্যয়ের জন্য। শুধু যারা ঢাকায় বসবাস করে, তারা সঠিকভাবে তাদের কর দিলে তামাক কোম্পানির এই কর পরিহার করা সহজ হবে এবং তামাক উৎপাদনও বন্ধকরা যাবে। কৃষি মন্ত্রী বলেন, কৃষিকে সত্যিকার অর্থে বাণিজ্যিক কৃষি ও আধুনিক কৃষি করা গেলে ২০৪০ সালের আগেই তামাক মুক্ত সমাজ গড়া যাবে। এরই মাধ্যমে টেকসই উন্নয়ন লক্ষমাত্রা অর্জন সম্ভব হবে। এ ক্ষেত্রে সকলের অংশগ্রহণ জরুরী। অনুষ্ঠানে জানানো হয়, বিশ্বের তামাক উৎপাদনকারি ২০টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ১২তম, আর প্রথমে আছে চীন। বাংলাদেশের মধ্যে তামাক উৎপাদনকারী জেলার মধ্যে প্রথম হচ্ছে কুষ্টিয়া জেলা। তামাক চাষের নিবিড়তা ২০০৬ থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত ১৪৫% থেকে বৃদ্ধি পেয়ে ২১৩% হয়েছে। এতে আরও জানানো হয়, সামগ্রীকভাবে তামাক চাষের চেয়ে সবজি চাষ লাভজনক। তামাক উৎপাদন ও ব্যবহার বন্ধ করা গেলে দারিদ্র্যের দুষ্টচক্র ভেঙ্গে কৃষি, অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি এবং জলবায়ু পরিবর্তন রোধ করা সম্ভব।