শেরপুরের নকলা উপজেলার বারইকান্দি গ্রামের কৃষক শামছুর রহমান আবুল ও নালিতাবাড়ী উপজেলার ভেদীক‚ড়া গ্রামের শাহিনুর আলম বেগুনি রঙের ধানের ক্ষেতের আবাদ করে সবার নজর কেড়েছেন। এটি এমন একটি ধানের জাত যার পাতা ও কান্ডের রঙ বেগুনী। শুধু ধান গাছ নয়, চালের রং বেগুনী বলে জানিয়েছেন চাষী। তাই কৃষকদের কাছে এখনও পর্যন্ত এ ধানের পরিচিতি বেগুনী রঙের ধান বা পার্পল পেডি। পরীক্ষাম‚লক এ ধান চাষে আবুল ও শাহিনুরকে স্থানীয় কৃষি বিভাগ থেকে নিয়মিত সার্বিক পরামর্শ প্রদানসহ ধান ক্ষেত বিশেষ পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে। ভিন্ন রঙের ধান ক্ষেতটি সড়কের পাশে হওয়ায় পথচারীদের দৃষ্টি কাড়ছে প্রতিনিয়ত। কৃষক শামছুর রহমান আবুল ও শাহিনুর আলম জানান, গত বছর পত্রিকার একটি খবরে এ ধানের খোঁজ তারা জানতে পারেন। পরে স্থানীয় (নকলা-নালিতাবাড়ী) অফিসে যোগাযোগ করলে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তাদের সহযোগীতায় চলতি বোরো মৌসুমে কুমিল্লা সদর দক্ষিণ উপজেলার কৃষক মঞ্জুরুলের কাছ থেকে ১০ কেজি বেগুনি রঙের ধানবীজ এনে জমিতে আবাদ করেন। ক্ষেতে ধান গাছের বর্তমান অবস্থা দেখে চাষী ও কৃষি কর্তকর্তারা আশা করছেন, অন্যান্য ধানের তুলনায় ফলন ভালো হবে। নজর কাড়া বেগুনি রঙের এ ধানে কৃষকদের আগ্রহী করে তুলছে। কৃষি অফিস জানায়, মাঠপর্যায়ের অবস্থা বিবেচনায় ধানটির জীবনকাল ১৪৫-১৫৫ দিন। ফলন একরে ৫৫-৬০ মণ। কৃষি কর্মকর্তারা প্রত্যাশা করছেন, চালের রং শতভাগ বেগুনী হলে ধানটি উচ্চ ম‚ল্যের হবে। নকলা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ পরেশ চন্দ্র দাস বলেন, বেগুনি রঙের ধান চাষি শামছুর রহমান আবুলকে সব ধরনের পরামর্শসহ নিয়মিত ধানক্ষেতটি তদারকি করা হচ্ছে। ফলন ভালো হলে এর বিস্তার ঘটার সম্ভাবনা রয়েছে। অন্য কৃষকরাও বেগুনি রঙের এ ধান সম্পর্কে আগ্রহী হয়ে খোঁজখবর নিচ্ছে। নালিতাবাড়ী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ শরীফ ইকবাল বলেন, এলাকায় এই বেগুনি জাতের ধান নতুন, তাই কৃষকদের মধ্যে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে। চলতি বোরো মৌসুমে পরীক্ষাম‚লকভাবে চাষ করা হয়েছে। ফসল কাটার পর এর পুষ্টিগুণ যাচাই করে আগামীতে কৃষকদের মধ্যে এর বিস্তার ঘটানো হবে। শেরপুর কৃষি স¤প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক আশরাফ উদ্দিন জানান, বেগুনি রঙের এই ধান বিদেশি নয়। এটা আমাদের দেশি জাতের ধান। আগে অন্যান্য জেলায় চাষ হয়েছে, এবার শেরপুরে আবাদ হচ্ছে। নালিতাবাড়ী ও নকলা উপজেলায় দুই একর জমিতে বেগুনি ধান লাগানো হয়েছে। বেগুনি রঙের এ ধান গাছ মানুষকে মোহিত করেছে। ফলন ভাল হলে উৎপাদিত ধানগুলো বীজ আকারে রাখা হবে। এর চাল বেগুনি ও সুস্বাদু হবে বলে জানা গেছে। তবে এর ফলন সম্পর্কে জানতে ধান কাঁটা পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে।