ফরিদপুরে উচ্চ ফলনশীল জাতে সরিষার বাম্পার ফলন আশা করছে চাষীরা
তারিথ
: ০৮-০১-২০১৯
অনলাইন ডেস্ক :
ফরিদপুর জেলায় চলতি মৌসুমে উচ্চ ফলনশীল জাতের বারি-১৪, বারি-১৫, টোরি-৭ বা মাঘি সরিষা ও রাই সরিষার বাম্পার ফলনের আসা করছে চাষীরা। সরিষার বাম্পার ফলনের সম্ভাবনায় কৃষকের মুখে হাসি ফুটেছে। স্বল্প খরচে অল্প সময়ে উৎপাদন বেশি হওয়ায় দিন দিন বাড়ছে ফরিদপুর অঞ্চলে সরিষার আবাদ। মাঠে মাঠে এখন শুধুই হলুদের সমারহ। দৃষ্টি জুড়ে সরিষার হলুদ গাঁদার চিঠি। আর ফুল থেকে মধু আহরণে ব্যস্ত মৌমাছির দল।
বণ্যার পানি নেমে যাওয়ার সাথে সাথে ফরিদপুর জেলার চাষীরা বিনা চাষে সরিষার বীজ আবাদ করেছে। এ বছর আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় বাম্পার ফলনের আশা করছেন চাষীরা। সরিষা চাষ করতে সার কম প্রয়োগ করতে হয়, সেচ, কীটনাশক ও নিড়ানীর প্রয়োজন হয় না। কম খরচে ও সল্প সময়ে সরিষা ঘরে তুলা যায়। সরিষার আবাদের ফলে জমির উর্বরতা বৃদ্ধি পায়। ফলে পরবর্তীতে ইরি-বোরো-পেঁয়াজ চাষাবাদের সময় সার ব্যবহারের খরচ কমে আসে।
বীজ বোনার পর কোন প্রকার প্রাকৃতিক দৃর্যোগ না থাকায় দ্রæত বেড়ে উঠেছে সরিষার গাছ। আর কয়েকদিন পরেই শুরু হবে ক্ষেত থেকে সরিষা তুলার কাজ। এখন চলছে ক্ষেত পরিচর্যার কাজ। আমন ধান ও ইরি ধান, হালি পেঁয়াজ আবাদের মাঝে যে সময় থাকে, সে সময়ে চাষীরা জমি পতিত ফেলে না রেখে, সষিার আবাদ করে থাকে এবং অল্প সময়ে সরিষা আবাদ করে বাড়তি ফসল ঘরে তুলে। সরিষা তুলার পর চাষীরা ইরিধান/হালি পেঁয়াজ আবাদ করে, ধান ও পেঁয়াজ উঠার পর পাট ও পাটের মধ্যে চাষীরা রিলে আমন ধান আবাদ করে থাকে। ফলে একই জমিতে বছরে চারটি ফসল উৎপাদন করে চাষীরা ব্যাপক লাভবান হবেন।
কৃষক বক্তার খান বলেন, এবছর সরিষার বাম্পার ফলন আশা করছি। সরিষা চাষে খরচ কম। কমখরচে অধিক লাভ হয়। অল্প সময়ে সরিষা তুজা যায়। সরিষা তুলার পর ধান, পিয়াজ চাষ করা যা।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্র জানায়, চলতি বছর জেলার ৩হাজার ৫শ জন কৃষক-কৃষানীকে উচ্চ ফলনশীল জাতের সরিষা বীজ ৩হাজার ৫শ কেজি, ৭০হাজার কেজি ডিএপিসার, ৩৫হাজার কেজি এমওপি সার প্রনোদনা দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও ১হাজার ৯২জন কৃষক ও কৃষানীর মাঝে ২হাজার ১৮ কেজি সরিষা বীজ দেওয়া হয়েছে। চলতি বছর প্রায় ৭হাজার৫১০হেক্টোর জমিতে সরিষার আবাদ হয়েছে।
কৃষিবিদ কার্তিক চন্দ্র চক্রবর্তী বলেন, যেহেতু আমাদের দিন দিন জনসংখ্যা বাড়ছে এবং জমির পরিমান কমে যাচ্ছে। এজন্য ফসলের উৎপাদন যাতে একই জমিতেবেশী পাওয়া যায়। এই জন্য ক্রপিং প্যাটানে চেঞ্জ আনতে যাচ্ছি। বিশেষ করে আমাদের যে জমিগুলোতে তিন ফসল হতো, সেই জমি গুলোতে আমরা চার ফসলে রুপান্তর করছি। এতে আমাদের কৃষিখাতে আয় বাড়বে। একই জমিতে ৪টি ফসল উৎপাদন করতে সক্ষম হচ্ছি। চলতি বছর ব্যাপক হারে সরিষার আবাদ হয়েছে। ইতিমধ্যেই অনেক জমি থেকে সরিষা তুলে ধানের আবাদও শুরু করেছে কৃষকেরা। সরিষা আবাদ করে কৃষকেরা লাভ বান হচ্ছে।