অবশেষে আমন ধান ঘরে তুলতে শুরু করেছেন চলনবিলের কৃষকরা। আমন ধানের সোঁদা গন্ধে ভরে উঠছে আবহমান গ্রামীণ জনপদ। সোনালি মাঠ এখন হেমন্তের পাকা ধানে ভরপুর। মাঠে মাঠে শুরু হয়েছে ধান কাটার উৎসব। এ বছর আমন ধানের ফলন ভাল হওয়ায় কৃষকের চোখে মুখে হাসি ফুটেছে। কৃষকেরা এখন সূর্য উদয় থেকে অস্ত পর্যন্ত ধান কাটায় ব্যস্ত। কৃষাণীরা বাড়ির আঙ্গিনায় ধান উড়ানো বা পরিস্কার, শুকানো ও গোলায় উঠাতে ব্যস্ত। এরপর হবে কৃষকের আঙিনায় সোনারাঙা ধানের ছড়াছড়ি, গোলাভরা ধান এবং ধান থেকে চাল। তারপর নানা রকম পিঠা-পুলি বানানো আর খাওয়ার ধুম।
কারণ সরকারি পৃষ্ঠপোষকাতায় কৃষি প্রনোদনা আর কৃষি অফিসের পরামর্শ নিয়ে এ অঞ্চলের কৃষকেরা চাষাবাদ করায় বাম্পার ফলন দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে।
চলনবিলের তাড়াশ, উল্লাপাড়া, শাহজাদপুর, ভাঙ্গুরা, চাটমোহর, গুরুদাসপুর, সিংড়া, আত্রাই উপজেলার বিস্তীর্ণ এলাকায় সরসড়িয়া, দিঘা, সাদা দিঘা, কাজলদিঘা সহ বিভিন্ন জাতের ধানকাটা শুরু হয়েছে।
কৃষি অধিদপ্তরের প্রাপ্ত তথ্য মতে, চলনবিলের আট উপজেলার চলতি বছর প্রায় ১ লাখ ৮০ হাজার হেক্টর জমিতে আমন ধানের আবাদ করা হয়েছে। চলনবিলের বিভিন্ন মাঠে ধান কাটা ও মাড়াই কাজ চলছে।
স্থানীয় শাহ আলম, আব্দুল মজিদসহ একাধীক কৃষকরা জানায়, প্রকারভেদে বিভিন্ন মাঠে বিঘা প্রতি ৬-১০ মণ হারে ফলন হচ্ছে।
উপজেলার বিনসাড়া গ্রামের কৃষক আব্দুল আব্দুল গফুর জানান, আমন ধান কৃষকের জন্যে লাভের আবাদ। কেননা এ আবাদে শুধু মাত্র বীজ ছিটিয়ে আসলেই হল। রাসায়নিক সার ও কীটনাশকের খরচ কম থাকায় যে ফলন পাওয়া যায় তাতেই লাভ।
এদিকে চলন বিলের হাট বাজারে নতুন আমন ধান মণ প্রতি ৫০০-৬০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
তাড়াশ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ সাইফুল ইসলাম জানান, এ বছর আমন ধানের বাম্পার ফলন হচ্ছে। আশা করা যাচ্ছে চলতি মৌসুমে আমন ধানের উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে।